লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলা চর পোড়াগাছা ইউনিয়নের চর কলাকোপা গ্রামের দুটি পরিবারের দীর্ঘদিনের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে অবরুদ্ধ করার পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মন্নান ফরাজী, এরশাদ ও আবদুস সহিদ নামে তাদের প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে এনাম মিয়ার নতুন বাড়ির চলাচলের রাস্তাটি বন্ধের পাঁয়তারার অভিযোগ রয়েছে। এমন পরিস্থিতে বিড়ম্বনায় ও আতঙ্কে মধ্যে পড়েছে পরিবার দুটি।
গতকাল বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, চলাচলের জন্য একটি মাটির রাস্তা, যা নতুন করে ওই পরিবার দুটি মাটি দিয়ে সংস্কার করেছে। হঠাৎ করে ওই প্রতিবেশীরা রাস্তাটি সংস্কার করতে ও চলাচল না করতে বাধা দেয়। বিকল্প কোন রাস্তা না থাকায় চরম বেকায়দায়, ভয়ে ও অনিরাপত্তার মধ্যে রয়েছেন ওই বাড়ির সদস্যরা।
ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জনাগেছে, পরিবার দুটি রাস্তাটি মাটি দিয়ে সংস্কার করতে গেলে বাধার সম্মূখে পড়েন। পরে, থানা পুলিশের সহায়তায় রাস্তাটি সংস্কার করেন। বিগত ৩ বছর আগে এখানে ৪২ শতাংশ জায়গা কিনে বাড়ি করেন এনামুল হক, এরমধ্যে ২ শতাংশ চলাচলের রাস্তার জন্য ব্যবহৃত হবে। কথা থাকে যে, জমির মালিকসহ এ বাড়ির রাস্তা সংস্কারের মাধ্যমে উঁচু ও চওড়া করে দেওয়া হবে। কথা মত সংস্কার করার জন্য অর্থও দেন জমির মালিক নাজিম মাস্টার। সংস্কারকৃত রাস্তার পাশে জমির মালিক নাজিম মাস্টারের ভূমিতে কোনপ্রকার অনুমতি ছাড়াই মসজিদের নাম করে ভূমি দখল করেছে ওই প্রতিবেশীরা। হঠাৎ একদিন রাতের আঁধারে তৈরি হয়ে গেলো একটি পুরানো টিনশেডের মসজিদ কিন্তু ১৫০ গজের মধ্যে একই সমাজে একটি প্রতিষ্ঠিত মসজিদ থাকা সত্বেও কেন এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, এমন প্রশ্ন জনমনে।
বাড়ির অভিভাবক এনাম মিয়া ও তার ছেলে রিয়াজ উদ্দিন জানান, আগে আমাদের বাড়ি বিবির হাট ছিল কিন্তু মেঘনা নদীর ভাঙনের শিকার হয়ে এ এলাকাতে এসে নতুন বাড়ি করেছি। আমাদের বাড়ির দলিল পত্রে তা উল্লেখ আছে। বর্তমানে একটি কুচক্রি মহল আমাদের সাথে বিরোধ করে চলেছে। আমাদের চলাচলের রাস্তা কেটে দিবে, আমাদের বাড়ি-ঘর ভাংচুর করবে বলে হুমকি-ধুমকি দিয়েই যাচ্ছে। নিজ মালিকীয় জমি জোরপূর্বক দখল করার পাঁয়তারা, প্রাণ নাশের হুমকি ও উশৃঙ্খল আচরণ করেই চলেছে। আমরা মান-সম্মানের ভয় ও অনিরাপদ জীবন-যাপন করছি। এ বিষয়ে আমরা একটি মামলা করেছি, যা চলমান রয়েছে। আমরা দ্রæত এ সমস্যা সমাধানে প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মোঃ এরশাদ জানান, চলাচলের রাস্তাটি বন্ধ করার একমাত্র কারণ হচ্ছে জায়গাটি মসজিদের। তাই আমরা সংস্কার করতে বাধা দিয়েছি এবং এ রাস্তা ব্যবহার না করে বিকল্প রাস্তায় চলাফেরা করতে বলেছি। ভবিষ্যতে আমরা চলাচলের নতুন রাস্তা বের করে দিবো।
ওই সমাজের নেতা কামাল পাশা বলেন, হঠাৎ করে এনাম মিয়াদের নিজ দখলীয় দীর্ঘদিনের চলাচলের রাস্তাটি বন্ধ করে অবরুদ্ধ করার পাঁয়তারা করছে কয়েকজন কুচক্রি ব্যক্তি। তাদের অসৎ চিন্তার কারণে এ সমাজে চরম বিভেদ সৃষ্টি হচ্ছে। একই সমাজে ১৫০ গজের মধ্যে নতুন মসজিদ তৈরির নামে ভূমি দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। এসব কিসের ইঙ্গিত, আমার বুঝে আসে না।
জমির মালিক মালেক মোল্লা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ নাজিম উদ্দিন জানান, এনাম মিয়ার কাছে জায়গা বিক্রি করার সময় চওড়া রাস্তা করে দেবো বলে কথা দিয়েছি। তাই, সস্কারের জন্য অর্থও দিয়েছি কেননা, পিছনে আমার আরও জমি রয়েছে। এজন্যে চলাফেরা করার জন্য মজবুত রাস্তার সংস্কার করি। এছাড়া বাড়ির রাস্তার পাশে মসজিদের জন্য জায়গা বিক্রি করার কথাবার্তা চলছে ও কিছু টাকা বায়নাও নিয়েছি কিন্তু দলিল কিংবা জায়গা বুঝিয়ে দেইনি এখনো। জায়গা বুঝিয়ে দেওয়ার আগেই রাতের আঁধারে গায়ের জোরে মসজিদ তৈরি করে। পরে, পুলিশের সহায়তায় মাটি কাটার কাজ বন্ধ করি। এ সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনে আমি জমি বিক্রি করবো না, তাদের বায়নাকৃত অর্থ ফেরত নেওয়ার জন্য আমি প্রস্তাব পর্যন্ত দিয়েছি। কিছু লোকের ভুল সিদ্ধান্তে আমি এ ভুল করেছি। একই সমাজে প্রতিষ্ঠিত একটি মসজিদ থাকতে আরেকটি মসজিদ নির্মাণ হলে সাংঘর্ষিক হবে।
সচেতন মহলের দাবী এমন পরিস্থিতিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপের মাধ্যমে সুন্দর ও সঠিক সিদ্ধান্তে সূচনা হবে একটি আদর্শ সমাজ, এ প্রত্যাশা সকলের।
88Share