দেশের বহুজাতিক মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোনের কলরেট বাড়ানোর নির্দেশনা আসছে এসএমপি’র নতুন বিধিনিষেধে। এর ফলে কলরেট বাড়বে গ্রামীণফোন গ্রাহকদের।
গত বুধবার টেলিযোগাযোগ বিভাগের এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। বৈঠকে টেলিযোগাযোগ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব অশোক কুমার বিশ্বাস, বিটিআরসির চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হকসহ বিভাগসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরের শীর্ষ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
নতুন করে এই এসএমপি বিধিনিষেধে অপারেটরটির ডেটা রেটও বাড়ানো হতে পারে। এছাড়া কোয়ালিটি অব সার্ভিস নিয়ে জিপির ওপর বাড়তি কড়া নজর রাখা হবে। একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত যদি সেবার মান সন্তোষজনক না হয়, তাহলে নতুন গ্রাহক বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে।
এ ব্যাপারে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, কলরেটের ওপর নিয়ন্ত্রণারোপ ছাড়া কেউ তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। কিন্তু কী পরিমাণ রেট বাড়ানো হবে, তা এখনও আমরা চূড়ান্ত করিনি।
বর্তমানে যেকোনো মোবাইল অপারেটরের সর্বনি¤œ কলরেট হচ্ছে মিনিটে শূন্য দশমিক ৪৫ টাকা। মূল্য সংযোজন ও অন্যান্য কর যোগ করলে সেটি বেড়ে দাঁড়ায় শূন্য দশমিক ৫৪ টাকা। তবে নতুন হার কার্যকর হলে গ্রামীণফোনের ন্যূনতম কলরেট আরও বেশি হবে।
কলরেট বৃদ্ধির বিষয়টি গ্রাহকদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘এখন নম্বর পরিবর্তন না করে অন্য অপারেটরের সেবা নেওয়ার সুযোগ আমাদের আছে। কাজেই যদি গ্রাহক মনে করেন, এটির কলরেট গ্রহণযোগ্য নয়, তবে সহজেই তারা অন্য নেটওয়ার্ক বেছে নিতে পারেন। এতে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’
উল্লেখ্য, গত ১৯ মার্চ এসএমপি-বিষয়ক একটি বিধিনিষেধ আরোপ করলেও তা বাতিল করে বিটিআরসি। তখন বিধিনিষেধ-সংক্রান্ত কিছু জটিলতার কারণে প্রক্রিয়াটি নতুন করে শুরু করে কমিশন। এর আগে গ্রামীণফোনকে গত ফেব্রুয়ারিতে এসএমপি অপারেটর হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এরপর চারটি বিধিনিষেধ আরোপ করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। তবে ওই সময় শর্ত আরোপের ক্ষেত্রে পরিপূর্ণভাবে বিধি না নামার কারণে আগের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে নতুন করে প্রক্রিয়া শুরু করে। প্রক্রিয়ার মধ্যে ছিল এসএমপি-ঘোষিত অপারেটরকে তাদের ওপর আরোপ হতে চলা বিধিনিষেধ সম্পর্কে অবহিত করে মতামত জানতে চাওয়া হয়। গত ১৯ মার্চ বিটিআরসি ১৫ দিনের সময় দিয়ে গ্রামীণফোনের কাছে মতামত চাইলে অপারেটরটি তাদের মতামত জানায়।
এর আগে গ্রামীণফোনের ওপর আরোপ করতে ২০টি বিধিনিষেধের একটি তালিকা করা হয়। তার মধ্য থেকে চারটি শর্ত অপারেটরটির ওপর কার্যকর করার কথা বলা হয়Ñএমএনপিতে আসা গ্রাহক আটকে রাখার সীমা কমানো, করপোরেট সেবার ক্ষেত্রে এক্সক্লুসিভিটি বা একক অধিকার না রাখতে দেওয়া, কলড্রপের হার কমিয়ে দেওয়া, নিজেদের সেবার প্রচার-প্রচারণায় বন্ধ রাখা। এরপর বিষয়টি নিয়ে গ্রামীণফোন উচ্চ আদালতে গেলে তারা স্থগিতাদেশ পেয়ে যায়। একই সঙ্গে হাইকোর্ট পুরো প্রক্রিয়াটিকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চায় বিটিআরসির কাছে। আইনি প্রক্রিয়া মোকাবিলার পাশাপাশি আগেরবার পুরোপুরি বিধি অনুসরণ না করায় নতুন করে প্রক্রিয়া শুরু করতে হয় কমিশনকে।
0Share