সড়ক দুর্ঘটনা নয়, ছিনতাইয়ের পর রাস্তায় ফেলে গাড়িচাপা দিয়ে হত্যা করা হয় তরুণ মোক্তার হোসেন সৈকতকে। রাস্তা থেকে সৈকতের লাশ উদ্ধারের ১৬ দিনের মাথায় এমনটাই জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) পিবিআই-এর কুমিল্লা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ওসমান গনি এ তথ্য জানিয়েছেন।
সৈকতের বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ উপজেলার দেওপাড়া গ্রামে। ২১ জানুয়ারি ভোরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে তার লাশ উদ্ধার করে মিয়াবাজার হাইওয়ে ফাঁড়ির পুলিশ।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মিরশানী বাজার এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ওপর থেকে অজ্ঞাত পরিচিত এক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার করেন হাইওয়ে ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যরা। মৃতদেহের মাথা-মুখ থেঁতলানো ও বিকৃত অবস্থায় ছিল।ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে লাশের পরিচয় শনাক্ত করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই সুমন মিয়া চৌদ্দগ্রাম থানায় হত্যা মামলা করেন।
লাশের বাম হাতের কব্জিতে কাটা দাগ দেখে এটি নিছক দুর্ঘটনা না, হত্যাকাণ্ড ধরে নিয়ে তদন্ত শুরু করে পিবিআই। তদন্তের ১৬ দিনের মাথায় খুনের রহস্য বেরিয়ে আসে। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ৩ ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করে পিবিআই । তারা হলো, আবুল হাসনাত ওরফে তারেক (২৮), সৈয়দ হাফিজুর রহমান সাইফুল (২৬) ও রাসেল (১৯) । হত্যার দায় স্বীকার করে এ তিন জন আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছে, তারা মহাসড়কে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য। ২০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় তারা একটি প্রাইভেটকার (ঢাকা-মেট্রো গ-২৯-৩৫৯৪) ভাড়া নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ছিনতাই করতে বের হয়। ওই রাতে তারা ফেনী থেকে কুমিল্লার পদুয়ার বাজার পর্যন্ত কয়েকটি স্থানে টাকা ও মোবাইল ছিনতাই করে।
ফেনী থেকে ফেরার পথে রাত দেড়টার দিকে চৌদ্দগ্রামের মিরশানী বাজার এলাকায় সড়কের পাশে সৈকতকে হাঁটতে দেখে। তাকে টেনেহিঁচড়ে প্রাইভেটকারে তুলে নেয় এবং মারধর করে মোবাইল ও টাকা কেড়ে নিয়ে লাথি মেরে সড়কে ফেলে গাড়িচাপা দিয়ে হত্যা করে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওসমান গনি বলেন, কুমিল্লা জেলা পরিষদ সদস্য ও মুরাদনগর উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক খায়রুল আলম সাধন, চান্দিনার নৈশ প্রহরী নাছির উদ্দিনসহ মহাসড়ক থেকে মৃতদেহ উদ্ধারের একাধিক মামলা তদন্তনাধীন রয়েছে। প্রত্যেকটি ঘটনা চাঞ্চল্যকর।
0Share