‘লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোর’সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার শহীদনগর বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের দুই ভুয়া প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষার পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বুধবার ‘প্রাথমিক বিজ্ঞান’ বিষয়ের পরীক্ষা চলাকালে তাদেরকে বহিষ্কার করা হয়।
বহিষ্কৃতরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হয়েও আনন্দ স্কুলের শিক্ষার্থী সেজে পিইসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলো। মঙ্গলবার দৈনিক শিক্ষায় ‘কমলনগরে পিইসি পরীক্ষা দিচ্ছে আষ্টম-নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা-এ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ হলে কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেন।
বহিষ্কৃতরা হচ্ছে, সিরাজুল ইসলাম এমপি আনন্দ স্কুলের পরীক্ষার্থী আবির মাহমুদ (পিইসি রোল-৮৪৯) এবং একই স্কুলের পরীক্ষার্থী তানিয়া আক্তার (পিইসি রোল-৮৫২)। এদের মধ্যে আবির স্থানীয় চরলরেন্স উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির মানবিক শাখার ছাত্র এবং তানিয়া একই বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী।
শহীদনগর বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলাম জানান, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন আনন্দ স্কুলের শিক্ষার্থী হয়ে পিইসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে এমন অভিযোগ পেয়ে বুধবার পরীক্ষা চলাকালে যাচাই-বাছাই করা হয়।
এ সময় অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ওই দুই পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়। আরও ভুয়া পরীক্ষার্থী পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
অভিযোগ রয়েছে, আনন্দ স্কুলের শিক্ষকরা বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিজ স্কুলের শিক্ষার্থী দেখিয়ে উপবৃত্তি ও শিক্ষা উপকরণসহ সরকারি অর্থ লোপাট করছেন। এখন পিইসি পরীক্ষায় নিজ স্কুলের শিক্ষার্থী দেখাতে বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আর্থিক প্রলোভন দেখিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ কারাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে বক্তব্য নেওয়ার জন্য মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিজ স্কুলের শিক্ষার্থী সাজিয়ে পিইসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কাজে অনিয়মকারী সিরাজুল ইসলাম এমপি আনন্দ স্কুলের শিক্ষিকা ফাতেমা আক্তারের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তা বন্ধ পাওয়ায় যায়।
তবে, আনন্দ স্কুলের উপজেলার ট্রেনিং কো-অর্ডিনেটর মো. নাজিম উদ্দিন জানান, আনন্দ স্কুলের ভুয়া পরীক্ষার্থী বহিষ্কারের বিষয়টি ইতোমধ্যে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় ভুয়া পরীক্ষার্থীদের স্কুলের শিক্ষকের পার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এটিএম এহছানুল হক চৌধুরী বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা সমপনী পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ভুয়া পরীক্ষার্থীদের শনাক্ত করতে তিনি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ অনিয়মের সঙ্গে জড়িত কেউই রেহাই পাবে না বলে তিনি হুশিয়ারি দেন।
388Share