অবশেষে প্রথমবারের মত লক্ষ্মীপুরের সবচেয়ে আলোচিত চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হতে যাচ্ছে।
২০ অক্টোবর চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সম্মেলনে নতুন কমিটি গঠন করা হলে ভাঙবে টানা তিনবারের আহ্বায়ক কমিটি গঠনের রেকর্ড। তাই এই সম্মেলনকে ঘিরে সরব হয়ে উঠেছেন পদপ্রত্যাশী নেতারা। এখন পর্যন্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রায় এক ডজন প্রার্থীর দৌঁড়াদোড়ি দেখা যাচ্ছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সভাপতি পদপ্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির আহ্বায়ক কাজী মামুনুর রশিদ বাবলু, যুগ্ম আহ্বায়ক আবু তালেব, যুগ্ম আহ্বায়ক রায়হান হোসাইন তুষার, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মনির হোসেন ফরহাদ এবং দত্তপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি কাজী নিজাম। সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন, চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক রিয়াজ হোসেন জয়, যুগ্ম আহ্বায়ক মাকছুদুল হাসান রোমান, হাজিরপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান সৌরভ।
এ ছাড়াও পদপ্রত্যাশী অনেকেই নিজেদের প্রার্থীতা এখনও প্রকাশ করেন নি বলে মনে করছেন ছাত্রলীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। এদিকে জেলা ছাত্রলীগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পদপ্রত্যাশীদের ৫০ মার্কসের লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। যেখানে বাংলাদেশের ইতিহাস, ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা যুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও আদর্শ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, ছাত্রলীগের ইতিহাস ও আদর্শ এবং সমসাময়িক রাজনীতি সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।
এ ছাড়াও ছাত্রলীগের নেতৃত্বে মাদকসেবীদের অবস্থান ঠেকাতে পদপ্রত্যাশী প্রত্যেককেই ডোপ টেস্টের সম্মুখীন হতে হবে। গত ১৪ অক্টোবর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. শাহাদাত হোসেন শরীফ ও সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল করিম নিশান স্বাক্ষরিত দুটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব বিষয় উল্লেখ করা হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তৃণমূলের কয়েক নেতাকর্মী জানান, চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী একাধিক নেতার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজী, মাদক ও কিশোর গ্যাং গঠনের অভিযোগ রয়েছে।
তবে সভাপতি পদপ্রার্থী এক নেতার বিরুদ্ধে স্কুল-কলেজে পড়ুয়া ছাত্রলীগের কর্মীদের যৌন নিপীড়নের মত গুরুতর অভিযোগ এখন সবচেয়ে আলোচিত বিষয়। এ নিয়ে অভিভাবকরাও দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। এ নিয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের একাধিক নেতাকর্মী ও তাদের অভিভাবকদের প্রশ্ন, ‘পদপ্রার্থীদের মধ্যে যারা সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত, তাদের কিভাবে সনাক্ত করা হবে? বিশেষ করে যারা স্কুল কলেজে পড়ুয়া ছাত্রলীগের কর্মীদের যৌন নিপীড়নের মত নিকৃষ্ট কাজের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কিভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে?
লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. শাহাদাত হোসেন শরীফ বলেন, ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করে। বর্তমানে যোগ্য নেতৃত্ব সৃষ্টির মাধ্যমে ছাত্রলীগকে সু-সংগঠিত করা হচ্ছে। দেশের ইতিহাস জানে এ ধরনের ছাত্রদের দ্বারা নেতৃত্ব নিশ্চিতের জন্য লিখিত পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। আর কোনো মাদকসেবী যেন কোনভাবেই নেতৃত্বে আসতে না পারে সে জন্য ডোপ টেস্ট নেয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদেরও ছাড় দেওয়া হবে না।
এ ছাড়া স্কুল-কলেজে পড়ুয়া ছাত্রলীগের কর্মীদের যৌন নিপীড়নের অভিযোগের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগীরা লিখিত অভিযোগ করলে জেলা ছাত্রলীগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলেও জানান তিনি।
0Share