সব কিছু
facebook lakshmipur24.com
লক্ষ্মীপুর শুক্রবার , ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
রমজান ও ঈদ কেন্দ্রিক অসুস্থ প্রতিযোগিতার যৌতুক অবসান হোক

রমজান ও ঈদ কেন্দ্রিক অসুস্থ প্রতিযোগিতার যৌতুক অবসান হোক

রমজান ও ঈদ কেন্দ্রিক অসুস্থ প্রতিযোগিতার যৌতুক অবসান হোক

মোঃ মিরাজুর রহমান পাটোয়ারি: অন্য কোন জেলায় স্থানীয় সংস্কৃতির নামে এমন অসুস্থ প্রতিযোগিতা আছে কিনা জানি না। তবে আমার নিজ জেলা লক্ষ্মীপুরে খুব ছোট বেলা থেকেই রমজান ও ঈদ কেন্দ্রীক এক অসুস্থ প্রতিযোগিতা দেখে আসছি। সে প্রতিযোগিতাটি হচ্ছে রমজান ও ঈদ কেন্দ্রিক মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে টনে টনে ইফতার, ঈদের সেমাই-চিনির প্যাকেজ কিংবা গরু-খাসি পাঠানোর এক অসুস্থ প্রতিযোগিতা।

দীর্ঘ বহুকাল থেকে নিরবেই চলে আসছে এ প্রতিযোগিতা। তবে এ রীতিতে ইদানিংকালে নতুন মাত্রা পেয়েছে। নতুন মাত্রাটি চালু করেছেন, প্রবাসীদের পরিবার গুলো। যেখানে মেয়েদের মায়েরাই পরিবারের কর্তা।

কিন্ত স্থানীয় অনেকেরই অভিযোগ ভয়ংকর এই প্রথা চালু করেছে নিম্নবিত্তের পরিবার গুলো। , যারা জীবনের অর্থ কষ্ট খানিকটা জয় করেছে প্রবাসী হওয়ার মাধ্যমে। একটুখানি অর্থনৈতিক মুক্তি মিলতেই তারা নেমে পড়েছে নিজেদেরকে জাহির করতে, যার ভয়ংকর প্রভাব এখন সমাজের অন্যদেরও বিপদে ফেলছে।

আর তাতে সামাজিকভাবে হেয় হচ্ছে অনেকেই। নিরব কান্নাগুলো কেউ দেখতে পায় না মধ্যবিত্তের সংগ্রামী মানুষদের। বলতে গেলে যৌতুককে ভিন্নরুপে সমাজে জায়গা করে দিয়েছে এক শ্রেণীর মানুষ। এতে কেবলমাত্র বাজারের দোকানীদের ব্যবসায়িক লাভ ছাড়া সমাজের সামান্যতমও উপকার হচ্ছে না।

আত্মীয়-পরিজন একে অন্যের সুখে-অসুখে পাশে থাকবে এটাই চিরায়ত প্রথা। সামর্থ্য অনুযায়ী একজন আরেকজনের চরম বিপদে পাশে দাঁড়াবে, এটাই কাম্য। কিন্তু বিতর্কিত এই প্রথা প্রকারান্তরে পারিবারিক-সামাজিক শান্তি বিনষ্ট করছে।

কারণ একই বাড়িতে পাশের ঘরের পুত্রবধূর বাবার হয়তো সামর্থ্য থাকায় বিভিন্ন উৎসবে-উপলক্ষ্যে উপঢৌকন পাঠাচ্ছে, কিন্তু অন্য ঘরের পুত্রবধূর বাবার হয়ত সেই সামর্থ্য নেই, তবুও পাঠাচ্ছেন, কিন্তু পরিমাণে অল্প। এতে কতটা বিব্রতকর পরিস্থিতি, কোন কোন ক্ষেত্রে মানসিক নির্যাতন কিংবা এরচেয়েও বড় কোন নির্যাতনের পরোক্ষ সূত্রপাত ঘটায়।

আপনার মেয়ের মুখ উজ্জ্বল করতে গিয়ে অন্যের মেয়েটার জীবনে এই চরম অপ্রত্যাশিত বিড়ম্বনার কারণ হওয়া কোনভাবেই একজন সুস্থ চিন্তাশক্তি সম্পন্ন মানুষের কাজ হতে পারে না! এই প্রথার ভয়াবহ চিত্র একটু উদাহরণ দিয়ে বুঝানো যায়।  রমজান আসেই গেলা।

গত এক সপ্তাহ থেকে লক্ষ্মীপুরের  রায়পুর বাজারের মুদি দোকানগুলোতে বেশীরভাগ ক্রেতা মেয়েদের মায়েরা। রমজানে ছোলা একটি অত্যাবশ্যকীয় ইফতারের উপাদান; সেই সাথে চিনি, ট্যাং, মুড়ি-চিড়া, গুড়সহ অন্যান্য মসলাপাতি, মৌসুমি কিংবা বিদেশী ফলমূল ইত্যাদি।

আপনারা হয়ত ভাবছেন পরিমাণে কতটুকুই বা দেয়?? একটু তালাশ করলেই জানতে পারবেন, তবে দুর্বল চিত্তের লোকেরা সাবধান। পরিমাণ শুনে হৃদয়ে কস্ট পাবেন না যেন। ঈদের সেমাই এত পরিমাণে দেয় যে, চৌদ্দগোষ্ঠী সারা বছর খেয়েও শেষ করতে পারে বলে বিশ্বাস হয়না। ধরুন ছোলার কথাই বলি; একটা পরিবারে সারা রমজানে বড় জোর ৩/৪ কেজি ছোলা হলেই যথেষ্ট।

সেখানে যদি কমপক্ষে ২০ কেজি ছোকা পাঠায়, কি করবেন সেগুলো দিয়ে?? বাড়িতে গোয়াল ঘরও নেই যে, গরুকে দানাদার খাবার হিসেবে খাওয়াবেন! মাত্র একটা আইটেমের উদাহরণ দিলাম, বাড়িয়ে বলছিনা একটুও!! প্রত্যেকেই যার যার সামাজিক অবস্থান অনুযায়ী আত্মীয়তা করেন। এর মানে এই নয় যে, মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকজন নিতান্তই গরিব, ঘরে চুলো জ্বলেনা! নইলে বেয়াই বাড়িতে এত এত আইটেম আর পরিমাণ রীতিমতো অবিশ্বাস্য।

এতো খাবার-দাবার নিয়ে বললাম মাত্র। ঈদের শাড়ি-কাপড়, গরু-খাসি ছাড়াও সারাবছরের সিজনাল উপলক্ষ্য তো আছেই! যারা এই অসুস্থ প্রতিযোগিতার ধারক-বাহক, তাদের প্রতি একটাই অনুরোধ, আজ আপনার সামর্থ্য আছে বলেই কেবলমাত্র মেয়ের মুখ উজ্জ্বল করতে এই হীন কাজটি করছেন।

আপনি/আপনারা একাধারে আরেকটি মেয়ে ও তার বাবা-মা’কে যেমনি ক্ষতিগ্রস্ত করছেন, একইসাথে আপনাদের বাকি সন্তানদের ভবিষ্যৎও অনিশ্চিত করে তুলছেন! মণে মণে আইটেম পাঠিয়ে সুখ কেনা যায় না, বরং মানবিক আচরণের পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়াই সত্যিকারের সুখ আনে। এগুলোর পেছনে কস্টার্জিত অর্থ অপচয় না করে সন্তানকে সঠিক, পরিপূর্ণ শিক্ষায় সত্যিকারের মানুষ হওয়ার শিক্ষা দিন।

পরোক্ষ যৌতুক বন্ধ হোক। সব ধরনের সামাজিক অনাচার বন্ধ হোক। মানবিকবোধে সমৃদ্ধ হোক প্রতিটি পরিবার। সব ধরনের পারিবারিক-সামাজিক-মানসিক নির্যাতন বন্ধ হোক। সুশিক্ষা আর পরিপূর্ণ শিক্ষায় স্বার্থক মানুষ হয়ে উঠার চেষ্টা হোক সর্বাত্মক।

লেখক: বাংলাদেশ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

মতামত | সাক্ষাৎকার আরও সংবাদ

কৃত্রিম ভুলুয়া এখন রামগতি ও সুবর্ণচরের দানব

শতবর্ষী টুমচর ইসলামিয়া কামিল মাদরাসা

রিপোজটরি সাইট গিটহাবে বাংলাদেশী ডেভেলোপার আরমান হাকিম সাগরের কান্ট্রিবিউশন

নিবন্ধনের জন্য প্রথমদিকে আবেদিত নিউজ পোর্টালগুলোর নিবন্ধন পেতে আর কত বছর?

স্বামীকে গলাকেটে হত্যা | ঘটনার এপিঠ-ওপিঠ

ওয়েব ডেভেলপার হিসেবে বাংলাদেশেও জেন্ড সার্টিফাইড ইঞ্জিনিয়ারদের চাহিদা বাড়ছে

লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোর বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ে অনলাইন নিউজপোর্টাল প্রকাশনার নিবন্ধনের জন্য আবেদনকৃত, তারিখ: 9/12/2015  
 All Rights Reserved : Lakshmipur24 ©2012- 2024
Chief Mentor: Rafiqul Islam Montu, Editor & Publisher: Sana Ullah Sanu.
Muktijudda Market (3rd Floor), ChakBazar, Lakshmipur, Bangladesh.
Ph:+8801794 822222, WhatsApp , email: news@lakshmipur24.com