জুনায়েদ আহম্মেদ: প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে লক্ষ্মীপুরে ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে তেমন কোন প্রভাব পড়েনি। তবে ধানের বাম্পার ফলন হলেও বাজারে ন্যায্য দাম না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সরকার চাল সংগ্রহ শুরু করলেও ধান সংগ্রহ শুরু না করায় চাল ব্যবসায়ী ও মিল মালিকরা সিন্ডিকেট করে কৃষকদের সস্তায় ধান বেচতে বাধ্য করছেন। বোরো ধান ক্ষেত থেকে উঠার পরও ধান সংগ্রহ শুরু না করায় ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটরা এ সুযোগ কাজে লাগান, ফলে ঠকছেন প্রান্তিক কৃষকরা।
জানা যায়, সারাদেশে ৮ লক্ষ টন সিদ্ধ চাল, ১ লক্ষ টন আতপ চাল ও দেড় লক্ষ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। চলতি বছরের ২ মে থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সরকারিভাবে ধান ও চাল সংগ্রহ অভিযান চলবে। কিন্তু সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী শুধুমাত্র বরিশাল ও সিলেট বিভাগে ধান সংগ্রহ করা হচ্ছে। আর দেশের অন্য বিভাগগুলোতে শুধুমাত্র চাল সংগ্রহের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
কৃষি বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, জেলার পাঁচটি উপজেলায় চলতি মৌসুমে ২৮ হাজার ১০৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে। আর চাউল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১ লক্ষ ১৬ হাজার ৭৬৮ মেট্রিক টন নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী উৎপাদন শতভাগ পূরণ হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে জানা যায়, সরকার ৩৮ টাকা কেজি দরে চাল এবং ২৬ টাকা কেজি দরে ধান কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চলতি বছরের ২ মে থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ধান ও চাল সংগ্রহ অভিযান চলবে। কিন্তু ধান ক্রয়ের সরকারি নির্দেশনা না পাওয়ায় এ জেলায় ৫৬১ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৪৭০ মেট্রিক টন, রামগঞ্জ উপজেলায় ৩৮ মেট্রিক টন ও কমলনগর উপজেলায় ৫৩ মেট্রিক টন। তবে গত ২০ দিনে জেলার ৪টি রাইস মিল থেকে ৩৮ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করা হয়েছে।
সদর উপজেলার বশিকপুর গ্রামের কৃষক আলী আযম জানায়, এক মণ ধান উৎপাদনে খরচ হয় ৭০০-৮০০ টাকা। বর্তমান বাজারে এক মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৭০০-৭৫০ টাকা। সরকারিভাবে ধান সংগ্রহ শুরু হলে প্রতি মণে ১ হাজার ৪০ টাকা পাওয়া যেত। কিন্তু ধান সংগ্রহ শুরু না হওয়ায় বাধ্য হয়ে কম দামে তিনি ধান বিক্রি করেছেন।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (অঃদাঃ) নয়ন জ্যোতি চাকমা জানান, প্রতি বছর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে কৃষকদের তালিকা সংগ্রহ করে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু চলতি বছর ধান সংগ্রহের নির্দেশনা ও বরাদ্দ এখনো না পাওয়ায় শুধুমাত্র চাল সংগ্রহ করা হচ্ছে।
0Share