কাজল কায়েস:: শেষ মূহুর্তে প্রচার-প্রচারণায় সরগরম হয়ে উঠেছে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনী মাঠ। ২৩ মে উপজেলার চর আবদুল্লাহ, চর আলগী ও বড়খেরী ইউনিয়নে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। সহিংসতার আশংকায় আতংকে রয়েছেন ভোট ও প্রার্থীরা।
বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থীদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা ভোটের মাঠে প্রভাব বিস্তার করছেন। তারা ধানের শীষের নির্বাচনী পোষ্টার ছিনিয়ে নিয়ে নেতাকর্মীদের মারধর করছে। নির্বাচন থেকে বিরত থাকার জন্য তাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এতে নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন। নির্বাচনী মাঠ ঘোলাটে করতে বিএনপি এমন অভিযোগ তুলছেন। শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে।
রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চর আবদুল্লাহ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন (নৌকা), উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুর রব (ধানের শীষ), জেএসডি নেতা আবুল কালাম (তারা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. বাবুল মিঝি (আনারস) প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।
চর আলগী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন লিটন চৌধুরী (নৌকা), ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান চেয়ারম্যান সিরাজ উদ্দিন (ধানের শীষ) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল আজিজ রনি (আনারস) লড়ছেন।
বড়খেরী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ ফেরদাউস (নৌকা), ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক মো. নোমান হোসেন নুরনবী (ধানের শীষ), স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহবুবুল আলম নয়ন (আনারস) ও আবুল কালাম (চশমা) ভোটের মাঠে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।
দূর্গম চর আবদুল্লাহ ইউনিয়নে বিএনপির প্রার্থী আবদুর রবের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী কামাল ও তার লোকজন সন্ত্রাসীদের দিয়ে ইতোমধ্যে ত্রাস সৃষ্টি করেছে। প্রতিক পাওয়ার পর থেকে অব্যাহত হুমকি, হামলা, মারধর করে যাচ্ছে নেতাকর্মীদের। তার এক হাজার ২০০ পোষ্টার ছিনিয়ে নিয়ে আওয়ামী লীগের লোকজন পানিতে ফেলে দিয়েছে। এসময় ৭-৮ নেতাকর্মীকে মারধর করা হয়। চর আলগী ও বড়খেরী ইউনিয়নের বিএনপির নেতাকর্মীদের এলাকাছাপড়া জন্য হুমকি দেওয়া হচ্ছে। রামগতি উপজেলা বিএনপির সধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন বলেন, আমরা নিরপেক্ষ ভোটের জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি। আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, প্রচার-প্রচারণায় বাধাসহ বিভিন্ন অভিযোগ জানিয়ে রিটানিং অফিসারসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি। চর আবদুল্লাহ ইউনিয়নের কয়েকভাগে জলদস্যূরা ঘাঁটি পেতেছে।
এ ব্যাপারে রামগতি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াহেদ বলেন, নির্বাচনে আতংকের কারণ নেই। বিএনপি জনবিচ্ছিন্ন প্রার্থী দিয়েছে, ভোটের মাঠে তাদেতর প্রভাব না থাকায় এখান নানা অভিযোগ তুলছেন।
জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান জানান, নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে তারা প্রস্তুত রয়েছেন। নির্বাচনে পুলিশের পাশাপাশি র্যাব বিজিবি কোষ্টগার্ড ও ম্যাজিষ্ট্রেট মোতায়ন থাকবে। ইতোমধ্যে দূর্গম চর আবদুল্লাহ ইউনিয়নে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, মেঘনা উপকূলীয় রামগতির তিনটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ১১, সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ২৮ ও সাধারণ সদস্য পদে ৮৮ জন প্রার্থী ভোটের মাঠে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।
0Share