নিজস্ব প্রতিনিধি: সময়োচিত পদক্ষেপের অভাবে চটগ্রাম-লক্ষ্মীপুর-ভোলা-বরিশাল-খুলনা মহাসড়কের ভোলা-লক্ষ্মীপুর সরাসরি ফেরি সার্ভিসটি শেষ পর্যন্ত বন্ধই হয়ে গেছে। ফলে চট্টগ্রাম-বরিশাল ও খুলনা বিভাগ ছাড়াও দেশের তিনটি সমুদ্রবন্দরের সড়ক পরিবহনব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ল। এর ফলে ভোলার তরমুজসহ নানা কৃষিপণ্যের পরিবহনও প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। ভোলায় উৎপাদিত লক্ষাধিক টন তরমুজ নিয়ে এ দ্বীপ জেলার হাজার হাজার কৃষক ছাড়াও ব্যবসায়ীরা এখন সর্বস্বান্ত হওয়ার পথে। তরমুজবোঝাই শাতাধিক ট্রাক গত সপ্তাহাধিককাল ধরে ইলিশাঘাটে ফেরির জন্য অপেক্ষমাণ থাকার মধ্যেই সোমবার বিকেল থেকে ফেরি সার্ভিসটি বন্ধ করে দেয়ায় হাজার হাজার কৃষক ও ব্যবসায়ীর ভয়াবহ সর্বনাশ ঘটেছে। অনেক তরমুজ দিনের পর দিন ট্রাকে আটকা থেকে পচন ধরার মধ্যেই সোমবার ফেরি সার্ভিসটি বন্ধ করে দেয়ায় কোটি কোটি টাকার এ কৃষিপণ্য নিয়ে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের কপাল পুড়ল।
তবে বিআইডব্লিউটিসি ২৮কিলোমিটার দূরত্বের ইলিশা ঘাটের পরিবর্তে ভোলা-বরিশাল মহাসড়কের ভেদুরিয়া ফেরিঘাট পর্যন্ত বিকল্প রুটে পারিক্ষামূলকভাবে ফেরি সার্ভিস চালু করেছে। শনিবার বেলা ২টায় লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীর হাট থেকে কয়েকটি ট্রাক নিয়ে একটি কে-টাইপ ফেরি ভোলার উদ্দেশে যাত্রা করে। তবে ওই ফেরি সার্ভিস বহাল রাখতে ২৮ কিলোমিটারের পরিবর্তে প্রায় ৬৫ কিলোমিটার নৌপথ পাড়ি দিতে হচ্ছে। এতে সময়ও লাগছে সোয়া দুই ঘণ্টার স্থলে প্রায় সাত ঘণ্টা। ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটে চলাচলকারী বিআইডব্লিউটিসির প্রায় নতুন কে-টাইপ ফেরি ‘কিষাণি’ ও ‘কনকচাঁপা’ গত দিন পনের ধরেই ভাটির সময়ে ভোলা ফেরিঘাটে ভিড়তে পারছিল না। মেঘনায় ভাটির সময়ে পানির স্তর আশঙ্কাজনকভাবে নিচে নেমে যাওয়ায় ভোলার ইলিশা প্রান্তে ঘাট ও সংযোগ সড়ক থেকে ফেরিঘাট-পন্টুন প্রায় ৬৫ ডিগ্রি নিচে থাকত। ফলে কোনো পণ্য ও যাত্রীবাহী যানবাহনই ফেরি থেকে পন্টুন অতিক্রম করে সংযোগ সড়কে উঠতে পাড়ছিল না। এতে করে দু’টি ফেরিকেই পূর্ণ জোয়ারের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছিল। ফলে ২৪ ঘণ্টায় দু’টি ফেরি মাত্র চারটি ট্রিপে ৫০-৬০টির বেশি যানবাহন পারপার করতেও পারছিল না। পাশাপাশি ভাটি মেঘনায় প্রবাহ হ্রাসের সাথে ভাঙনের হুমকির কারণে ভোলা প্রান্তের ইলিশা পয়েন্টে ফেরিঘাটটি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছিল বলেও দাবি করেছেন বিআইডব্লিউটিএর দায়িত্বশীল মহল। সব মিলিয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও বিআইডব্লিউটিএর দায়িত্বশীল মহল সোমবার বিকেল থেকে ভোলার ইলিশা থেকে লক্ষ্মীপুরের ফেরি সার্ভিসটি বন্ধ ঘোষণা করে।
0Share