লক্ষ্মীপুর জেলার ঢাকা-রায়পুর আঞ্চলি মহাসড়কে ৪০ কিলোমিটার রাস্তার দু’পাশে বন বিভাগের শতাধিক গাছ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। দীর্ঘ কয়েক বছর গাছের ডাল কাটা ও পুরাতন গাছ কেটে অপসারণ না করায় গাছের নিচ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলছে হাজার হাজার যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী গাড়ি। লক্ষ্মীপুর সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর ও জেলা বন বিভাগের সমন্বয়হীনতার কারণেই এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে বুধবার সকালে রায়পুর, দালাল বাজার এলাকার লোকজন জানান, বেগমগঞ্জ চৌরাস্তা থেকে লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর এলাকা পর্যন্ত ৬০ কিলোমিটার সড়ক। এই সড়কটির যার আইডি নং আর-১৪০ এর মধ্যে চন্দ্রগঞ্জ থেকে রায়পুর বর্ডার বাজার পর্যন্ত ৪০ কিলোমিটার লক্ষ্মীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতাধীন। এই সড়কটির দুইপাশে বন বিভাগের প্রায় শতাধিক গাছ মোটা হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ফলে যেকোন সময় এই মোটা গাছগুলো সড়কের উপর পড়ে প্রাণহানী হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, এ আঞ্চলিক মহাসড়কের দুই পাশে ছোট বড় গাছগুলো অতিবর্ষণে অনবরত পানি পড়ে পাকা সড়কের বিটুনি ও কংকিট নষ্ট করে ফেলে। এতে করে সড়কের ওপর বিভিন্ন স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়। উক্ত গর্তগুলো বৃষ্টি হলে পানি জমে যায়।
ফলে দুর্ভোগে পড়ে সড়কের উপর চলাচল করা গাড়ির যাত্রীরা। স্থানীয়দের অভিমত সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং বন বিভাগের যৌথ উদ্যোগে রাস্তার দুইপাশে মোটা এবং ঝুঁকিপূর্ণ গাছগুলো অপসারণ করে এবং ছোট বড় গাছগুলোর ডাল পালা কেটে দিলে রাস্তার উপর সূর্যের আলো পড়বে। আলো পড়লে রাস্তা শুকিয়ে টেকসই হবে। কিন্তু ডাল পালা থাকায় বৃষ্টির পানিতে অনেক সময় সড়কে পানি জমে যায়। ফলে গর্ত সৃষ্টি হয় যার কারণে যানজট হয়।
গত ৩ সেপ্টেম্বর রাতে ঢাকা-রায়পুরের সড়কে রায়পুর সরকারি হাসপাতাল সংলগ্ন জনসেবা হাসপাতালের সামনে একটি বড় গাছ উপড়ে পড়ে। চার দিন পর গাছটি সড়ক থেকে সরানো হয়। এ ধরনের অনেক গাছ এখনো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে আঞ্চলিক সড়কের দু’পাশে।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে সড়ক ও জনপথ বিভাগের এক ঠিকাদার জানান, রাস্তাটি সংস্কারের মেরামত করার পরও রাস্তার দুইপাশে গাছ পালা থাকার কারণে গাছের পানি পড়ে রাস্তার বিটুনি এবং কংকিট নষ্ট হয়ে যায়। রাস্তায় ক্ষতিগ্রস্ত হলে অনেক সময় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে দায়ী করেন অনেকে। অথচ গাছগুলো অপসরণ ও ডালপালা কেটে দিলে রাস্তাটি দীর্ঘদিন পর্যন্ত টেকসই থাকবে। রাস্তার পাশের গাছগুলো অতিদ্রুত অপসারণ করা প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে লক্ষ্মীপুর বন বিভাগের ফরেস্টার নুরে আলম হানিফ জানান, কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ইতিমধ্যেই লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের দু’পাশের ঝুঁকিপূর্ণ গাছগুলো অপসারণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বন বিভাগের নোয়াখালী আঞ্চলিক অফিস থেকে টেন্ডারের মাধ্যমে গাছগুলো অপসারণ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
লক্ষ্মীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আবদুর রহিম বলেন, চন্দ্রগঞ্জ থেকে রায়পুর বর্ডার বাজার পর্যন্ত ৪০ কিলোমিটার সড়কের পাশে পুরাতন এবং ঝুঁকিপূর্ণ গাছগুলো অপসারণের জন্য ইতিমধ্যেই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং বন বিভাগ যৌথ উদ্যোগে এই অপসারণের কাজটি করবে।
লক্ষ্মীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলামের সাথে এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
0Share