রায়পুর প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরের রায়পুর একটি প্রথম শ্রেণির পৌরসভা। ১৯৯৪ সালের ২০ জানুয়ারী ৬টি মৌজায় ৫টি গ্রাম নিয়ে ৯.০৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯৮ সালে প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হিসেবে স্বীকৃতি পায়। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী গ্যাস লাইন স্থাপন ও সরবরাহ, বিনোদনের ব্যবস্থা (শিশু পার্ক নির্মান), ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য নির্দিষ্ট জায়গা নির্ধারণ, পরিচ্ছন্ন শহর গড়ে তোলা এবং সড়ক ও রাস্তা-ঘাটের উন্নয়নসহ নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মেয়র হাজী ইসমাইল হোসেন খোকন। গত দেড় বছরে পৌরসভার ১৩টি সড়ক সংস্কার, লাইটিং ব্যবস্থা, সু-পিয় পানির ব্যবস্থা ও প্রস্তাবিত শিশুপার্ক ছাড়া অন্য কোনো উন্নয়ন হয়নি।
পৌরসভা নির্বাচনের আগে শহরে ড্রেনেজ ব্যবস্থাকরন, পয়নিস্কাশন ও বর্জ ব্যবস্থাপনা ও বাজার এলাকা রিক্সা, সিএনজি, ট্রাক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও হকাদের দখল মুক্ত করন, ফুটপাত, যাত্রিচাউনী, বাসস্ট্যান্ড ও পরিবহণ পার্কিং ব্যবস্থা করন। নাগরিক স্বাস্থ্য,খেলাধুলা, চিত্তবিনোদন, সাংস্কৃতিক সুযোগ, পাঠাগার ও গোরস্থান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু জয় লাভের পর প্রতিশ্রুতির কয়েটি ছাড়া অন্য উন্নয়ন বাস্তবায়ন করতে পারেন নি। ২০০২ সালে ডিপিএই-ই ডানিডা কর্তৃক পাইপ লাইন স্থাপন ও ৭০ লক্ষ হাজার লিটার পানি প্ল্যান্ট নির্মাণের মাধ্যমে ২৫ হাজার গ্রাহকের মাঝে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।
গত বছরে জানুয়ারি মাসে পৌরসভার উন্নয়ন নেই ও তিনগুণ হারে কর আদায় হচ্ছে বলে মেয়রের বিরুদ্ধে উচ্চআদালতে মামলা করেন রায়পুর নাগরিক পরিষদ কমিটি নামে একটি সামাজিক সংগঠন। যা মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এই কারণে পৌরসভার সকল কর আদায় বন্ধ রয়েছে।
একান্ত সাক্ষাৎকারে মেয়র ইসমাইল খোকন বলেন,
নির্বাচনের আগে পৌরবাসীকে বেশকিছু আশ্বাস ও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। গ্যাস লাইন স্থাপনের চেষ্টা করছি ও বর্তমানে ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে প্রস্তাবিত শিশুপার্ক করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এসব পকল্প বাস্তবায়ন করতে অবশ্য বড় বরাদ্দের প্রয়োজন। সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে উন্নয়নের বাজেটের ফাইল জমা রয়েছে। বরাদ্দ পেলে জনগণের এ দুর্ভোগ লাঘব হবে। চিনতাই ও মাদক নির্মুল সহ আইনশৃংখলা মোটামটি ভালো।
আগামী নির্বাচনে অংশ নেবেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়র ইসমাইল খোকন বলেন, জনগণের আশা আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটাতে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বিশ্বাস করি পৌরবাসী কাজ দেখে সিন্ধান্ত নেবেন। উন্নয়নমূলক কাজের তথ্যেও জন্য পৌরসভার সচিব আব্দুল কাদেরের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি তা দিতে অপরাগতা জানান।
রায়পুর পৌরসভা প্রায় ৪৫ হাজার জনসংখ্যা ও ১২ হাজার পরিবারের বসবাস। ১৯৯৪ সাল থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত প্রথম পৌর পিতার দায়িত্ব পালন করেন সাবেক ইউএনও গোলাম রাব্বানী এবং পিউচ কস্তা। ১৯৯৯ সালে পৌরসভার চেয়ারম্যান হন জেলা আ’লীগ নেতা রফিকুল হায়দার বাবুল পাঠান দায়িত্ব পালন করেন। জেলা বিএনপি নেতা ও সাবেক এমপির আবুল খায়ের ভূইয়ার আর্শিবাদে ২০০৪ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত এক নাগারে ১২ বছর দায়িত্ব পালন করেন পৌর বিএনপির সভাপতি এবিএম জিলানি। ২০১৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে আসছেন উপজেলার আ’লীগের সাধারন সম্পাদক হাজী ইসমাইল হোসেন খোকন ।
রায়পুর পৌর মেয়রের জন্ম পৌরসভার দেনায়েতপুর গ্রামে। রায়পুর এলএম পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে দশম শ্রেণী পযন্ত লেখাপড়া সমাপ্ত করে পিতার সাথে সিনেমা হল ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। পরে ১৯৯৬ সাল থেকে উপজেলা আ’লীগের সাংগঠনিক ও পরে সহ-সভাপতি পদে দায়িত্ব পালনের পর বর্তমানে ১৬ বছর ধরে উপজেলা আ’লীগের সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
0Share