নিজস্ব প্রতিনিধি: চলছে ইলিশের ভরা মৌসুম। তবুও জেলেদের জালে দেখা মিলছেনা রুপালি ইলিশ। দিনভর বিস্তৃর্ণ মেঘনায় জাল পেলে মাছ না পেয়ে অবশেষ খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে জেলেদের।আসন্ন ঈদ সামনে রেখে আনন্দ নেই এসব জেলে পরিবার গুলোর মাঝে। ঈদের বাকি আর মাত্র কয়েক দিন। ব্যস্ততা নেই ঈদের কেনাকাটা নিয়ে। ছেলে মেয়ে কিংবা পরিবারের সদস্যদের জন্য নতুন জামা কাপড় কিনার অর্থ নেই তাদের হাতে।ফলে জেলেপাড়ার ্ঈদে অশনি সংকেত দেখা দিয়েছে।
কমলনগর উপজেলার মতিরহাট ঘাট, লুধুয়াঘাট, রামগতি উপজেলার রামগতির ঘাট, টাংকীর ঘাট, গাবতলীর ঘাট, আলেকজান্ডার সেন্টার খাল ঘাট, সদর উপজেলার মজু চৌধুরীর ঘাট ও রায়পুর উপজেলার বিভিন্ন ঘাট থেকে পাওয়া গেছে এমন চিত্র। মেঘনায় জেলেদের জালে শুধু ইলিশই নয় অন্য মাছও আশানুরূপ ধরা পড়ছে না। ঘাটগুলোতে ইলিশ মাছের তীব্র সংকটের কারণে ইলিশ আহরণ ও বাজারজাতকরণের সাথে জড়িত মেঘনা উপকূলের হাজার হাজার জেলে এবং ব্যবসায়ী চরম হতাশা মাছ ঘাটে, মাছের আমদানি না থাকায় জেলে পল্লীগুলোতে শূন্যতা বিরাজ করছে। কোনো কোনো জেলের জালে দুই-একটা ইলিশ মিললেও দাম সাধারণ ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। স্বল্প পরিমাণ ইলিশ ঘাটে আসলেও এ সাথে জড়িত জেলে, আড়তদার ও শ্রমিকসহ অনেকেই বসে বসে পুঁজির টাকা খরচ করছেন।
ইলিশ নির্ভর উপকূলীয় এলাকার মানুষের চোখে-মুখে অভাব আর হতাশার ছাপ। রামগতি মাছ ঘাটের খোকন মাঝি জানায়, বিগত বছরগুলোতে এ সময় জেলেদের জালে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়েছিল। অথচ এবার সময় অতিবাহিত হলেও জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়ছে না। মতিরহাট ঘাটের ব্যবসায়ী কবির জানান, গত বছর এ সময় এ ঘাট থেকে প্রায় ২০০ টন ইলিশ দেশের অভ্যন্তরীণবাজারে চালান হয়েছে। কিন্তু এ বছর নদীতে মাছ নেই।করইতোলা বাজারের বরফকল মালিক কালাম জানান, এ সময় জেলার মত্স্য আড়তগুলোতে ইলিশের ছড়াছড়ি থাকার কথা, কিন্তু এ বছর তা দেখা যাচ্ছে না। জেলেরা বরফ কিনতে না এলেও বরফকলের মেশিন সবসময় চালু রাখতে হয়। ফলে বরফ বিক্রি না থাকলেও বিদ্যুত্ বিল এবং অন্যান্য খরচ মেটাতে গিয়ে লোকসান গুণতে হচ্ছে।
বর্তমানে বাজারে যে কয়টি ইলিশ মাছ পাওয়া যায় তারও দাম বৃদ্ধি। বাজারে ৫০০ গ্রামের প্রতি কেজি ইলিশ ৯শ থেকে ১ হাজার টাকায় ও ১ কেজি ওজনের ইলিশ ১৪ শ থেকে ১৫শ টাকায় বিক্রি করা হয়।
বাত্ঘাতির ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী মোঃ রফিক সাদী জানান, বৈশাখ মাস থেকে ইলিশের ভরা মৌসুম চললেও এখন পর্যন্ত জেলেদের জালে আশানূরূপ ইলিশের দেখা মিলছে না। দৈনিক একটি নৌকা ২-৩ টির বেশী মাছ পায় না। আবার কেউ কেউ ফিরছে খালি হাতে। বিগত বছর গুলোর এমন দিনে স্থানীয় চাহিদা মিঠিয়ে এ ঘাট থেকে প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ লক্ষ টাকার মাছ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি হতো। বর্তমানে ইলিশ সংকটের কারণে এ ঘাট থেকে দৈনিক ১ লক্ষ টাকার মাছ ক্রয় বিক্রয় হচ্ছে না।
কমলনগর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, ইলিশ জলবায়ুর সাথে জড়িত। জলবায়ুর প্রভাবারে কারণে নদীতে তেমন মাছ ধরা পড়ছে না। ইলিশ হলো গভীর পানির মাছ। চর পড়ে দিন দিন নদীর গভীরতা কমে যাওয়ায় এবং পর্যাপ্ত জড় বৃষ্টি না হওয়ায় সাগর থেকে নদীতে মাছ আসছে না।
0Share