এমআর সুমন: আগষ্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত টানা ৩ মাস মেঘনা নদীতে ইলিশ ধরার ভরা মৌসুম থাকলেও লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে চলতি বছরের ভরা এ মৌসুমেও মেঘনা নদীতে ইলিশের আকাল চলছে। জেলেরা নদীতে যে পরিমান ইলিশ পায় তা তাদের মাছ ধরার খরচ ও উঠে আসছেনা। ক্রমাগত
লোকসান দিয়ে ঋন গ্রস্থ বহু জেলে হতাশ হয়ে তাদের জাল নৌকা নিয়ে নদী থেকে নিজ নিজ বাড়ি ঘরে চলে এসেছে। জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, ঢাকা মৎস্য অধিদপ্তর ইলিশের স্বভাবিক উৎপাদন বজায় রাখার লক্ষ্যে নভেম্বর হতে জুন পর্যন্ত টানা ৮ মাস মেঘনা নদীতে সরকারী সিদ্বান্তে জাটকা নিধন প্রতিরোধ কর্মসূচী চালায়। এর মধ্যে মার্চ এপ্রিল ২ মাস নদীতে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ব বন্ধ থাকে। একই ভাবে প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশের নিরাপদ প্রজননের জন্য প্রতি বছর আশ্বিন মাসের ভরা পূর্নিমার সময় ১১ দিন মেঘনায় সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ব বন্ধ রাখা হয়। চলতি বছর তা আরও ৪ দিন বাড়িয়ে ১৫ দিন করে মৎস্য অধিদপ্তর।
সূত্রে আরও জানা যায়, জাটকা ও মা ইলিশ নিধন প্রতিরোধ কর্মসূচী বাস্তবায়নের জন্য জাতীয় পর্যায় ছাড়াও সরকারী ভাবে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছে। প্রশাসনিক কর্মকর্তা, কোস্ট গার্ডা, স্থানীয় পুলিশ, র্যাব, জনপ্রতিনিধি ও গন্যমান্য ব্যক্তিগন টাস্ক ফোর্সেও সদস্যরা মেঘনা উপকূলীয় লক্ষীপুর জেলা, রায়পুর, লক্ষীপুর সদর, রামগতি ও কমলনগর উপজেলায় ও ইউনিয়ন পর্যায়ে গঠিত টাস্ক ফোসর্ প্রতিরোধ কর্মসূচী বাস্তবায়ন করে আসছে।
লক্ষীপুর জেলা মৎস্যজীবী ফেডারেশনের সভাপতি মোস্তফা বেপারী জানান, গত জাটকা মৌসুমে ও প্রজনন কালীন সময় বেপরোয়া ভাবে জাটকা (ছোট ইলিশ) ও ডিম ওয়ালা মা ইলিশ নিধনের কারনে ইলিশের এ সংকটের অন্যতম কারন দেখা দেয়। নিষিদ্ধকালীন সময় সরকার প্রশাসনিক কর্মকর্তা, কোস্ট গার্ডা, স্থানীয় পুলিশ ও র্যাব দিয়ে জাটকা (ছোট ইলিশ) ও ডিম ওয়ালা মা ইলিশ নিধন বন্ধ করতে পারছে না।
স্থানীয় লোকজন, জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ী সাথে কথা বলে জানা যায় জানান, কমর্সূচী সফলের জন্য প্রচার প্রচারনায় বজ্র অঁটুনির ভাব থাকলেও সার্বক্ষনিক সময় তদারকিতে লোকবল ও যানবাহনের অভাবে তা বাস্ত বায়নে অনেকটা দুর্বল অবস্থায় থাকে। প্রতি কেজি তে ১’শ টি ২ হতে ৫ ইঞ্ছি পর্যন্ত সাইজের জাটকা বা ছোট ইলিশ থাকে এবং প্রজনন কালীন সময় পরিপক্ক একটি ইলিশে ২৩ লক্ষ পর্যন্ত পরিপক্ক ডিম থাকে। জাটকা এবং মা ইলিশের প্রধান প্রজননের গত ২ মৌসুমে এক শ্রেণীর অসাধু জেলের হাতে নদীতে বিপুল পরিমান জাটকা ও মা ইলিশ ধরা পড়ে। যার সামান্য পরিমান টাস্ক ফোর্সের অভিযানে আটক করা গেছে বলে স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানান।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আলিকুজ্জামান বলেন, অভিযান পরিচালনার জন্য জেলা মৎস্য বিভাগের নিজস্ব কোন নৌযান নেই। রায়পুর, লক্ষীপুর সদর ও রামগতি উপজেলার মৎস্য কর্তার পদ শূন্য। লোকবল ও যানবাহনের অভাবে প্রতিরোধ কর্মসূচী পালন ব্যহত হচ্ছে। এ বছরের জানুয়ারী হতে জুন পর্যন্ত জাটকা রক্ষা কর্মসুচীর সময় ৬৪২ টি অভিযানে ১৭ টন জাটকা আটক, ৫০টি মামলায় ৪৮ জন জেলের কারাদন্ড ও ৯০ লক্ষ মিটার কারেন্ট জাল আটক করহয়েছে। এবারও ২৫ সেপ্টেম্বও হতে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশের ভরা প্রজনন চলাকালীনসময় সময় মা ইলিশ রক্ষায় প্রয়োজীয় ব্যবস্থা নেওয় হয়েছে।
0Share