লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে আইরিন আক্তার (১৮) নামের এক কলেজ ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার দুপুরে ইছাপুর ইউনিয়নের নারায়নপুর গ্রামের মিঝি বাড়িতে এঘটনা ঘটে। পুলিশ ওই ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বিকালে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। পরিবার বলছে, আত্মহত্যা। তবে আইরিনের স্বামীর দাবি, এটি পরিকল্পিত হত্যা।
আইরিন রামগঞ্জ মডেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অনার্স (সম্মান) ২য় বর্ষের ছাত্রী ও স্থানীয় নুর হোসেনের মেয়ে ছিলো।
স্থানীয়রা জানায়, পরিবারের অসম্মতিতে আইরিন ভোলাকোট ইউনিয়নের নোয়াপাড়া গ্রামের জাকির পাটোয়ারীর ছেলে ওমর ফারুক হিমুর সাথে গেল বছর লক্ষ্মীপুর জজ আদালতে ৩ লক্ষ টাকা দেন মোহরানার মাধ্যমে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। এরপর তারা পালিয়ে ঢাকায় গিয়ে সংসার জীবন শুরু করে। বিয়ের ১২দিন পর আইরিনের বড় বোন শারমিন ও তার মা জেসমিন আক্তার কৌশলে তাদের দুজনের বিয়ে মেনে নেয়ার আশ্বাসে আইরিনকে বাড়িতে নিয়ে আসে। এরপর বোন শারমিন ও মা জেসমিন ওই ছাত্রীকে বেদম মারধর করে প্রতিদিন নির্যাতন চালাতে থাকে। পরে স্থানীয় বাবু ও কামাল দুই মাতাব্বরের সহযোগীতা নিয়ে আইরিনকে জোরপূর্বক গত ২৬ জানুয়ারী চাঁদপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে ওমর ফারুক হিমুকে তালাকনামা প্রদান করে। তালাকের পরেও আইরিন তার স্বামী হিমুর কাছে আবারও চলে যাওয়ার চেষ্টা করলে বড়বোন শারমিন ও তার মা জেসমিন আক্তার আইরিনের মাথার চুল কেটে দেয়।
নিহত আইরিনের স্বামী ওমর ফারুক হিমু জানান, বছর তিনেক আগে আইরিনের সাথে পরিচয়ের পর থেকে তাদের সম্পর্ক বন্ধুত্বে পরিণত হয়। একপর্যায়ে সেটা বিয়ে পর্যন্ত গড়ায়। কিন্তু আইরিনরে পরিবার সেটা মেনে নিতে পারেননি। আইরিনকে তার পরিবার পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে বলে দাবি করেন তিনি।
আইরিনের মা জেসমিন আক্তার জানান, গত ২ মাস থেকে আইরিনের মাথায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। বহু কবিরাজের কাছে নিয়েও কোন ফল পাননি তারা। আইরিন কাউকে বিয়ে করেনি বলে দাবি করেন নিহতের মা। রামগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জানান, নিহত কলেজ ছাত্রীর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এঘটনায় থানায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে।
0Share