চুরির অপবাদ দিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে লক্ষ্মীপুরে এক কৃষককে গাছের সাথে বেধে বর্বর নির্যাতন চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পরে শালিস বেঠক বসিয়ে মামলা না করার প্রতিশ্রুতি নিয়ে পুরো পরিবারের কাছ থেকে জোর করে কয়েকটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়ার অভিযোগও রয়েছে চররমনী মোহন ইউপি চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ ছৈয়াল ও সদস্য স্বপনের বিরুদ্ধে।
বর্তমানে চেয়ারম্যান ও তার দোসরদের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে কৃষকের পরিবার। সোমবার দুপুরে ওই কৃষককে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও কৃষকের পরিবার সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার চররমনী ইউনিয়নের চরআলী হাসান এলাকার হতদরিদ্র ৩ সন্তানের জনক কৃষক আমির হোসেন। ২৩ আগষ্ট সোমবার রাতে ঘরের ফেরার পথে কৃষক আমির হোসেনকে চুরির অপবাধ দিয়ে প্রতিবেশী সোহাগ, জুলহাস, আরিফ হোসেন ও দেলু নামে কয়েকজন ব্যক্তি আটক করে গাছের সাথে বেঁধে বর্বর নির্যাতন চালায়।
এক পর্যায়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ ছৈয়াল ও ইউপি সদস্য স্বপনকে খবর দেয়া হলেও তাদের উপস্থিতিতেও দ্বিতীয় দফায় বেধম মারধর করা হলে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন ওই কৃষক।
ঘটনার খবর শুনে পরিবারের লোকজন এগিয়ে এলে আমির হোসেনকে ইউপি সদস্য স্বপনের বাড়িতে নিয়ে একটি সালিশ বৈঠকের আয়োজন করে চেয়ারম্যান।
নির্যাতনের শিকার আমির হোসেন জানান, ইউপি চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ ছৈয়াল দীর্ঘদিন ধরে তার কাছ থেকে কিছু জমি বাগিয়ে নেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে আসছে। ওই জমি দিতে রাজি না হওয়ায় পরিকল্পিতভাবে চুরির অপবাধ দিয়ে গাছের সাথে বেধে বর্বর নির্যাতন চালায় তার অনুসারিগণ। মামলা না করতে ও প্রকাশ্যে চিকিৎসা না নেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়ার পর স্ত্রী, তিন সন্তানের কাছ থেকে কয়েকটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয় চেয়ারম্যান। চেয়ারম্যান ও তার অনুসারিদের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তারা। বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছেন পুরো পরিবার।
এ দিকে কৃষকের স্ত্রী ও সন্তান জানান, দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ ছৈয়াল তাদের কাছে ২০শতক জমি তার কাছে বিক্রি করতে চাপ প্রয়োগ করে আসছে। উক্ত জমি না দেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে চেয়ারম্যানের নির্দেশে চুরির অপবাদের নাটক সাজিয়ে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন চালানো হয়েছে। লাজলজ্জার ভয়ে সন্তানরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলেও জানান তারা। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেন পরিবারের লোকজন।
556Share