শাকের মোহাম্মদ রাসেল: লক্ষ্মীপুরের মেঘনায় ইলিশে ধরার নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নদীতে মাছ শিকার করছে জেলেরা। আর গোপনে বিভিন্ন আড়তে দিয়ে চলছে মাছ বেচাকেনার হিড়িক। প্রশাসনের নজরদারী থাকলেও গোপনে এসব মাছ শিকার ও বেচাকেনা করছে জেলে ও আড়ৎদাররা। এতে জাটকা সংরক্ষনে ও মাছ উৎপাদনে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে।
নদীতে সারি সারি নৌকা আর উপরের আড়ৎ গুলোতে হাকডাক দিয়ে চলছে মাছ বেচাকেনার হিড়িক। এমন দৃশ্য প্রতিদিন দেখা যাবে লক্ষ্মীপুরের মেঘনায়। জেলেরা রাতে নদীতে গিয়ে মাছ শিকার শেষে ভোরে বিভিন্ন ঘাটে এসব মাছ বিক্রি করে তারা। জাটকা সংরক্ষন ও ইলিশের উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষে পহেলা মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এ দু মাস লক্ষ্মীপুরের রামগতির আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনল এলাকার ১শ কিলোমিটার পর্যন্ত মেঘনা নদীতে সকল ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার।
অভয়াশ্রম হিসেবে সব ধরণের মাছ শিকার, সংরক্ষন, আহরণ ও পরিবহন সহ সব কিছুই নিষিদ্ধ। অথচ এসব নির্দেশনার তোয়াক্কা না করে গোপনে চলছে জাটকা নিধন, বিক্রি হচ্ছে দেদারছে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু ছৈয়ালের ভাতিজা ও ইউপি সদস্য শাহজাহান মেম্বারের নেতৃত্বে এসব জাটকা নিধন ও ঘাটে বেচাকেনা হচ্ছে। এসময় স্থানীয় চকিদার দিয়েও প্রশাসনকে পাহারা দিয়ে ঘাট নিয়ন্ত্রন করে সে।
এদিকে বিভিন্ন সময় কোষ্টগার্ড ও মৎস বিভিাগের যৌথ অভিযানে ৩৭ জেলেকে আটক করা হয়। জব্দ করা হয় ৭ ইঞ্জিন চালিত নৌকা ও ২ লাখ টাকার নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল।
তবে জেলেদের অভিযোগ, সরকারের দুই মাস অভিযান চালাকালীন সময়ে ৪০ কেজি করে চাল দেয়ার কথা, কিন্তু তারা এখনো চাল পায়নি অনেকে। আর খাদ্য সহায়তা না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে নদীতে মাছ শিকারে যাচ্ছেন তারা।
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ শিকারের দায়ে এরিমধ্যে ২৪ জন জেলেকে কারাদন্ড ১৫ জেলেকে জরিমানা এবং প্রায় ৫ লাখ টাকার অবৈধ কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া ইঞ্জিন চালিত ১৭ নৌকা জব্দ করা হয়।
জেলা মৎস অধিদপ্তরের তথ্য মতে, জেলায় ৪৫ হাজার ৭শত ৭১ জন জেলে রয়েছে। তবে বে-সরকারী হিসেবে মতে জেলের সংখ্যা প্রায় ৬৫ হাজার। নিষেধাজ্ঞার দুই মাস ২৫ হাজার ৯শ ৪৭ জেলে পরিবারকে প্রতি মাসে ৪০ কেজি হারে ভিজিএফের চাউল দেয়ার কথা। কিন্তু সময় অনেক পেরিয়ে গেলেও এখনো পায়নি জেলেরা।
জেলা মৎস কর্মকর্তা মহিব উল্যাহ জানান, নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীদের শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। তবে প্রায় ইউনিয়নের জেলেরা চাল পেয়েছে। কোথাও কোথাও এখন পায়নি, তবে অচিরেই তারাও পাবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন এ কর্মকর্তা।
0Share