সব কিছু
facebook lakshmipur24.com
লক্ষ্মীপুর বৃহস্পতিবার , ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
২ হাজার খামারে ৩০ হাজার ষাঁড়: লকডাউনে বাজার ও দাম নিয়ে দুশ্চিন্তায় লক্ষ্মীপুরের খামারিরা

২ হাজার খামারে ৩০ হাজার ষাঁড়: লকডাউনে বাজার ও দাম নিয়ে দুশ্চিন্তায় লক্ষ্মীপুরের খামারিরা

২ হাজার খামারে ৩০ হাজার ষাঁড়: লকডাউনে বাজার ও দাম নিয়ে দুশ্চিন্তায় লক্ষ্মীপুরের খামারিরা

আসন্ন কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে লক্ষ্মীপুর জেলা জুড়ে ২ হাজার গরু মোটাতাজাকরণ খামারিদের হাতে রয়েছে বিক্রয়যোগ্য ৩০ হাজার ষাঁড়। কিন্ত ঈদ বাজারের আগেই শুরু হওয়া লকডাউনের কারণে গরুর বাজার এবং ভালো দাম নিয়ে দুঃচিন্তায় আছেন এসব খামারিরা। গরু খামারি, ব্যবসায়ী এবং প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জানান, উৎপাদন বৃদ্ধির ধারাবাহিকতায় চলতি বছর লক্ষ্মীপুরে ৩ লাখ ৬৬ হাজার পশু উৎপাদন হওয়ায় জেলার কোরবানির চাহিদা মিটিয়ে বাড়তি পশু জেলার বাইরে পাঠানো যাবে। উৎপাদিত পশুর মধ্যে প্রায় ৩০ হাজারই ষাঁড়। ২ হাজার খামারিদের হাতে রয়েছে সেসব ষাঁড়। আর জেলাজুড়ে গরু উৎপাদন বৃদ্ধি এবং খামারি বৃদ্ধির পেছনে খামার ব্যবস্থাপনায় আধুনিকায়ন ও মাঠ পর্যায়ে লাইভস্টক সার্ভিস প্রোভাইডারদের (এলএসপি) তৎপরতার কথা বলেছেন খামারিরা।

লক্ষ্মীপুর জেলা শহরের বাসিন্দা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম। জেলার সব চেয়ে বড় অর্গানিক পশু খামারের মালিক তিনি। সদর উপজেলার তেয়ারিগঞ্জ ইউনিয়নের টুমচর গ্রামে ৭ একর জায়গা জুড়ে গড়ে তুলেছেন অথৈ এগ্রো কমপ্লেক্স নামে বহুমুখী কৃষি খামার। বর্তমানে তার খামারে বিক্রয়যোগ্য ষাঁড় আছে ১০০টি। যেগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন এক লাখ থেকে পাঁচ লাখ টাকা দামের গরু আছে বলে জানান তিনি। এ বছর কোরবানিতে তিনি দুই কোটি টাকার গরু বিক্রয়ের র্টাগেট নিয়েছেন।

জাহাঙ্গীরের খামারে রয়েছে শাহীওয়াল, ফ্রিজিয়ান, শিংওয়ালা, সিন্দি, হরিয়ানা, রেড চিটাগাং জাতের ষাঁড়। তার খামারে উৎপাদিত গরু শতভাগ বিষমুক্ত খাবারে লালন পালন করেন তিনি। নিজস্ব মেশিনের সাহায্যে স্থানীয়ভাবে তিনি নিজের খামারের পশুর জন্য খাবার উৎপাদন করেন। সেজন্য তার খামারের গরুর মাংস শতভাগ নিরাপদ এবং অর্গানিক। খামারি জাহাঙ্গীর জানিয়েছেন, গত বছর ঢাকার বাজারে তিনি ৫০টি গরু বিক্রয় করেছিলেন। সকল পরীক্ষায় তার খামারের গরু ঢাকার বাজারে নিরাপদ সনদ পেয়েছিল। এবারও তার টার্গেট রয়েছে ঢাকায় গরু বিক্রয় করার। কিন্ত লকডাউনের কারণে তিনি দুঃচিন্তায় রয়েছেন।

অন্যদিকে জেলা জুড়ে অসংখ্য খামারির মধ্যে রামগঞ্জ উপজেলার রাবেয়া বেগম তার খামারে ২০টি ষাঁড় বিক্রয়ের জন্য প্রস্তত করেছেন। কমলনগর উপজেলা তোরাবগঞ্জ ইউনিয়নের মো: ইউছুপ জানান, ঈদকে সামনে রেখে ২৮টি গরু মোটাতাজা করছেন। রায়পুর উপজেলার খামারী রাসেল জারসি এবং পিজিয়ান প্রজাতের ২৭টি ষাঁড় বিক্রয়ের উপযুক্ত করেছেন। এসকল খামারি লকডাউনের কারণে কোরবানির বাজার ও দাম নিয়ে শঙ্কিত আছেন।

মাংস ও দুগ্ধ উৎপাদনকারী খামারি কমলনগরের লরেঞ্চ গ্রামের আলাউদ্দিন জানান, লকডাউন ছাড়াও প্রতি বছর ঈদের আগে ভারতীয় গরু নিয়ে আসে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। সেকারণেও স্থানীয় খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিনি আরো জানান, ভারতীয় গরু হরমোন ইনজেকশনের মাধ্যমে মোটাতাজা করা হয়, যা আমাদের দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

কথা হয় মৌসুমী গরু ব্যবসায়ী সদর উপজেলার জকসিন বাজারের আক্তার এন্টারপ্রাইজের মালিক মোঃ ফারুকের সাথে । তিনি জানান, প্রতি বছর রোযার ঈদের পরপরই তিনি কোরবানির জন্য দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গরু এনে কয়েক দিন লালনপালন করেন। পরে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করেন। এ বছরও প্রায় পাঁচশত গরু তিনি বিক্রয় করবেন বলে আশা করছেন। তবে লকডাউনের কারণে সেটা কতটা বাস্তবায়ন হয় তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে ফারুকের।

স্থানীয়রা জানায়, খামারিদের জন্য দিন-রাত ২৪ ঘন্টায়ই উন্নতবীজ এবং চিকিৎসা সেবা নিয়ে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছে এলএসপি নামে পরিচিত লাইভস্টক সার্ভিস প্রোভাইডরা। সে কারণেও লক্ষ্মীপুরে দ্রুত গরু খামারের সংখ্যা ও গরু উৎপাদন বেড়েছে। গত কয়েক বছর যাবত জেলার চাহিদা মিটিয়ে জেলার বাইরেও গরু বিক্রি হচ্ছে।

এলএসপি এ্যাসোসিয়েশনের লক্ষ্মীপুর জেলা সভাপতি মোঃ আলা উদ্দিন জানান, ‘গরু মোটাতাজাকরণে খামারিদের নিকট বড় সহযোগি এলএসপি। এলএসপিদের তৎপরতার কারণে গত ২/৩ বছরে লক্ষ্মীপুরে হার দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এলএসপিরা খামারিদের নিকট খামারি বন্ধু হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে’।

এদিকে কমলনগর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: আক্তারুজ্জামান জানান, দেশের বিভিন্ন স্থানে অনলাইন গরু বাজার মোটামুটি জনপ্রিয় হলেও লক্ষ্মীপুর জেলায় অনলাইনে এখনো তেমন বেচাবিক্রি হয় না। তবে গত বছর থেকে করোনার মধ্যে অনলাইনে গরু বিক্রয়ের জন্য জেলা ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা ক্রেতা বিক্রেতাদের অনুপ্রাণিত করে আসছেন। পশু বিক্রয়ের জন্য চাষীদের কাছে নিজের ফেসবুক ছাড়া ও জেলা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের ফেসবুক পেইজে পশুর ছবি, ভিডিও, বিবরণ ও দামসহ প্রয়োজনীয় তথ্য লিপিবদ্ধ করে পোস্ট দেয়ার অনুরোধ করেন তিনি।

লক্ষ্মীপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া জানান, জেলার বাণিজ্যিক ও ব্যক্তি পর্যায়ে ২৮ হাজার ৭শ ৮৬ খামারি ও কৃষক  ৩ লাখ ৬৬ হাজার পশু পালন করছেন। যার মধ্যে সরকারি তালিকাভুক্ত ১৫শ ৩৯টিসহ জেলায় ২ হাজার মোটাতাজাকরণ খামার রয়েছে। এ খামারগুলোতে কোরবানি ঈদে বিক্রয়যোগ্য ষাঁড় রয়েছে প্রায় ৩০ হাজার। তিনি আরো জানান, জেলায় গত বছর ২৬ হাজার ষাঁড় কোরবানি হয়েছিল। সে হিসেবে চলতি বছর এ জেলা থেকে প্রায় ৪ হাজার ষাঁড় দেশের অন্য জেলায় বিক্রি করা সম্ভব হবে। ষাঁড় ছাড়াও অন্যান্য বহু পশু জেলার বাইরে বিক্রয় করা যাবে।

স্থানীয়ভাবে জানা যায়, লক্ষ্মীপুর জেলায় ২৪টি নিয়মিত গরুর হাট রয়েছে। এই হাটের বাইরেও ঈদকে কেন্দ্র করে আরো শতাধিক স্থানে মৌসুমী গরুর হাট বসে। এইসব হাটে স্থানীয়ভাবে যেমন কোরবানির পশু কেনাবেচা হয়, তেমনি অন্য জেলার জন্যও পশু কেনাবেচা হয়।

সংবাদটি এর আগে ইংরেজী পত্রিকা দ্য বিজনেস স্ট্যার্ন্ডাড এ প্রকাশিত হয়েছিল।

কৃষি | অর্থনীতি আরও সংবাদ

ডাকাতিয়া নদ ও খালে পানি নেই | বোরো নিয়ে চিন্তায় চাঁদপুর ও লক্ষ্মীপুরের কৃষকরা

জাটকা নিধন বন্ধে মেঘনায় নৌ র‌্যালি

রামগতিতে বোট নিবন্ধনের লক্ষ্যে জেলেদের নিয়ে কর্মশালা

অবৈধ জাল অপসারণে রামগতিতে বিশেষ অভিযান

রামগতিতে অবৈধ জাল পুড়িয়ে বৈধ জাল বিতরণ

রামগতিতে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ

লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোর বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ে অনলাইন নিউজপোর্টাল প্রকাশনার নিবন্ধনের জন্য আবেদনকৃত, তারিখ: 9/12/2015  
 All Rights Reserved : Lakshmipur24 ©2012- 2024
Editor & Publisher: Sana Ullah Sanu
Ratan Plaza(3rd Floor), ChakBazar, Lakshmipur, Bangladesh.
Ph:+8801794822222, WhatsApp , email: news@lakshmipur24.com