মেডিক্যাল সনদ জালিয়াতি করে সমাজ সেবা অধিদপ্তর থেকে অনুদান প্রাপ্তির জন্য আবেদন করতে গিয়ে আটক হয়েছেন মো: নুর হোসেন (৩৫) নামে এক ব্যক্তি। পরে তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ১৫ দিনের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। সোমবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। নুর হোসেন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের পাঁচপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি এবং একই এলাকার রুহুল আমিনের পুত্র।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, কিডনী, লিভার, হৃদরোগ, ষ্টোকসহ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্তদের সরকারী ভাবে জেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে অনুদান দিয়ে থাকে। সেই লক্ষ্যে অনুদানের জন্য নুর হোসেন তার স্ত্রী হাছিনা বেগম ও আপন বড় ভাই মো. মনজুর নামে পৃথক দুটি আবেদনের ফরমে সোমবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা সিভিল সার্জন ডা: আহাম্মদ কবিরের কাছে স্বাক্ষরের জন্য যান।
সিভিল সার্জন ওই কাগজপত্র দেখে সন্দেহ হয়। নুর হোসেন যে ডায়াগনষ্টিক সেন্টার থেকে মেডিক্যাল রিপোর্ট এনেছেন, সেখানে যোগাযোগ করেন সিভিল সার্জন। এ সময় তিনি জানতে পারেন মেডিক্যাল রিপোর্টগুলো অন্য ব্যক্তির নামে। সিভিল সার্জন বিষয়টি জেলা প্রশাসক ও জেলা সমাজ সেবার উপ-পরিচালককে অবহিত করে। পরে জাল জালিয়াতি প্রমাণ পাওয়ায় নুর হোসেনকে আটক করে রাখা হয়।
খবর পেয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: ইমরান হোসেন ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঘটনাস্থলে যান। অপরাধ প্রমানীত হওয়ায় নুর হোসেনকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) অমিত রায় ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ১৫ দিনের কারাদন্ড প্রদান করেন।
জেলা সমাজ সেবা উপ-পরিচালক নুরুল ইসলাম পাটওয়ারী জানান, কিডনী, লিভার, হৃদরোগ, ষ্টোকসহ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্তদের এককালিন ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত অনুদান দিয়ে থাকে। তবে কাগজপত্র সঠিক থাকলে ও জেলা সিভিল সার্জনের স্বাক্ষরের মাধ্যমে আবেদন যাচাই-বাচাই শেষে জেলা প্রশাসকের অনুমোদনক্রমে অনুদানের চেক দেওয়া হয়। মেডিক্যাল কাগজপত্র জাল করে নুর হোসেন তার ভাই ও স্ত্রীর নামে আবেদন জমা দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে জেলা সিভিল সার্জন অফিসে যায়। পরে কাগজপত্র জাল বলে প্রমানিত হয়। জেলা সিভিল সার্জন ডা: আহাম্মদ কবির জানান, জনৈক শাহাব উদ্দিনের মেডিক্যাল রিপোর্টে নাম পাল্টিয়ে হাছিনা বেগম ও মো: মনজু নাম বসিয়ে আমার কাছে স্বাক্ষরের জন্য আসলে আমি সেগুলো যাচাই বাছাই করে জালিয়াতির প্রমান পাই। পরে জেলা প্রশাসক মহোদয়কে অবহিত করলে তিনি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পাঠান।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) অমিত রায় সাংবাদিকদের জানান. দন্ডবিধি ১৮৬০ এর ১৮৮ ধারায় অপরাধ প্রমানিত হওয়ায় নুর হোসেনকে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়। এদিকে পুলিশ হেফাজতে থাকায় অবস্থায় নুর হোসেন সাংবাদিকদের জানান, তার স্ত্রী অসুস্থ এবং তার ভাই গাছ থেকে পড়ে গুরুতর আহত হয়ে আছে। তাদের চিকিৎসার অর্থের জন্য তিনি মেডিক্যাল রিপোর্টগুলো নকল করে অনুদানের জন্য আবেদন করেছেন। সে ভূলের জন্য তিনি অনুতপ্ত।
241Share