লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে শাহিন আক্তার নামের এক নারী অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যাওয়ার ঘটনায় প্রধান আসামী সালাউদ্দিনকে গ্রেফতার করেছে কমলনগর থানা পুলিশ। সোমবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে রামগতি উপজেলার জমিদারহাট ব্রিজ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
সালাউদ্দিন কমলনগর উপজেলার আইয়ুবনগর গ্রামের মহর আলীর ছেলে। শাহিন আক্তার চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার সোনাগাজী গ্রামের জাফর উদ্দিনের মেয়ে। তিনি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) আলমগীর হোসেন গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে গত ২২ এপ্রিল রাতে শাহিনে বাবা জাফর উদ্দিন বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন। এতে সালাউদ্দিনসহ পাঁচজননের নাম উল্লেখসহ বারোজনকে আসামি করা হয়। পরে পুলিশ চার আসামিকে গ্রেফতার করে তাদের দুইদিনের রিমান্ডে নেয়।
এরা হলেন, সালাউদ্দিনের ভাই আলাউদ্দিন, আব্দুর রহমান, হাফিজ উদ্দিন ও আবু তাহের। তবে স্থানীয়দের দাবী সালাউদ্দিন ছাড়া অন্য আসামীরা নির্দোষ।
স্থানীয় ভাবে জানা যায়, গত ২১ এপ্রিল বিকেলে কমলনগর উপজেলার চরফলকন ইউনিয়নের চার নম্বর ওয়ার্ডের আইয়ুবনগর এলাকার একটি সয়াবিন ক্ষেতের ভেতর থেকে শাহিনকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় দৌড়ে বের হতে দেখেন স্থানীয়রা। পরে তারা দগ্ধ শাহিনকে উদ্ধার করে প্রথমে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পরে ২২ এপ্রিল সকাল ১১টার চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকালে শাহিনের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হওয়ার তার বাবা জাফর উদ্দিনের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় শাহিন অভিযোগ করেন, স্ত্রীর স্বীকৃতি চাওয়ায় তার গায়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছেন তার স্বামী সালাউদ্দিন।
স্থানীয়রা জানান, সালাউদ্দিনের শ্বশুরবাড়িতে এসে সালাউদ্দিনের কাছে স্ত্রীর স্বীকৃতি চান শাহিন। এ সময় সালাউদ্দিন বিয়ে করার কথা অস্বীকার করেন। এ সময় শাহিনের কাছে বিয়ের কাবিননামা চাওয়া হলে তিনি দিতে পারেননি। পরে কাবিননামা দেখাতে না পারায় তাকে কাবিননামা আনতে বলা হয়। এ সময় শাহিনকে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় করে চট্টগ্রামে যাওয়ার জন্য হাজিরহাট বাসস্ট্যান্ডে পাঠিয়ে দেয় স্থানীয়রা। কিন্তু যাওয়ার পথে শাহিন অটোরিকশা থেকে নেমে ফের সালাউদ্দিনের বাড়ির কাছে যান। এ কিছুক্ষণ পর অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় সয়াবিন ক্ষেত থেকে দৌড়ে বের হন শাহীন।
0Share