লক্ষ্মীপুর জেলার কৃতি সন্তান জাতীয়তাবাদি স্বেচ্ছাসেবকদলের সভাপতি সফিউল বারী বাবুর দ্বিতীয় জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাপন করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে লক্ষ্মীপুরে রামগতির আবদুল হাদি কলেজ মাঠে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
জানায় বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ছাড়াও স্থানীয় সর্বস্তরের কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেয়। কলেজ মাঠে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন দলের হাজার হাজার নেতাকর্মীসহ জানাজায় অংশ নেয়া প্রায় সকলে।
এদিকে খুব ভোরে বাবুর মৃত্যুর সংবাদ প্রকাশ হওয়ার সাথে সাথে বিএনপির পাশাপাশি লক্ষ্মীপুর জেলার আওয়ামীলীগ, যুবলীগ এবং ছাত্রলীগের শত শত নেতাকর্মীও ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে বাবুর প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছে। যেটা বিগত সময়ে লক্ষ্মীপুরের রাজনীতিতে ছিল বিরল ঘটনা।
কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী তার ফেসবুকে লিখেছেন …
জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু’র মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছি এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।
হয়তো রাজনৈতিক দল, আদর্শগত ভিন্নতা ছিল কিন্তু আমরা একই সংসদীয় এলাকার (লক্ষীপুর-৪) উন্নয়নে, জনগণের কল্যাণে নিবেদিত ছিলাম।এলাকার নানান সামাজিক অনুষ্ঠানে বাবুর সাথে দেখা হত। আমার প্রতি তার বেশ শ্রদ্ধা ছিল, আমিও তাকে স্নেহ করতাম। আজ সেসব স্মৃতি হয়ে আছে।
তার আত্মার শান্তি কামনা করছি।
এছাড়াও তার মৃত্যুতে স্থানীয় সংসদ সদস্য বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর (অব.) আব্দুল মান্নান, জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, সাবেক সাংসদ মো. মোশারেফ হোসেন, আশ্রাফ উদ্দিন নিজান, ফরিদুন্নাহার লাইলী, আব্দুল্লাহ আল-মামুন, রামগতি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শরাফ উদ্দিন আজাদ সোহেল, কমলনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানমেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বাপ্পী, রামগতি প্রেসক্লাব ও কমলনগর প্রেসক্লাবের সভাপতি সাজ্জাদুর রহমান শোক প্রকাশ করেছেন।
এদিকে সকাল ১০টার দিকে কেন্দ্রীয় বিএনপির কার্যালয়ের সামনে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেও বিএনপির মহাসচিবসহ দলীয় নেতাকর্মীরা অঝোরে কাঁদলেন।
স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শফিউল বারী বাবু মঙ্গলবার (২৮ জুলাই) ভোরে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান(ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়ে ও ভাইসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শফিউল বারী বাবুর জন্ম রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউনিয়নের দক্ষিণ আলগী গ্রামে। বাবা বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হালিম। স্থানীয় গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়া শেষে সেবাগ্রাম ফজলুর রহমান উচ্চবিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণি পড়া শেষ করে ঢাকাতে চলে যান তিনি। সেখানে একটি বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাশের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে লেখা-পড়া শেষ করেন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাথে সম্পৃক্ত হন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ছিলেন। পরবর্তীতে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক হন। পরে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি থাকা অবস্থায় আজ মৃত্যু বরণ করেন।
স্থানীয়রা জানায়, রাজনীতি করলেও তিনি দলমত নির্বিশেষে সবার সাথে সুসর্ম্পক রেখে ছিলেন। বিশেষ করে লক্ষ্মীপুর জেলার যে কোন মানুষের বিপদ আপদে দ্রুত ছুটে যেতেন।
0Share