নিজস্ব প্রতিনিধি: দীর্ঘ ১৩ বছর পেরিয়ে গেলেও বন্ধ হয়নি কুমিল্লা-লালমাই-চাঁদপুর-বেগমগঞ্জ সড়কের চাঁদপুরে ডাকাতিয়া নদীর উপর নির্মিত চাঁদপুর সেতুর টোল আদায়। অভিযোগ রয়েছে ইতোমধ্যে সেতু নির্মাণ ব্যয়ের দ্বিগুণ অর্থ আদায় হয়েছে। সেতুটি নির্মাণ ব্যয় ১৮ কোটি টাকা। সেতুটির টোল বন্ধ না করায় জনমনে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
টোল বন্ধের দাবিতে ইতোপূর্বে সেতুর উপরে কয়েক দফায় মানববন্ধন, স্মারকলিপি পেশ, বিক্ষোভ মিছিল, অবরোধ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন হয়েছে।
স্থানীয়ভাবে জানা যায়, ২০০৪-০৫ অর্থ বছরে ১৮ কোটি ১২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ২৪৮ মি দৈর্ঘ্যরে চাঁদপুর সেতু নির্মাণ করা হয়। ২০০৫ সালের মার্চ থেকে সেতুর উপর দিয়ে পারাপারকারী যানবাহন হতে ইজারার মাধ্যমে টোল আদায় শুরু হয়।
১ মার্চ ২০০৫ থেকে ৩১ মে ২০১৮ পর্যন্ত ২৯ কোটি ৩৬ লক্ষ ৮১ হাজার টাকা টোল আদায় হয়েছে এবং তা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়া হয়।
বর্তমানে মেসার্স কর্ণফুলী এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান ১২ জুলাই ২০১৮ খ্রি. থেকে ৩০ জুন ২০২১ সাল পর্যন্ত ৭ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা চুক্তিতে সেতুর টোল আদায়ের ইজারা নেয়। প্রতিষ্ঠানটি প্রতি তিন মাস অন্তর এক কিস্তি করে সর্বমোট ১২ কিস্তিতে এই অর্থ পরিশোধ করবে।
ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠানটি সেতু থেকে টোল আদায় শুর করেছে তারা। প্রতিষ্ঠানটি ট্রেলর ২৫০, হেভি ট্রাক ১৭০, মিডিয়াম ট্রাক ১০০, বড় বাস ৯০, মিনি ট্রাক ৭৫, কৃষিকাজে ব্যবহ্রত যান ৬০, মিনিবাস ৫০, মাইক্রোবাস ৪০, ফোর হুইলবাহিত যানবাহন ৪০, সিডান কার ২৫, ৩-৪ চাকার মোটরবাইক যান থেকে ১০ টাকা হারে আদায় করছে।
বিভিন্ন সময়ে এ হারের চেয়ে অধিক টাকা আদায় করার অভিযোগ করেছেন অনেক চালক। এমনকি ঈদ মৌসুমে প্রতি গরু পারাপার করা হলে ৫ টাকা করে আদায় করা হয়। ফরিদগঞ্জের চড়বড়ালী গ্র্রামের রিপন, বাগাদী এলাকার গোলাম সরোয়ার, এমরান হোসেনসহ আরও অনেকেই বলেন, মানুষের মঙ্গলের জন্য সরকার এ সেতু নির্মাণ করলেও আমরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। সরকার জনস্বার্থের কথা চিন্তা করে অন্তত এ সেতুর টোল বন্ধ করা হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
অপরদিকে মুছলেহ উদ্দীন, রাশেদ গাজী, ছোবহান মিজিসহ একাধিক চালক বলেন, একটা অটোতে যাত্রী উঠুক আর না উঠুক, প্রতিবার ১০ টাকা করে দিয়ে যেতে হয়। টোলঘর অতিক্রম করলেই টাকা না দিয়ে যাওয়ার উপায় থাকে না।
চাঁদপুর সেতুর টোল আদায় বন্ধে আন্দোলন করে যাচ্ছেন বাস মালিক সমিতির নেতা আব্দুর রাজ্জাক রাজা। তিনি বলেন, টোল আদায় বন্ধের জন্য সাবেক পররাষ্ট মন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাবেক স্বরাষ্টমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর, যোগাযোগ মন্ত্রনালয়ের সচিব, স্থানীয় এমপি ড. শামছুল হক ভুঁইয়া, জেলা পরিষদের প্রশাসক আবু ওসমান চৌধুরীর কাছে স্বারকলিপি দিয়েছিলাম। এছাড়া হাজার-হাজার মানুষ টোল বন্ধের দাবিতে গণস্বাক্ষর দিয়েছে। এমনকি সেতুর উপর মানববন্ধন করা হয়েছিলো। কিন্তু টোল বন্ধ হয়নি।
জনগণের স্বার্থে টোল প্রতাহারের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
চাঁদপুরের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট এই সেতু থেকে টোল আদায়ের জন্যে সক্রিয় রয়েছে।
0Share