তাবারক হোসেন আজাদ: শহরের গাজীনগর সড়কে মাছবাজার সংলগ্ন প্রধান ডাকঘরটির ঝুকিপূর্ণ ভবনে-স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে চলছে কার্যক্রম। অধিকাংশ ডাকঘরে নেই কোনো ডাকবাক্স। এছাড়াও গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ ডাকঘর দিনের পর দিন বন্ধ থাকছে। দু’একটি থাকলেও তার মধ্যে চিঠির পরিবর্তে থাকছে বিড়ি, সিগারেটসহ ময়লা-আবর্জনা।
অথচ মোবাইল ফোন থেকে শুরু করে ই-মেইল, ইন্টারনেট, ফেসবুক, ইমো, ভাইবারসহ কত প্রযুক্তির সুবিধা আজ সবার জন্য অবারিত। শহরের চেয়ে খুব একটি পিছিয়ে নেই গ্রাম। গ্রামের মানুষের কাছে এখন এসব সুবিধা পৌঁছে গেছে। প্রিয়জনের চিঠির আশায় ডাক পিওনের পথ চেয়ে থাকার দিন আর নেই। আর তাই বিভিন্ন স্থানের মতো লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার ডাকঘরগুলোর অবস্থাও বেহাল হয়ে পড়েছে।
উপজেলা শহরের প্রধান ডাকঘর ছাড়া দশটি ইউনিয়নের সবক’টিতেই এ নাজুক অবস্থা। এক সময় ডাকঘরগুলো সবসময় মুখর থাকতো রানার কিংবা ডাকপিয়নের পদচারণায়। মানুষ ডাকঘরের সামনে অপেক্ষা করতো ঘন্টার পর ঘন্টা। কারণ কখন যেন আসবে কাঙ্খিত চিঠি। কিন্তু ডাক বিভাগের সেই ঐতিহ্য এখন ফিকে হতে বসেছে।
উপজেলার প্রধান ডাকঘর রয়েছে ১টি, পোষ্ট অফিস ২ টি, সাব পোষ্ট অফিস ২ টি ও ব্রা অফিস ১৪ টি । শহরের প্রধান সড়কে সরকার পরিচালিত একটি ই-সেন্টার রয়েছে। সেখানে মোঃ সোহেল নামে একজন দক্ষ প্রশিক্ষক দ্বারা বেকার যুবক ও শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
অধিকাংশ ডাকঘরের পাকা বিল্ডিং, সোলার প্যানেল স্থাপন ও আসবাবপত্র নতুন করে তৈরি করা হলেও এসব ডাকঘরের দাপ্তরিক কোনো কাজকর্ম নেই বললেই চলে। তালাবিহীন ডাকবাক্সগুলো এখন ডাস্টবিনে পরিণত হয়েছে। প্রতিটি ডাকঘরে একজন ডাক বিলিকারী ও একজন পোষ্ট মাস্টার রয়েছে। তবে ডাকঘরগুলোতে রানার বা ডাক বিলিকারীর কোনো খোঁজই মেলে না কখনও।
অন্যদিকে সপ্তাহান্তরেও দেখা মেলে না পোস্টমাস্টারের। এ করুণ অবস্থার কারণে ডাক বিভাগের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস হারিয়ে ফেলছেন মানুষ। এ অবস্থায় ডাক বিভাগের পুরনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে আধুনিকীকরনের দাবি জানানো হয়েছে।
উপজেলার ডাকঘরের প্রধান পোস্টমাস্টার মোঃ জয়নাল আবেদিন জানান,
গত ৩০ বছর ধরে ডাকঘরটির করুন অবস্থা। ঝুকিপূর্ণ ভবনে-স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে চলছে কার্যক্রম। চট্রগ্রাম বিভাগীয় ডাকপ্রধানের কাছে নানা সমস্যা নিয়ে একাধিকবার জানালেও কোন প্রতিকার পাইনি। তাছাড়া সাব ও ব্রা অফিসের কয়েকজন পোস্ট মাস্টার জানান, আমাদের কোনো বেতন নেই, শুধু সম্মানী ভাতা দেয় ১২শ’টাকা। যাতে করে আমাদের সংসার চলে না, ফলে বাধ্য হয়ে অন্য কাজ করতে হয়।
0Share