জাতিসংঘের জলবায়ু বিষয়ক জরুরি সম্মেলনকে সামনে রেখে জলবায়ু পরিবর্তন মোকােেবলায় দায়ী দেশসমূহের প্রতিশ্রুতি রক্ষার দাবীতে তরুণদের অংশগ্রহণে ‘বৈশি^ক জলবায়ু ধর্মঘট এর অংশ হিসেবে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), লক্ষ্মীপুর ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর উদ্যোগে শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯) লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
‘জলবায়ু অর্থায়নে সুশান’ বিষয়ক উপকমিটির আহ্বায় কার্ত্তিক রঞ্জন সেনগুপ্তের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, সনাক, লক্ষ্মীপুরের সভাপতি প্রফেসর মাহবুব মোহাম্মদ আলী, সহসভাপতি প্রফেসর জেডএম ফারুকী ও পারভীন হালিম। এছাড়া বক্তব্য রাখেন সনাক সদস্য ডাঃ সালাউদ্দিন শরীফ, সাইফুল ইসলাম ভূঞা তপন, গাজী গিয়াস উদ্দিন, মাসুদুর রহমান খান ভুট্টু ও সুলতানা মাসুমা বানু। সনাক, টিআইবির সাথে মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন সবুজ বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন বাবু, নন্দন ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রাজু আহমেদ, কোস্ট এর নির্বাহী পরিচালক নুর মোহাম্মদ ও ভাষা প্রদীপের প্রধান সমন্বয়ক ফাহাদ বিন বেলায়েত। এছাড়াও মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন- সনাক সদস্য বনশ্রী পাল চৌধুরী ও রনজিত কুমার পাল, জেমস এর নির্বাহী পরিচালক আসাদুজ্জামান, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি- লক্ষ্মীপুর ইউনিটের প্রতিনিধি, সাংবাদিকবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠণের প্রতিনিধিবৃন্দ, ইয়েস ও ইয়েস ফ্রেন্ডস সদস্যবৃন্দ এবং টিআইবি লক্ষ্মীপুরের কর্মীবৃন্দ,
মানববন্ধনে নির্ধিারিত বিষয় সম্পর্কে ধারণাপত্র পাঠ করা হয়। ধারণাপত্রের আলোকে বক্তাগণ বলেন, সুইডিস কিশোরী পরিবেশবাদী অ্যাকটিভিস্ট গ্রেতা থর্নবার্গ ২০ আগস্ট ২০১৮ থেকে ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সুইডিস পার্লাামেন্টের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে বিশ^ব্যাপী সাড়া ফেলে। সেই প্রতিবাদকে কিশোর কিশোরীদের মাঝে আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দিতে এ বছর জাতিসংঘের জলবায়ু বিষয়ক জরুরি সম্মেলনকে সামনে রেখে ২০ ও ২৭ সেপ্টেম্বর পৃথিবীর ১২০ টি দেশে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিশ^ব্যাপী ধর্মঘট, গণ প্রতিবাদ ও র্যালির আয়োজন করছে, যা বৈশি^ক জলবায়ু ধর্মঘট বা ‘গ্লোবাল ক্লাইমেট স্ট্রাইক’ নামে পরিচিতি লাভ করেছে। এ প্রেক্ষাপটে শিল্পোন্নত দেশের পরিবেশ রক্ষার আহ্বানসহ বৈশি^ক জলবায়ু ধর্মঘট বা ‘গ্লোবাল ক্লাইমেট স্ট্রাইক’ এর সাথে সংহতি প্রকাশ করে টিআইবি ও সনাক এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।
বক্তাগণ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সার্বিকভাবে বিশে^র বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও নীতি-নির্ধারকগণ এখন পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছেন। ফলে ২০১৫ সালে প্যারিস চুক্তি স্বাক্ষর হলেও জীবাশ্ম জ¦ালানির ব্যবহার বন্ধ এবং কার্বন নিঃসরণ কমানোসহ চুক্তির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি। তাই প্যারিস চুক্তির আওতায় জলবায়ু অর্থায়নে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের জন্য আইনী বাধ্যতামূলক একটি ‘স্বচ্ছতা কাঠামো’ অবলম্বন করে সংশ্লিষ্ট অংশীজনের শুদ্ধাচার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং দূষণকারী দেশ কর্তৃক ক্ষতিপূরণ প্রদান নীতি বিবেচনা করে ঋণের পরিবর্তে শুধু অনুদান, যা উন্নয়ন সহায়তার ‘অতিরিক্ত’ এবং ‘নতুন’ প্রতিশ্রুতি হবে- এমন স্বীকৃতি দিয়ে জলবায়ু অর্থায়নের সংজ্ঞায়ন করাসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
0Share