সব কিছু
facebook lakshmipur24.com
লক্ষ্মীপুর শুক্রবার , ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
লক্ষ্মীপুরে নিজ ছেলের হাতে যেভাবে নৃশংস ভাবে খুন হন “মা”

লক্ষ্মীপুরে নিজ ছেলের হাতে যেভাবে নৃশংস ভাবে খুন হন “মা”

লক্ষ্মীপুরে নিজ ছেলের হাতে যেভাবে নৃশংস ভাবে খুন হন “মা”

নিজস্ব প্রতিবেদক, লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোরঃ লক্ষ্মীপুরে কমলনগর উপজেলার চরমার্টিন এলাকায় মা খায়রুন নেছাকে হত্যার দায়ে ১২ বছর পর ছেলে হারুন অর রশিদকে (৪০) মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (১১ জুলাই) দুপুরে অতিরিক্ত লক্ষ্মীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. সাইদুর রহমান গাজী এ রায় দেন। হারুন চরমার্টিন গ্রামের মৃত শাহে আলমের ছেলে।

নিজের আদরের সন্তানের হাতে  ১২ বছর আগে নৃশংস  ভাবে খুন হন  মা খায়রুন নেছা। তখন ঘটনাটি এলাকায় বেশ আড়োলন তুলেছিল। সময়ের প্রেক্ষিতে তা যখন অনেকেই ভুলে যেতে বসেছে তখনই আদালতের রায়ে ঘটনাটি আবার এলাকায় আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে এসেছে।লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোর সে ঘটনাটি পাঠকদের কে জানানোর জন্য সর্ব কনিষ্ঠ নিজস্ব প্রতিবেদক কে ওই এলাকায় পাঠিয়ে পুরো ঘটনাটি তুলে এনেছে। মাঠের সে ঘটনা টি পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলোঃ

২০০৫ সালের ১৭ জুলাই রবিবার। ইতিহাসের পাতায় ঘটেছে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। আদরের ছেলের হাতে মা খুন। এ কেমন ঘটনা? এমন নৃশংস ঘটনা যখন মানুষ সত্যিকারভাবে জানতে পারে তখন মা-বাবারা খুবই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।

 

 

 

 

 

 

 

 

পুরো ঘটনার বিবরণঃ ছেলে হারুন অর রশিদ পড়ছিলো ভোলার একটি মাদরাসায়। সেখানে পড়া অবস্থায় সাংসারিক অভাব অনটনে তার পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর হারুন এলাকায় ফিরে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে নারিকেল গাছের আগাছা পরিষ্কার (গাচি) করে আয় রোজগার করতোে এর ফাকে সে বিয়ে করে একটি ছেলে সন্তানের বাপও সে। পাশাপাশি চর মার্টিন গ্রামের বায়তুস সালাম (জল্লাদ) জামে মসজিদে সেচ্ছাসেবি কাজ করতো হারুন।

মাঝে মধ্যে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মায়ের সাথে তার মান অভিমান হয়।মা তখন সামাজিকভাবে গ্রামের সালিসদারদের নিকট বিচার দায়ের করে। এরপর গ্রাম্য সালিসের বিচারে হারুনের সাথে মায়ের মিল করে দেয়া হয়। কিন্তু তার মা কেন গ্রাম্য শালিসে বিচার ডেকেছিল এ ঘটনাটিই মায়ের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়।মায়ের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে হারুন। পরে পরিবারে কিছু হলেই মায়ের রক্ত দিয়ে গোসল করবে বলে হুমকি দেয়।

ঘটনার দিন বাড়িতে পরিবারের সদস্যদের সংখ্যা ছিলো কম।সে সুযোগ কাজে লাগায় হারুন।হারুন জানে তার মা ভোর রাতে তাহাজ্জুত নামাজ পড়ার জন্য ঘুম থেকে জাগ্রত হয়ে পুকুরে অজু করে। তখন হারুন একেবারে ঘর সংলগ্ন নারিকেল গাছে উঠে সারা রাত বসে থাকে। ভোররাতে মা যখন ঘুম থেকে উঠে অজু করার উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হয়, তখনই হারুন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নারিকেল গাছ থেকে নেমে কুপিয়ে নিশৃঃস ভাবে তার মাকে হত্যা করে। পরে মায়ের ক্ষতবিক্ষত লাশ বসতঘর থেকে দূরে বাগানে ভিতর টয়লেটে গুম করে রাখে।এখানেও শেষ নয় মাকে হত্যা করে সে মায়ের রক্ত পলিথিনে সংগ্রহ করে ওই রক্ত গায়ে মেখে  পালিয়ে যায়। পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর গ্রামবাসির সামনে প্রকাশ্যে নিজের জবানবন্দিতে এসব জানায় হারুন।ঐ সময়ের গ্রামের শিশুদের মনে এখনো ঘটনাটি দাগ কেটে আছে।

পরদিন সকালে মাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা, হারুন কে ও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। খোঁজা-খুঁজির পর টয়লেটের সামনে কাস্তের খোঁজ পায় গ্রামবাসিরা।এরপর মায়ের মৃত দেহ। খবর পেয়ে সাবেক রামগতি থানা পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। মাকে হত্যার পর বাড়িরে পাশের এক প্রতিবেশীর পুকুরে মাছ ধরা অবস্থায় পুলিশ হারুন কে গ্রেফতার করে।পরে মাকে হত্যার দায়ে তার ছোট বোন মিনারা বাদি হয়ে হারুনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।

এ দীর্ঘ ১২টি বছর সে জেলা কারাগার ও কুমিল্লা কারাগারে ছিলো। লক্ষ্মীপুর জেলা কারাগারে থাকাবস্থায় সে পাগলের মতো লোহার সঙ্গে নিজের মাথায় বারবার আঘাত করার কারণে তাকে কারা কর্তৃপক্ষ তাকে কুমিল্লায় প্রেরণ করে।

অবশেষে মঙ্গলবার (১১ জুলাই) দুপুরে অতিরিক্ত লক্ষ্মীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. সাইদুর রহমান গাজী মাকে হত্যার দায়ে হারুনের মৃত্যুদন্ড ঘোষণা দেন। রায়ের খবর সংবাদ মাধ্যম হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ি পড়লে অনেকেই তাকে প্রকাশ্যে ফাঁসি দেয়া হোক এমন দাবি তোলে।

অন্যদিকে তাকে কারাগারে দেখা কয়েকজন কারাভোগীরা দাবি করে হারুণ পাগল হয়ে গেছে । এদের মধ্যে তার গ্রামের কারাভোগী মোঃ শরীফুল ইসলাম লক্ষ্মীপেুরটোয়েন্টিফোর কে বলেন, “কখনো সে ভালো, আবার কখনো তাকে মানসিক রোগী মনে হতো। তবে কারাগারে থাকাবস্থায়  সে পুরো কোরআন শরিফ মুখস্ত করে। বলে জানান তার সাথে কারাভোগকারি একজন।

এদিকে লক্ষ্মীপুর কারাগারের জেলার লক্ষ্মীপেুরটোয়েন্টিফোর কে বলেন মোঃ শরীফুল ইসলাম বলেন, আমরা আপিল করেই দ্রুত তাকে কুমিল্লা কারাগারে পাঠিয়ে দিবো।

ব্যক্তিগত জীবনে হারুনরা দু’ভাই ও চার বোন।সে বিবাহিত তার একমাত্র ১৫ বয়সি ছেলে ইট-ভাটায় কাজ করে সে মাকে নিয়ে থাকে।

গ্রামবাসিরা জানায়  যে হারুনের জন্ম জুলাই মাসে, সে নিজের মাকে খুন করে জুলাই মাসে এবং তার মৃত্যুদন্ডের রায়ও আসে জুলাই মাসে।

 

 

লক্ষ্মীপুর নিউজ আরও সংবাদ

রামগতিতে দিনব্যাপী প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত

সাংবাদিক জিয়া চৌধুরীর বাবা মাহাবুবের রহমান আর বেঁচে নেই

রামগতিতে আদালতের স্থিতাবস্থা মানছেন না অবৈধ ইটভাটার মালিকপক্ষ

গরমের শুরুতে রামগতিতে ভয়াবহ লোডশেডিং, ভোগান্তিতে উপকূলের গ্রাহক

রামগতিতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ৮ পরিবারের বসতঘর পুড়ে ছাই

কমলনগরে চার্টার্ড লাইফের মৃত্যু বীমা দাবি চেক হস্তান্তর

লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোর বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ে অনলাইন নিউজপোর্টাল প্রকাশনার নিবন্ধনের জন্য আবেদনকৃত, তারিখ: 9/12/2015  
 All Rights Reserved : Lakshmipur24 ©2012- 2024
Editor & Publisher: Sana Ullah Sanu
Ratan Plaza(3rd Floor), ChakBazar, Lakshmipur, Bangladesh.
Ph:+8801794822222, WhatsApp , email: news@lakshmipur24.com