নিজস্ব প্রতিনিধি: আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে নারীদের প্রাধান্য দেবে আওয়ামী লীগ। নারী ভোটারদের একচেটিয়া ভোটপ্রাপ্তি নিশ্চিতে এবং নারীর ক্ষমতায়নের দৃষ্টান্ত স্থাপন করতেই এ পরিকল্পনা ক্ষমতাসীনদের। আওয়ামীলীগ এ পরিকল্পনা মতে মনোনয়ন প্রদান করলে লক্ষ্মীপুর-৪ রামগতি-কমলনগর আসন থেকে প্রথমবারের মতো আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পেতে পারেন আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী। তিনি সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে বিগত সময়ে লক্ষীপুর-৪ রামগতি-কমলনগর আসনের দায়িত্বে ছিলেন। সোমবার (২৭ আগষ্ট) এ খবর দিয়েছেন বাংলা দৈনিক আমাদের সময়।
দৈনিক আমাদের সময়ের ওই প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, লাইলী ছাড়াও আরো যে সকল নারী প্রথমবারের মতো আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পেতে পারেন তাদের মধ্যে চাঁদপুর-৫ আসনে সংরক্ষিত আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য নূরজাহান বেগম মুক্তা, টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার থেকে তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, ঢাকা-১৪ আসনে যুব মহিলা লীগ নেত্রী সাবিনা আক্তার তুহিন, জামালপুর-২ আসনে মাহজাবিন খালেদের দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার জোর সম্ভাবনা রয়েছে। একেবারে নতুনদের মধ্যে দলীয় মনোনয়ন পেতে পারেন নেত্রকোনা-১ আসনের সাবেক এমপি জালালউদ্দীন তালুকদারের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস, কুমিল্লা-২ আসনে ব্যবসায়ী নেত্রী সেলিমা আহমাদ।
নারীদের জন্য সংরক্ষিত ৫০টি আসন তো রয়েছেই, এর সঙ্গে ‘সরাসরি আসনে’ নারীদের মনোনয়নের সংখ্যাও বাড়ানো হবে। এমনটিই বলছেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং দলটির সংসদীয় বোর্ডের সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ আমাদের সময়কে বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে সরাসরি আসনে নারীদের মনোনয়নের সংখ্যা বাড়বে।
বর্তমানে ২২ জন নারী সংসদ সদস্য রয়েছেন, যারা সরাসরি নির্বাচন করে সংসদে এসেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেত্রী রওশন এরশাদ, স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীসহ জাতীয় সংসদের চারটি উচ্চপদের সবকটিই নারীদের দখলে। আওয়ামী লীগের নেতারা জানিয়েছেন, আগামী সংসদে আরও বেশি নারীর উপস্থিতি থাক এটা ব্যক্তিগতভাবে প্রধানমন্ত্রী নিজেই চান।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সরাসরি নির্বাচন করে দশম সংসদে আসা নারী এমপিদের মধ্যে একাদশ সংসদেও যারা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে পারেন, তারা হলেন রংপুর-৬ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, গাইবান্ধা-২ আসনের মাহাবুব আরা বেগম গিনি, যশোর-৬ আসনের ইসমত আরা সাদেক, বাগেরহাট-৩ আসনের হাবিবুন নাহার, বরিশাল-৫ আসনে বেগম জেবুন্নেছা আফরোজ, শেরপুর-২ আসনে মতিয়া চৌধুরী, নেত্রকোনা-৪ আসনের রেবেকা মোমিন, মানিকগঞ্জ-২ আসনে মমতাজ বেগম, মুন্সীগঞ্জ-২ আসনে সাগুফতা ইয়াসমিন, ঢাকা-১৮ আসনে বেগম সাহার খাতুন অথবা ডা. দীপু মনি, গাজীপুর-৪ আসনে সিমিন হোসেন রিমি, গাজীপুর-৫ আসনে মেহের আফরোজ, ফরিদপুর-২ আসনে নির্বাচন করার মতো শারীরিক সক্ষমতা থাকলে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, গোপালগঞ্জ-৩ আসনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, চাঁদপুর-৩ আসনে ডা. দীপু মনি, সুনামগঞ্জ-২ আসনে জয়া সেনগুপ্তা, মৌলভীবাজার-৩ আসনে সৈয়দা সায়রা মহসীন অথবা তাদের পরিবারের কেউ, ঢাকা-৪ আসনে সানজিদা খানম অথবা জাতীয় পার্টির কেউ।
ফরিদুন্নাহার লাইলী কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক। এর আগে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক ছিলেন ২ বার এবং বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সামছুন নাহার হলের দু’বারের নির্বাচিত ভিপি এবং একজন সক্রিয় মুক্তিযোদ্ধা।
বিগত ২০০৮ সালে মহাজোট সরকার গঠন করলে ফরিদুন্নাহার লাইলী সংরক্ষিত মহিলা আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়ে রামগতি-কমলনগর আসনের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সে সময় তিনি উন্নয়নের পাশাপাশি এলাকার বহু বেকার যুবকের কর্মসংস্থান করেন। এখনো জনাব লাইলীকে রামগতি-কমলনগরের বেকার যুবক-যুবতীদের আশার প্রতীক বলে মনে করেন অনেকে।
লক্ষ্মীপুর-৪ আসন থেকে আগামী নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে প্রার্থী হওয়ার প্রত্যাশায় তিনি গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। ঘরোয়া পরিবেশ, বিভিন্ন বৈঠক ও মতবিনিময় সভায় নিয়মিত সময় দিচ্ছেন।
0Share