লক্ষ্মীপুর : দীর্ঘ ৫ বছরেও লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট চালু হয়নি। এতে জেলার বিদেশগামীদের পাসপোর্ট তৈরিতে নোয়াখালী জেলায় গিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ।
লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালে দেশে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট চালু হওয়ার পর লক্ষ্মীপুর পাসপোর্ট অফিসে নতুন পাসপোর্টের আবেদন গ্রহণ বন্ধ করে দেয়া হয়। তখন থেকে এ অফিসে শুধুমাত্র পুরাতন পাসপোর্ট নবায়ণ ও সংশোধনের কাজ চলে আসছে।
অপরদিকে লক্ষ্মীপুরবাসী প্রথমে কুমিলা ও পরবর্তীতে নোয়াখালী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের আবেদন করে পাসপোর্ট গ্রহণ করে আসছে।
লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের আবেদন গ্রহণ করার অনুমতি ও প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জানানোর পরেও দীর্ঘদিন ধরে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা লক্ষ্মীপুর জেলা মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট চালু না হওয়ার ফলে লক্ষ্মীপুরের সাধারণ মানুষ নোয়াখালী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্টের আবেদন করতে হচ্ছে। এতে দূরত্ব ও দালালের দৌরাত্বের কারণে অধিকাংশ সময় পাসপোর্টের আবেদনকারীরা অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়সহ নানা হয়রানি ও প্রতারণার শিকার হয়ে আসছে।
জেলার রায়পুর, কমলনগর, রামগতি ও রামগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে এই অফিসটির দূরত্ব প্রায় ১০০ কিলোমিটার। ফলে অনেকেই আগের দিন নোয়াখালীতে গিয়ে হোটেলে অবস্থান করে আবেদন জমা দিতে হচ্ছে। এতে হয়রানি ও আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হতে হচ্ছে পাসপোর্ট আবেদনকারীদের।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার গন্ধর্ব্যপুর গ্রামের মো. হোসেন আহমদ ও কমলনগর উপজেলার কাদিরপণ্ডিন্তের হাটের আবু ছায়েদসহ কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান, তারা দুই দিন নোয়াখালীর একটি হোটেলে অবস্থান করে আবেদন জমা দিলেও এক মাসের পাসপোর্ট পেতে প্রায় দুই মাস সময় লেগে গেছে তাদের। এতে তিন হাজার টাকার স্থলে ছয় হাজার টাকা খরচ হয়েছে।
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্র জানায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে লক্ষ্মীপুরে স্বতন্ত্র ও মেশিন রিডেবল আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস চালুর প্রাথমিক অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে শহরের অদূরে বাস টার্মিনাল সংলগ্ন ইসলাম প্লাজায় গত বছরের ১ মে থেকে মাসিক ৩৫ হাজার টাকায় একটি ভবন ভাড়া নেয়া হয়।
এ অফিসটি চালুর জন্য সাত জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয়। কিন্তু গত আট মাসেও প্রয়োজনীয় মেশিনপত্র সরবরাহ না করায় আজ পর্যন্ত লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করা সম্ভব হয়নি।
লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক মো. জামাল হোসেন জানান, অফিসটি চালু করার জন্য কিছু আনুসঙ্গিক মালামাল পাওয়া গেছে। আরো কিছু মালামাল ও যন্ত্রপাতির সরবরাহ পাওয়া যাবে। সব কিছু পাওয়া গেলে অফিসটি চালু করা সম্ভব হবে। প্রবাসী অধ্যুষিত এই জেলায় মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট অফিস চালু হলে জেলাবাসীর দুর্ভোগ লাগব হবে।
0Share