জমি আছে ঘর নেই। এমন কিছু মানুষদের ঘর তৈরির প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার। প্রতিটি ঘরের জন্য সীমিত বাজেটের এ প্রকল্প বাস্তবায়নকে ‘যুদ্ধ’ হিসেবে নিয়েছেন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাজাহান আলি। সেজন্য তিনি সীমিত বাজেটে উন্নতমানের ঘর তৈরী করে এ প্রকল্পে দেশের সেরা ঘর নির্মাতা হতে চান। এসব ঘর তৈরীতে গুণগত মান ধরে রাখতে অটল তিনি।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, জমি আছে ঘর নেই। এমন প্রকল্পের আওতায় লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চররূহিতা, উত্তর হামছাদী, দক্ষিণ হামছাদী, টুমচর, শাকচর, উত্তর জয়পুর ও হাজিরপাড়া এ ৭টি ইউনিয়নে ৫৭৩টি পরিবারের জন্য ঘর তৈরির কাজ চলছে। প্রতিটি ইউনিয়নে একযোগে তৈরী হচ্ছে নতুন ঘর। ঘর তৈরীর কাজে নিয়োজিত রয়েছে শতাধিক শ্রমিক।
ইতোমধ্যে কয়েকজন সুবিধাভোগীকে তাদের জন্য নির্মিত ঘর বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। রাজমিস্ত্রীরা তৈরী করছে ঘরের খুঁটি, টয়লেটের রিং-স্লাব। কাঠ মিস্ত্রীরা ঘরে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করেছে কাঠ। ৫৭৩টি ঘর তৈরী করা মানে একটি বিশাল কর্মযজ্ঞ। ইতোমধ্যে মিল থেকে আনা হয়েছে কোটি টাকার উন্নতমানের ঢেউটিন।
গত ২২ সেপ্টেম্বর উত্তর হামছাদী ইউনিয়নের হামছাদী গ্রামের অলি উল্যার পুত্র রাজনের জন্য নির্মিত ঘরটি তাকে বুঝিয়ে দিয়ে এ মহাকর্মযজ্ঞের সমাপনীর সিঁড়ি বেয়ে নামতে শুরু করেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ শাজাহান আলি। এর পর থেকে প্রায় শতাধিক সুবিধাভোগীর মাঝে তাদের স্বপ্নের ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে।
ঘর পেয়ে মহাখুশী তারা, তাদের পরিবারে বইছে উৎসবের আমেজ। প্রতিদিনই কোন না কোন এলাকায় নতুন নতুন ঘর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হচ্ছে। আর সুবিধাভোগীরা ঘর বুঝে নিয়ে বসবাস শুরু করছে। আরও আগেই এসব ঘরের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবার কথা থাকলেও অতিবৃষ্টির কারণে নির্মাণ কাজের গতি বার বার থেমে যায়। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন পরিদর্শন করে দেখা যায়, স্বল্প বাজেটের মধ্যে টেকসই ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে।
ঘর তৈরীতে সিমেন্টের পিলার তৈরীর জন্য ১নং ইটের কঙ্কর, মানসম্মত কোম্পানীর সিমেন্ট ও ৬০ গ্রেড রড ব্যবহার করা হয়েছে। সিমেন্টের পিলার তৈরীর জন্য রড় দিয়ে খাঁচা তৈরীর পর ইউএনওর সামনে ঢালাই দেয়া হয়েছে। যার কারণে কোনভাবেই পরিমাণ কম বা নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহারের সুযোগ হয়নি। এদিকে ঘরের চালার জন্য আবুল খায়ের কোম্পানীর তৈরী গরু মার্কা ৩৬ এম এম ঢেউ টিন মিল থেকে কিনে এনে স্থানীয়ভাবে গুদামজাত করা হয়েছে।
গুদাম থেকে প্রয়োজন মত টিন নিয়ে ঘর তৈরীর কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। ঘর নির্মাণের এ কাজ ইউএনও শাজাহান আলি নিজেই তদারকি করছেন। প্রতিদিনই উপজেলা প্রশাসনের ফেসবুকে ফেইজে ঘর নির্মাণ নিয়ে ইউএনও শাজাহান আলির দৃশ্যমান কর্মতৎপরতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ শাজাহান আলি ঘোষিত “ঘর নির্মাণ যুদ্ধ” বর্তমান তৎপরতায় অব্যাহত থাকলে স্বল্প সময়ের মধ্যে ৫৭৩ জন সুবিধাভোগীকে তাদের কাঙ্খিত ঘর বুঝিয়ে দেয়া সম্ভব হবে বলে স্থানীয় পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন।
এদিকে সর্বোচ্চ মান বজায় রেখে স্বচ্ছতার সাথে গৃহহীনদের জন্য ঘর নির্মাণ করায় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী আলহাজ্ব এ কে এম শাহজাহান কামাল এমপি এবং লক্ষ্মীপুর -২ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ নোমান এমপি ইউএনও শাজাহান আলির প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেন।
0Share