উজান থেকে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের দিকে নেমে আসা বন্যার পানি, পূর্ণিমা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের আংশিক পরিবর্তনের কারণে লক্ষ্মীপুরের মেঘনায় আকষ্মিকভাবে অস্বাভাবিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হয়েছে বলে ধারণা করছেন বাংলাদেশের জলবায়ু ও পানি বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত। তিনি এ আকষ্মিক জলোচ্ছ্বাসকে একটি উপকূলীয় বন্যা হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
বৃহস্পতিবার এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপে তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে বন্যা পরিস্থিতির খুবই অবনতি ঘটেছে। সুনামগঞ্জ, সিলেট, মাদারীপুর, বিক্রমপুর, মুন্সিগঞ্জসহ দেশের উত্তরাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে বন্যার পানির অবনতি হয়। বিশেষ করে চাঁদপুর ও লক্ষ্মীপুর, ওই সব এলাকা হয়ে সমুদ্রে যায়। ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি বিপদ সীমার উপরে, গঙ্গার পানি নামছে। পদ্মার পানি অনেক উঁচুতে এখন। শরীয়তপুর, মাওয়ার খুব খারাপ অবস্থা। এখনতো পূর্ণিমার কাছাকাছি সময়। পাশাপাশি সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতাও অনেকখানি বেড়েছে৷ এই যে সব মিলিয়ে লক্ষ্মীপুরে এমন অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি।
লক্ষ্মীপুরের এমন জলোচ্ছ্বাসকে বন্যা বলা যাবে কিনা, এমন প্রশ্নে দেশের এ বিজ্ঞ জলবায়ু ও পানি বিশেষজ্ঞ বলছিলেন, যেখানে পানি গিয়ে মানুষের ক্ষতি করে, সেটাকেই আমরা বন্যা বলতে পারি। যদি জলোচ্ছ্বাসের পানি উঠে মানুষের ক্ষতি করে, সেটাকেও বন্যা বলতে পারেন। যেহেতু এটা উপকূলীয় অঞ্চলে হয়েছে, সেটাকে আপনি উপকূলীয় বন্যা বলতে পারেন।
ড. আইনুন নিশাত আরো বলেন, মরা কাটাল এবং ভরা কাটাল বলে একটা বিষয় আছে। আমাবস্যা বা পূর্ণিমার সময় সমুদ্রের পানি ফুলে উঠে। এমন অস্বাভাবিক জলোচ্ছ্বাসের কারণ হিসেবে, সেটিও কিন্তু বড় একটা কারণ। ভরা কাটাল, মরা কাটালের প্রভাব, উজানের পানির প্রভাব, বর্ষার পানির প্রভাবও রয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৫আগস্ট আকষ্মিকভাবে লক্ষ্মীপুরের মেঘনায় ৭ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হয়। এতে মুহুর্তেই তলিয়ে যায় জেলার মেঘনাতীরের কমলনগর, রামগতি, সদর ও রায়পুরের ৬০কিলোমিটার এলাকা। এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে জনজীবন। নদীপাড়ের মানুষ পানিবন্দি হয়ে বিপাকে পড়েন।মাছের পুকুর ও প্রজেক্ট ডুবে জোয়ারের পানিতে ভেসে যায় মানুষের কোটি কোটি টাকার মাছ। বন্ধ হয়ে যায় চুলোয় আগুন।
0Share