আতোয়ার রহমান মনির: মাদকের আগ্রাসনসহ লক্ষ্মীপুরে নানা কারণে হত্যার ঘটনা ক্রমাগত বেড়েই চলছে। পুলিশের তথ্যমতে, চলতি বছরে ৬ মাসে এই জেলায় ১৪টি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। পুলিশের হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরেই জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৬ মাসে এই জেলায় হত্যাকান্ডের ঘটনায় মামলা হয়েছে ১৪টি। যার মধ্যে সদর থানায় ৪টি, রামগঞ্জে ২টি, রামগতিতে ৩টি, কমলনগরে ১টি, চন্দ্রগঞ্জে ৪টিসহ ১৪টি হত্যা মামলা দায়ের হয়। গত ৬ মাসে একের পর এক হত্যার ঘটনা তদন্তে নেই তেমন কোনো অগ্রগতি পরিলক্ষিত হয়নি বলে ভুক্তভোগিদের অভিযোগ। এতে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা বেড়েছে। তবে পুলিশের দাবি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তাদেরনিয়ন্ত্রণে আছে। হত্যা মামলার তদন্তে আশানুরূপ অগ্রগতির কথাও জানিয়েছেন তারা।
অন্যদিকে মাদকের আগ্রাসনসহ অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা থামবে কি-না? তা জানা নেই এই অ লের সাধারণ মানুষের। দ্রুত হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করে খুনিদের গ্রেফতারের দাবি জানান নিহতের স্বজন।
‘লাশ নয়, শান্তি চাই’- এমন স্লোগানে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি. খুন, ডাকাতি বন্ধ ও সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবিতে সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের সিরাজগঞ্জ বাজারে সিরাজগঞ্জ বাজার কমিটির উদ্যোগে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে এলাকাবাসী। নিহতের স্বজনরা জানান, হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেও ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত অপরাধীরা ধরা না পড়া ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার না হওয়ায় প্রতিদিনই থাকতে হচ্ছে আতঙ্কে।
নিহতের স্বজন ও স্থানীয়দের থেকে জানা যায়, চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হয়েছেন সাংবাদিক শাহ মনির পলাশ, ২১ জানুয়ারি রাতে সদর উপজেলার টুমচর গ্রামের শিশু মামুন, ৯ জুন একই উপজেলার শাকচর এলাকায় কিশোরী আসমা আক্তারকে ধর্ষণ শেষে সন্ত্রাসীরা হত্যা করে, ৮ জুলাই সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের বাঞ্চানগর গ্রামে জমিসংক্রান্ত পারিবারিক বিরোধের জের ধরে যুবক হাফিজ উল্লাহকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ১৯ ফেব্রুয়ারি রাতে সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামে ভাতিজার চুরিকাঘাতে চাচা হারুনুর রশিদ নিহত,২৭ ফেব্রুয়ারি রামগঞ্জে তৃতীয় শ্রেণির মাদ্রাসাছাত্রী নিশু নুশরাত জাহানকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। ১৭ জুন সদর উপজেলার কুশাখালীর নলডগী এলাকায় পাওনা টাকাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত হয়েছেন যুবক আবু ছায়েদ মাঝি। ১৮ জুন যৌতুকের দাবিতে নিহত হন কামরুন্নাহার নামের এক গৃহবধূ, ৯ জুলাই সদর উপজেলার কুশাখালীর কালিবৃত্তি এলাকায় গৃহবধূ রোজিনা আক্তারকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। ১২ জুলাই সদর উপজেলার মান্দারী মিয়াপুর এলাকার ৪নং ওয়ার্ডে রাতে এক কিশোরীকে বাড়ি থেকে তুলে এনে গণধর্ষণ শেষে অচেতন অবস্থায় রেখে পালায় কয়েক দুর্বৃত্ত। ২৯ জানুয়ারি লক্ষ্মীপুর পৌর বাস টার্মিনাল এলাকার ডোবা থেকে অজ্ঞাত একজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) রিয়াজুল কবির জানান,মাদক কারবারিসহ সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের অভিযান চলমান। অপরাধী শনাক্ত ও গ্রেফতারে পুলিশ তৎপর। কয়েকটি ঘটনায় অনেকেই ইতিমধ্যে গ্রেফতার হয়েছে এবং বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। সন্ত্রাসী ধরতে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানান তিনি।
0Share