প্রথমদিনের গণটিকার উদ্বোধনী দিনে লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন টিকাদান কেন্দ্রে মানুষের দীর্ঘ সারি ছিল। অনেক কেন্দ্রে টিকা রেজিষ্ট্রেশন কার্ড ছাড়াও কেন্দ্রে আসা লোকজন বাড়তি একটি টোকেন সংগ্রহ করে এসেছিলেন। রেজিষ্ট্রেশন কার্ড এবং ওই টোকেন থাকলেই অনেকে টিকা পেয়েছেন। খুব সামান্য সংখ্যক কিছু লোক টোকেন ছাড়া টিকা পেয়েছেন। বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষয়দ এবং পৌরসভার পক্ষ থেকে ওই টোকেন প্রদান করা হয়েছিল। এতে টোকেন সিস্টেম নিয়ে টিকা গ্রহিতাদের মাঝে পক্ষ-বিপক্ষে প্রতিক্রিয়া দেয়া দিয়েছে। শনিবার(৭ আগষ্ট) জেলার বিভিন্ন টীকাদান কেন্দ্রে গিয়ে এমন তথ্যগুলো জানা গেছে।
জেলার ৪টি পৌরসভা এবং ৫৮টি ইউনিয়নের ১৯৫টি কেন্দ্রে এ বিশেষ টোকেন চালু করার তথ্য পাওয়া গেছে। টোকেন বয়সী নারী, পুরুষদের দেয়ার কথা থাকলেও বিভিন্ন স্থানে এর কোনটিই দেখা হয়নি।
লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১১ নং ওয়ার্ডে কথা হয় লাকী বেগম (৭০) নামের এক নারীর সাথে। তিনি জানান, তার স্বামী তার জন্য রেজিষ্ট্রেশনের পর কাউন্সিলর থেকে একটি টোকেন এনেছিল। দুইটা দেখানোর পর টিকা পেয়েছেন।
ভোর থেকে চলমান ভারী বর্ষণ উপেক্ষা করে টিকা প্রদানের পর বাড়ি যাওয়ার পথে কথা, উত্তর চর লরেঞ্চ গ্রামের আবদুল হক নামের এক বৃদ্ধার সাথে। তিনি জানান, স্থানীয় ইউপি সদস্য অনেককে টোকেন দিয়েছে, আমি টোকেন ছাড়াই টিকা দিয়েছি।একই গ্রামের যুবক আবদুল হালিম(৩০) জানান, আমি ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার থেকে টোকেন নিয়ে টিকা দিয়েছি।
কমলনগর উপজেলার চর লরেঞ্চ ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডে ১ ঘন্টা টিকা প্রদানের পর টোকেন ছাড়া অন্য কাউকে টিকা প্রদান না করার নির্দেশ দেয়া হয়। পরে টোকেন ছাড়া অন্যদের কে অন্যদিন টিকা নেয়ার পরামর্শ দেয় দায়িত্বে থাকা স্বাস্থ্য সহকারী।
চর ফলকন ইউনিয়নের ১ নং টিকাদান কেন্দ্রে টোকেনের সিরিয়াল নিয়ে ধাক্কাধাক্কি হওয়ার পর প্রায় ৩০ মিনিট টিকা কার্যক্রম স্থগিত ছিল। পরে চেয়ারম্যান গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
তোরাবগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদেরে সচিব মোঃ গিয়াস উদ্দিন জানান, ১নং ওয়ার্ডে টোকেন সিষ্টেম না করার কারনে ভবানীগঞ্জ, তেওয়ারীগঞ্জ, চর লরেন্স ইউনিয়নের লোক এসে টিকা দিয়ে গেছে। কিন্ত নিজ ইউনিয়নের লোক ফেরত গেছে।
কমলনগর উপজেলার চর লরেঞ্চ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আহসান উল্লাহ হিরণ জানান, প্রথম দিনে টিকা নিতে এসে যাতে বিশৃঙ্খলা না হয়, সেজন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে রেজিষ্ট্রশন সম্পন্নকারীদের কে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে বাড়তি সিরিয়াল টোকেন দেয়া হয়েছে। কিন্ত কিসের ভিত্তিতে টোকেন দেয়া হয়েছে তা স্পষ্ট করে জানাতে পারেননি তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুজ্জামান জানান, প্রথম দিনে প্রতি কেন্দ্রে ২শ লোককে টিকা প্রদানের কথা বলা হয়েছে। যাতে বিশৃঙ্খলা না হয় সেজন্য রেজিষ্ট্রেশন কার্ড ছাড়াও বাড়তি একটি টোকেন দেয়ার নির্দেশনা ছিল। তবে সেখানে বয়সী নারী পুরুষদের কে ওই টোকেন দিতে নির্দেশনা ছিল। কিন্ত কোন ইউনিয়ন পরিষদ যদি এর ব্যতিক্রম করে থাকে তা ভবিষ্যতে দেখা হবে।
লক্ষ্মীপুর জেলা টিকাদান কর্মসূচীর সুপারিনটেডেন্ট মোঃ সানা উল্লাহ জানান, জেলার ৫৮টি ইউনিয়ন এবং ৪টি পৌরসভার ১৯৫টি কেন্দ্রে টীকা কর্মসূচী কার্যকর করা হয়। বেলা ১টার মধ্যেই বেশির ভাগ কেন্দ্রে নির্ধারিত টিকা প্রদান শেষ হয়ে যায়। তিনি আরো জানান প্রতিটি কেন্দ্রে ৩টি বুথের মাধ্যমে ৬শ গ্রহিতাকে টিকা প্রদান কথা থাকলেও কিছু কেন্দ্রে চাহিদার প্রেক্ষিতে সাড়ে সাতশ টিকা প্রদান করা হয়েছে। রেজিষ্ট্রেশনের সাথে টোকেন কার্ড বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাতে পারেননি তিনি।
195Share