নোয়াখালী-১২(হাতিয়া-রামগতি) আসনের সাবেক গণপরিষদ সদস্য (এমপিএ) এবং সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা আলহাজ্ব সিরাজুল ইসলাম আর নেই। হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে বৃহস্পতিবার (২৯ আগষ্ট) রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি … … …রাজিউন)।
আলহাজ্ব সিরাজুল ইসলাম:
এলাকায় তিনি সিরাজ এমপি নামে পরিচিত। ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের লীগের প্রার্থী হিসাবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে হাতিয়া-রামগতি আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। এ সময় তিনি এলাকার উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। এর আগে ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে তিনি একই এলাকা থেকে পাকিস্তান জাতীয় গণ পরিষদ সদস্য (এমএনএ) নির্বাচিত হন। সিরাজুল ইসলাম সাহেব নোয়াখালী জেলা আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। রামগতি থানা আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও ছিলেন তিনি। পরে তিনি লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি হন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালে তার বাড়িতে আসেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের পথে তিনি ছিলেন স্থানীয় অন্যতম সৈনিক। ২৫ মার্চ কালো রাত্রীতে তিনি বাড়িতে ছিলেন। এলাকায় থাকা নিরাপদ নয় ভেবে তিনি বেগমগঞ্জ হয়ে ভারতে চলে যান। এ সময় তিনি আগরতলা যুব প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে থাকতেন। এ ক্যাম্পে নোয়াখালী ও ল²ীপুরের অন্যান্য এমএনএ, এমপিএগণ ছিলেন। ৭ ডিসেম্বর ভারত থেকে মাইজদী হয়ে রামগতি আসেন। এরপর মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করতে থাকেন এবং নিজেও যুদ্ধে নেমে পড়েন।
সাবেক এমপিএ ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আলহাজ্ব সিরাজুল ইসলাম সাহেবের জন্ম ১৯৩৫ সালে কমলনগর (সাবেক রামগতি) উপজেলার চর লরেঞ্চ গ্রামে। বাবা আলহাজ্ব আমিন উদ্দিন পাটোয়ারি এবং মাতার নাম সরাফাতুন্নেছা। তিনি ১৯৫১ সালে রামগতি বিবিকে উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মেট্টিকুলেশন, ১৯৫৪ সালে কুমিলা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে থাকাকালে ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িত হন তিনি। তিনি উক্ত কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি ছিলেন। এ সময় তিনি ভাষা আন্দোলনে অংশ নেন। আন্দোলন করতে গিয়ে কারাবরণ ও করেন। কারাগারে থেকেই আইএ পরীক্ষা দেন তিনি। তিনি ১৯৫৪ সাল থেকে দৈনিক ইত্তেফাকে নোয়াখালী সংবাদদাতা হিসাবে সাংবাদিকতা শুরু করেন। ১৯৫৬ সালে পাকিস্তান ন্যাশনাল এসেম্বলি দেখার জন্য পাকিস্তানের করাচী যান। সেখানে তার সাথে শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে প্রথম পরিচয় হয়। এ গ্রন্থটির তথ্য সংগ্রহকালে তিনি বাড়িতে অবসর যাপন করতে ছিলেন।
জীবনী তথ্যসূত্র: লক্ষ্মীপুর জেলার ইতিহাস গ্রন্থ লক্ষ্মীপুর ডায়েরি
0Share