প্রসূতির অবস্থার অবনতির খবর পেয়ে লক্ষ্মীপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. আব্দুল গফ্ফার রামগতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে অস্ত্রোপচার (সিজার) করেছেন। প্রসূতি চাঁদনী বেগম (২৪) জন্ম দিয়েছেন একটি মেয়ে সস্তান। তের বছরে এ হাসপাতালে এটি দ্বিতীয় সিজার।
রোববার (২৫ জুলাই) দুপুরে পৌনে ১টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জন্ম হয় শিশুর। এরআগে শনিবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে ওই প্রসূতি প্রসব বেদনা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন।
প্রসূতি চাঁদনী বেগম রামগতি উপজেলা চর আলগী ইউনিয়নের চর টগবী গ্রামের মোহাম্মদ মোহসিনের স্ত্রী। সন্তান প্রসবের পর থেকে প্রসূতি মা ও নবজাতক সুস্থ্য আছেন। জন্মের সময় শিশুর ওজন ছিল তিন কেজি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ওই প্রসূতী হাসপাতালে ভর্তির পর থেকে নরমাল ডেলিভারিতে সন্তান প্রসবের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সম্ভব হয়নি। পরে, খবর পেয়ে সিভিল সার্জন ডা. মো. আব্দুল গফ্ফার নিজেই লক্ষ্মীপুর থেকে ছুঁটে এসে অস্ত্রোপচার (সিজার) করেন। এসময় সহযোগীতায় সঙ্গে ছিলন লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. ইকবাল হোসেনসহ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ও নার্সরা।
প্রসূতির স্বামী মোহাম্মদ মোহসিন বলেন, স্বাভাবিকভাবে সন্তান জন্ম না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছি। করোনা পরিস্থিতির এ সময়ে কি করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না। কিছু বুঝে উঠার আগেই সিভিল সার্জন লক্ষ্মীপুর থেকে এসে অস্ত্রোপচার (সিজার) করেন। আমি কন্যা সন্তানের পিতা হয়েছি। আমি সকল চিকিৎসকের কাছে কৃতজ্ঞ।
এসময় হাসপাতালে নতুন সেবা ডিজিটাল এক্স-রে মেশিনের শুভ উদ্বোধন করেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. আব্দুল গফ্ফার। এ সেবার মাধ্যমে হাসপাতালের স্বাস্থ্য সেবা আরো ত্বরান্বিত হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কামনাশিস মজুমদার বলেন, আমি এ হাসপাতালে যোগদানের পর প্যাথলজি সেবা, এক্স-রে সেবা, প্রসূতি মায়েদের আলট্রাসনোগ্রাফী, প্রসূতি মায়েদের জরায়ু মুখের ক্যান্সার সনাক্তকরণ (ঠওঅ) পরীক্ষা, প্রসূতি মায়েদের জন্য সিজারিয়ান সেকশন এর মাধ্যমে ডেলিভারি সেবা, ডেন্টাল সেবা ও ডেন্টাল এক্স-রে, যক্ষা রোগ নিশ্চিতকরণে জিন-এক্সপার্ট (এঊঘঊ-বীঢ়বৎঃ) সেবা, সেন্ট্রাল-অক্সিজেন লাইনের মাধ্যমে রোগীদের নিরবচ্ছিন্ন অক্সিজেন সেবা (কার্যক্রম চলমান) চালু করেছি।
লক্ষ্মীপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. আব্দুল গফ্ফার বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে ওই প্রসূতির এমন শারীরিক অবস্থার মধ্যে অন্যত্র নেওয়া ছিল ঝুঁকিপূর্ণ, খবর পেয়ে রামগতি এসে অস্ত্রোপচার করি। এসময় একটি কন্যা সস্তানের জন্ম হয়েছে। মা ও নবজাতক দু’জনেই সুস্থ্য আছেন।
উপকূলীয় এ অঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্য সেবা ত্বরান্বিত করতে এ হাসপাতালটি দ্রুত ৫০ শয্যায় উন্নিত করা জরুরি।
7Share