সব কিছু
facebook lakshmipur24.com
লক্ষ্মীপুর শুক্রবার , ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
লক্ষ্মীপুরে মেয়ের জামাইয়ের অমানসিক নির্যাতনের শিকার শ্বশুর শ্বাশড়ীসহ মেয়ে

লক্ষ্মীপুরে মেয়ের জামাইয়ের অমানসিক নির্যাতনের শিকার শ্বশুর শ্বাশড়ীসহ মেয়ে

লক্ষ্মীপুরে মেয়ের জামাইয়ের অমানসিক নির্যাতনের শিকার শ্বশুর শ্বাশড়ীসহ মেয়ে

লক্ষ্মীপুরের চরশাহীতে এক গৃহবধূকে নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে তার যৌতুক লোভী স্বামীর হাতে। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গত কয়েক মাস মাহমুদা আক্তার মুন্নি (২২) নামে ওই গৃহবধূ তার বাবার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। সেখানে এসেও তাকে নির্যাতন করেছে পাষন্ড স্বামী মো. মনির হোসেন। এছাড়া মুন্নির পুরো পরিবার এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছে। তাদের ঘরে তিন বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে, তার প্রতি কোন দরদ দেখাচ্ছে না মনির হোসেন। এছাড়া মুন্নির ছবি ফেজবুকে পোস্ট করে তার সম্মানহানির অভিযোগ করারও অভিযোগ উঠেছে।

গৃহবধূ মুন্নি বলেন, আমি আমার ছেলে মিনহাজ হোসেনকে নিয়ে বাঁচতে চাই। আমার পরিবারের নিরাপত্তা চাই। স্বামীর নির্যাতন আর সহ্য করতে পারছি না। খালি টাকা চায়, আর কথায় কথায় মারধর করে। আমার অবুঝ শিশুটাও তার বাবার কাছে নিরাপদ নয়। এ অত্যাচার থেকে আমি মুক্তি চাই।

মাহমুদা আক্তার মুন্নি জেলার সদর উপজেলার চরশাহী ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের আহম্মদ আলী পাটওয়ারী বাড়ির নুর নবীর মেয়ে। ২০১৬ সালের ২১ মার্চ একই ইউনিয়নের দাসেরহাট বাজারের ওয়ার্কসপ মেস্তুরী মনির হোসেনকে প্রেমের সম্পর্কে বিয়ে করে মুন্নি। মনির গোবিন্দপুর গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে।

মুন্নি জানায়, নিজেরা সম্পর্ক তৈরী করে বিয়ে করারা পর দুই পরিবার বিষয়টি মেনে নেয়। বিয়ের এক বছর পর্যন্ত মুন্নি তার বাবার বাড়িতে অবস্থান নেয়। তখন লাখ টাকা যৌতুক দিয়ে স্বামী মনির হোসেনকে সৌদি আরবে পাঠায়। চার মাস পর সেখান থেকে ফিরে এসে মনির বেপরোয়া হয়ে উঠে। বার বার সে তার বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে তাকে দিতে বলে। কিন্তু অভাবের সংসারে যৌতুকের টাকার যোগান দিতে না পারায় স্বামীর নির্যাতন শুরু হয়। শ্বশুর বাড়ির লোকজনও আমাকে কথা শোনাতো। নির্যাতনের পাশাপাশি মনির অন্য নারীর সাথেও অবৈধ সম্পর্ক জড়ান বলে জানায় মুন্নি।

গত ১০ মার্চ মুন্নিকে ব্যাপক মারধর করে মনির। এরপর সে বাপের বাড়িতে চলে আসে। গত ১৬ মার্চ বিকেলে মনির শ্বশুর বাড়ি এসে শ্বশুর-শাশুড়ির সাথে অসংলগ্ন আচরণ শুরু করে। এসময় অনেকটা বেসামাল ছিলো সে। এক পর্যায়ে ঘরের হামলা চালিয়ে সকল আসবাবপত্র ভাংচুর এবং টিনের বেড়া কেটে ফেলে। এ সময় বাড়ির লোকজন তাকে থামানোর চেষ্টা করে। হামলার চালানোর সময় তিনি মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হন। এক পর্যায়ে দলবল নিয়ে এসে ঘরে হামলা চালায় এবং শ্বশুর-শাশুড়িকে মারধর করে মনির।

মুন্নি বলেন, আমার স্বামীর কাছে আমার আত্ম সন্মানের কোন মূল্য নেই। সে আমার ছবি ব্যবহার করে আমার নামে একটি ফেজবুক আইডি খুলে আমার নাম ও ছবি পোস্ট দিয়ে বিভিন্ন কুরুচিরপূর্ণ লেখা দিচ্ছে। এতে আমাকে বিভ্রান্তকর অবস্থায় পড়তে হচ্ছে। একজন আদর্শ স্বামীর পক্ষে তার স্ত্রীকে নিয়ে এমন বাজে পোস্ট দিতে পারে না।

বাড়ির লোকজন জানায়, মনির সব সময় মুন্নির উপর নির্যাতন করতো। শিশু ছেলেটার প্রতিও মনিরের কোন মায়া দরদ নেই। তার কোন খোঁজ রাখতো না মনির। পুরোপুরি বেপরোয়া আচরণ করতো। ১৬ মার্চ সে নিজে হামলা চালিয়ে উল্টো তার শ্বশুর নুর নবী এবং শাশুড়ি, স্ত্রী, শ্যালক ও চাচা শ্বশুরদের আসামী করে ১০ জনের বিরুদ্ধে চন্দ্রগঞ্জ থানায় হয়রানিমূলক একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় সাত আসামী আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন এবং একজন কারাগারে আছে।

মুন্নির পিতা নুর নবী বলেন, আমার মেয়েকে সবসময় মনির ও তার বাড়ির লোকজন যৌতুকের জন্য নির্যাতন করতো। এ পর্যন্ত দুই লাখ টাকা দিয়েছি। এখন আরো তিন লাখ টাকা দিতাম। কোথায় পাবো এতো টাকা। টাকা দিতে পারলে সে মার মেয়েকে রাখবে, না হয় অন্যত্র বিয়ে করবে বলে হুমকি দেয়।

তিনি বলেন, জামাইয়ের যৌতুকের আবদার মিটাতে না পেরে হামলা এবং মামলার শিকার হয়েছি। এখন পুলিশি গ্রেফতার এবং জামাতা মনিরের লোকজনের হাতে হামলার ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। আমি এলাকায় চা দোকানের ব্যবসা করি। কয়কদিন থেকে সেটি বন্ধ। তাই অভাব অনটনে সংসার চলতেছে না।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, মনির হাত থেকে আমি আমার মেয়ের জীবন ভিক্ষা চাই। আমাদের পরিবারের নিরাপত্তা চাই। আমরা স্বাভাবিকভাবে একটু বাঁচতে চাই। কিন্তু আমাদের জীবনটাকে নরক বানিয়ে দিয়েছে মনির। প্রয়োজনে আমার মেয়েকে আমি ও নাতিকে বাড়িতে রেখে দেব। তারপরেও মনিরের অত্যাচার থেকে সে যেন বাঁচতে পারে। আমি প্রশাসনের কাছে সে দাবি জানাই।

অভিযোগ অস্বীকার করে মনির হোসেন বলেন, আমার স্ত্রী উল্টা পাল্টা চলাচল করে। তাই তাকে সাবধান করায় সে এখন আমার নামে বিভিন্ন অভিযোগ তুলেছে। আমি গত ১৬ মার্চ তাদের বাড়ির সামনে দিয়ে যাবার সময় আমাকে ধরে মারধর করেছে। এতে আমি গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হই। রাগের বসে তাদের ঘরের টেবিল ভাংচুর করি। এ ঘটনায় আমি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছি।

এ ব্যাপারে চন্দ্রগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) দুলাল কিশোর মজুমদার বলেন, মনির একটি মামলা করেছে। ওই মামলায় একজন কারাগারে আছে। পুরো বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অপরাধ | আইন আরও সংবাদ

রায়পুরে কলেজছাত্রকে অপহৃরনের ঘটনায় দু’জন আটক

মেঘনায় ৩০ জেলের জরিমানা

মেঘনা নদীতে পৃথক দুটি ডাকাতি মামলার আসামী মঞ্জু গ্রেপ্তার

লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল কর্মীর বিরুদ্ধে রোগীকে মারধরের অভিযোগ

লক্ষ্মীপুরে বিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে চুরি হওয়া শিশু ওহিকে পাওয়া গেছে সড়কের পাশে

রামগতিতে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো অবৈধ ৩ ইটভাটা

লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোর বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ে অনলাইন নিউজপোর্টাল প্রকাশনার নিবন্ধনের জন্য আবেদনকৃত, তারিখ: 9/12/2015  
 All Rights Reserved : Lakshmipur24 ©2012- 2024
Editor & Publisher: Sana Ullah Sanu
Ratan Plaza(3rd Floor), ChakBazar, Lakshmipur, Bangladesh.
Ph:+8801794822222, WhatsApp , email: news@lakshmipur24.com