সব কিছু
facebook lakshmipur24.com
লক্ষ্মীপুর বৃহস্পতিবার , ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের গর্ব  লক্ষ্মীপুরের “পাপুল”

বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের গর্ব  লক্ষ্মীপুরের “পাপুল”

0
Share

বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের গর্ব  লক্ষ্মীপুরের “পাপুল”

লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোর:: রাজতন্ত্রের কুয়েতে তিনি যেন আরেক ‘প্রিন্স’। সাতটি প্রতিষ্ঠানের তিনি কর্ণধার। তার প্রতিষ্ঠানের গাড়ির সংখ্যাই ১২ শতাধিক। তার অধীনে কাজ করেন শতাধিক কুয়েতিসহ সাড়ে ১২ হাজার কর্মকর্তা ও কর্মচারী। তাদের মধ্যে ১০ হাজারই বাংলাদেশি। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ ৩১টি দেশের বহু নাগরিকের কাজের ঠিকানা তার হাতে গড়া কুয়েতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।

বাংলাদেশের এই নাগরিককে প্রতিষ্ঠিত ও সফল ব্যবসায়ী হিসেবে অনুসরণীয় উল্লেখ করে স্থানীয় কুয়েত টাইমসসহ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রায়শই ছাপা হয় তাকে নিয়ে প্রতিবেদন আর সাক্ষাতকার। তিনি সহিদ ইসলাম পাপুল (৪৮)। বাংলাদেশের লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুরের ছেলে। কেরোয়া কাজীবাড়ির কাজী নুরুল ইসলামের ৫ ছেলে ২ মেয়ের মধ্যে পঞ্চম এই ছেলেটিই এখন কুয়েতের অঘোষিত ‘প্রিন্স’।

papul

সহিদ ইসলাম পাপুল ‘মারাফি কুয়েতিয়া’ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও। কুয়েত জুড়ে ইলেকট্রিক্যাল কস্ট্রাকশন, ইন্টারন্যাশনাল মানি রেমিটেন্স, ইঞ্জিনিয়ারিং মেইনটেনেন্স (অয়েল অ্যান্ড গ্যাস), ইউএস আর্মি ও জাতিসংঘের সঙ্গে মিলিটারি সাপোর্ট কন্ট্রাক্ট, ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট, ট্রান্সপোর্টেশন লজিস্টিক, আর্মড, নন আর্মড আইটি সিকিউরিটি, ফিশিং, এক্সপোর্ট ইম্পপোর্ট, ইন্টারনাশনাল ব্র্যান্ড ও মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানির স্পন্সর, প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট কনসালটেন্সিসহ বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করে আলোচিত এ বাণিজ্যিক গ্রুপটি।

এ ছাড়াও দেশে এনআরবিসি কমার্শিয়াল ব্যাংকের পরিচালক ও রিক্স ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান তিনি। পাশাপাশি কুয়েতে আমেরিকান আর্মি অ্যাসোসিয়েশন ও আমেরিকান বিজনেস কাউন্সিলের সদস্য। বাংলাদেশ কমিউনিটির সভাপতি, বিজনেস কাউন্সিলের আহবায়ক ও বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলেরও তিনি চেয়ারম্যান। চলাফেরায় সাদাসিধে। তবে চড়েন রোলস রয়েলসের লেটেস্ট ‘বেন্টলি’ মডেলের গাড়িতে। কিন্তু কথা বলেন নোকিয়ার তৈরি দশ বছরের পুরনো মডেলের আনস্মার্ট সেটে! যদিও এর পেছনে কোনো বিশেষ ‘রহস্য’ নেই বলেও দাবি তার।

প্রবাসী হয়েছেন মাত্র দুই যুগ। এর মাঝেই নিজের মেধা আর শ্রমের সমন্বয়ে মরুভূমির দেশ কুয়েতে গড়ে তুলেছেন এক বিশাল সাম্রাজ্য। কি করে সম্ভব হলো এই অসম্ভবকে সম্ভব করা? সহিদ ইসলাম পাপুলর নিজের ভাষায়- ‘বাবা ছিলেন সেনাবাহিনীতে। বদলির চাকরির সুবাদে চট্রগ্রাম ও ঢাকায় বেড়ে ওঠা। পড়েছি চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট স্কুল, পরে ঢাকার ইন্সটিটিউট অব পাবলিক হেলথ (আইপিএইচ) স্কুলে। উচ্চ মাধ্যমিক তিতুমীর কলেজে’। ‘সালটা ১৯৯২। মেঝো ভাই ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার কাজী মঞ্জুরুল আলমের হাত ধরে পাড়ি দেই মরুভূমির দেশ কুয়েতে’। ‘তখন থেকে স্বপ্ন তাড়া করে। অনেকের মধ্যে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নেওয়ার। দোভাষি হিসেবে যোগ দেই আমেরিকান অয়েল কোম্পানি ভ্যাকটেলে। পরের বছর কুয়েত ছেড়ে পাড়ি দেই আমেরিকায়। সেঝো ভাই মেডিকেল ল্যাব রিচার্সার কাজী ফকরুল আলমের কাছে’। তিনি বলেন, ‘এরপর উচ্চশিক্ষার জন্যে ভর্তি হই নিউইয়র্ক সিটি কলেজে, বিষয় অর্থনীতি। সেখান থেকে কুয়েতে ফিরে যোগ দেই একটি ট্রেডিং অ্যান্ড কন্টাক্ট্রিং প্রতিষ্ঠানে প্রকল্প পরিচালকের পদে।

বেশিদিন ভালো লাগেনি। কাজে বৈচিত্র্য আনতে যোগ দেই গাড়ি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান টয়োটাতে সেলস অপারেশন ম্যানেজার হিসেবে’। ‘১৯৯৪ সালে কুয়েতে ব্রিটিশ নিরাপত্তা প্রদানকারী সংস্থা গ্রুপ ফোর গড়ে ওঠে আমার হাত দিয়ে। ১৯৯৭ সালে যোগ দেই মারাফি কুয়েতি কোম্পানিতে সিকিউরিটি ডিভিশনে জেনারেল ম্যানেজার হিসেবে’। ‘নিজের মেধা আর অক্লান্ত পরিশ্রমে মারাফি কুয়েতকে গ্রুপে পরিণত করে গঠন করি একে একে সাতটি কোম্পানি। ১৯৯৯ সালে মাত্র একটি প্রতিষ্ঠানের অংশীদার হিসেবে ব্যবস্থাপনা পরিচালক নির্বাচিত হই’। সহিদ বলেন, ‘২০০২ সালে আমেরিকান আর্মিসহ একাধিক প্রাইম ইউএস গভর্নমেন্ট কন্ট্রাক্টে ৮২ মিলিয়ন ডলার মূল্যের প্রকল্পের কাজ পাই। কুয়েত সরকারের দেড়শ’ মিলিয়ন ডলারের আরেকটি কাজ পাই। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ২০০৭ সালে সফল ও লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয় গ্রুপের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই। এক পর্যায়ে দেখা গেলো আমাদের গ্রুপটি উঠে এসেছে অন্যতম শীর্ষস্থানে’। ‘বর্তমানে এক বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ব্যয়ের প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে আমাদের গ্রুপটি। এটা এখন তাই রকেটের গতিতে চলছে। আমাদের বহরে রয়েছে ১২শ’ যানবাহন, যেগুলোর মূল্য সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে টাওয়ার ক্রেন, ট্যারেক্স, হুইল লোডার, ডি এইট এস্কেভেটর, ডাম্প অ্যান্ড বুম ট্রাক, ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট কম্পেক্টর অ্যান্ড ইক্যুইপমেন্টস, বাস, জিপসহ সব ধরনের যানবাহন’। মারাফি গ্রুপেই ৫ বছর ধরে চিফ ফাইন্যান্স অফিসার হিসেবে ‍দায়িত্ব পালন করছেন কোলকাতার অলক কুমার দেব। তিনি বলেন, ‘আমাদের ফাইল নিয়ে এমডি স্যারের রুমে যেতে হয় না। তিনিই সবার কাছে গিয়ে ফাইলে সই করে আসেন। তার কাজে কোনো বিরাম নেই। কাজ আর কাজ। আবার মাস পার হওয়ার আগেই বেতন দেওয়া হয় আমাদের কর্মীদের’। সহিদও জানান, ‘দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে দেশ থেকে ১০ হাজার কর্মীকে এনে চাকরি দিয়েছি এই গ্রুপে। যার ওপর ভিত্তি করে দেশে এক লাখ মানুষ ভালো আছেন। নিশ্চিন্ত জীবন-যাপন করছেন’। ‘পরিকল্পনা রয়েছে দেশ থেকে আরো দেড় হাজার দক্ষ,  অদক্ষ, সাধারণ কর্মী আমদানি করবো কুয়েতে। সরকারি সহযোগিতা পেলে কুয়েতসহ তেল সমৃদ্ধ ছয়টি দেশ থেকে বাংলাদেশে একটি বড় ধরনের বিনিয়োগ পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়াও দেশে আন্তর্জাতিক মানের মেডিকেল কলেজ ও নার্সিং কলেজ স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে’- বলে উল্লেখ করেন সহিদ ইসলাম পাপুল। ব্যক্তি জীবনে চার মেয়ে এক ছেলের জনক সহিদ। দুই মেয়ে পড়ছেন আমেরিকায়। সন্তানরা উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হবেন আর তিনি দেশে ফিরে সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করবেন- এটাই তাঁর একমাত্র লক্ষ্য। সে লক্ষ্যে ১৫ সেপ্টেম্বর রায়পুরে তিনি লক্ষ্মীপুরের সাংবাদিকদের সাথে তার নিজের কাজ নিয়ে আলোচনা করবেন।

 

জীবনী | ব্যক্তিত্ব আরও সংবাদ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য অধ্যাপক মাকসুদ কামাল

নেডারল্যান্ডের শিশু শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হলেন লক্ষ্মীপুরের মাইনুল ইসলাম

লক্ষ্মীপুরে মোটরসাইকেল চাপায় সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ উল্যা নিহত

ইউএস আর্মি স্পেশালিস্ট পদে নিয়োগ পেলেন বাংলাদেশি যুবক ফরহাদ

৪১তম বিসিএসে ক্যাডার হলেন লক্ষ্মীপুর জেলার ২২ জন

‘ব্যারিস্টার-এট-ল’ ডিগ্রী অর্জন করলেন লক্ষ্মীপুরের এডভোকেট সালাহ উদ্দিন দোলন

লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোর বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ে অনলাইন নিউজপোর্টাল প্রকাশনার নিবন্ধনের জন্য আবেদনকৃত, তারিখ: 9/12/2015  
 All Rights Reserved : Lakshmipur24 ©2012- 2024
Chief Mentor: Rafiqul Islam Montu, Editor & Publisher: Sana Ullah Sanu.
Muktijudda Market (3rd Floor), ChakBazar, Lakshmipur, Bangladesh.
Ph:+8801794 822222, WhatsApp , email: news@lakshmipur24.com