জিল্লুর রহমানঃ নদী তীরবর্তী পর্যটন কেন্দ্র নির্মান হয়েছে বাংলাদেশের অনেক জেলাতেই। প্রচুর সম্ভাবনা থাকা স্বত্বেও লক্ষ্মীপুরের মজু চৌধুরীরহাট সংলগ্ন মেঘনা নদীতে উদ্যোগের অভাবে এখনো গড়ে উঠেনি কোন পর্যটন কেন্দ্র। কি নেই এখানে, জেলেদের ইলিশ মাছ ধরা,নদী তীরবর্তী বিস্তীর্ন এলাকা, বৈচিত্রময় সাধারন মানুষের জীবন-যাত্রা ,শান্ত নদীর কলতান, একেবারেই প্রকৃতির কোলে বসে বিশুদ্ধ অক্সিজেন নেবার এই সুযোগ হাতছাড়া করবে না পর্যটন প্রেমিরা। কিন্তু প্রচার প্রচারনা এবং উদ্যোগের অভাবে আমরা মেঘনা তীরবর্তী মজু চৌধুরীর হাটে গড়ে তুলতে পারছিনা একটি মনোমুগ্ধকর পর্যটন কেন্দ্র। এখন প্রতি বছরই বাংলাদেশে দেশি-বিদেশি পর্যটক সংখ্যা বাড়ছে।
সেই সঙ্গে পর্যটনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাগুলোর কার্যক্রম ও কর্মসূচি দিন দিন বাড়ছে। লক্ষ্মীপুরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা প্রত্নতাত্তি্বক ও ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলোর যথাযথ সংস্কার ও সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ ও সম্পদ সঞ্চালন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত এলাকাগুলো পর্যটন আকর্ষণ হিসেবে উন্নীত করা গেলে মজু চৌধুরীর হাট কেন্দীক লক্ষ্মীপুরে একটি পর্যটনশিল্প গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
এই পর্যটনশিল্পে বেসরকারি উদ্যোগকে যথাযথভাবে উৎসাহিত ও পর্যটনশিল্পে স্থানীয় বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে পারলে পর্যটন কেন্দ্রীক একটি অর্থনৈ্তিক অঞ্চল গড়ে উঠতে পারে। এই অঞ্চলটিকে পর্যটন হিসেবে গড়ে তুলতে আমাদেরকেও ভুমিকা নিতে হবে,বিশেষ করে যোগাযোগ ও অবকাঠামো উন্নয়ন, পর্যটন স্পটের ছবি ও ঠিকানা প্রদর্শন, প্রণোদনার সুযোগ সৃষ্টি, নদ-নদীর তীরে আনন্দ আয়োজন ও নৌকা ভ্রমণ, সংবাদমাধ্যমে পর্যটন সম্পর্কিত ইতিবাচক প্রচারণা, অনলাইনে প্রচারণা বাড়ানো, বহুমুখী পর্যটনব্যবস্থা চালুকরণ, সাংস্কৃতিক পর্যটন, জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা, স্থানীয় উদোক্তাদের উৎসাহিতকরণ।
মেঘনা নদীর তীরে দর্শনার্থীর জন্য গ্যালারি তৈরি করে সেখানে লেজার শোর মাধ্যমে বিভিন্ন ঐতিহ্য তুলে ধরার পাশাপাশি ওই সব অঞ্চলের নিজস্ব সংস্কৃতি, গান, যাত্রাপালা, পুতুল নাচ, বায়োস্কোপ, নৌকাবাইচ, ষাঁড়ের লড়াই, ঘোড়দৌড় ইত্যাদির আয়োজন করা যেতে পারে। এ ছাড়া নৌভ্রমণের মাধ্যমে পর্যটকদের গ্রামবাংলার চিরায়ত রূপ দেখানো যেতে পারে। সংবাদমাধ্যমে পর্যটন সম্পর্কিত ইতিবাচক প্রচার ,অনলাইনে প্রচার বাড়ানো ,বিশেষ করে ফেসবুক, টুইটারসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পর্যটন স্থানের ছবি, মানচিত্র, যাতায়াতের পথ-ঘাট, যানবাহনের ভাড়া, নিকটবর্তী হোটেল- রেস্টুরেন্টের ঠিকানা, অনলাইনে টিকিট কেনা সম্পর্কিত তথ্যসহ এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যাবতীয় তথ্য প্রচার করা যেতে পারে।
স্থানীয় প্রশাসনের নজরে এনে যদি তাদের মাধ্যমে সরকারি উদ্যোগে পর্যটোন কেন্দ্র নির্মানের পরিকল্পনা করা যায়,তাহলে দ্রুতই বিকসিত হতে পারে এই অঞ্চলের পর্যটোন অর্থনীতি।য়ামরা সবাই একটু মনযোগি হলেই মজু চৌধুরীর হাট কেন্দ্রীক লক্ষ্মীপুরে একটি পর্যটন শিল্প গড়ে উঠতে পারে, যেখানে লক্ষ্মীপুরের অন্যান্য চিত্তাকর্ষক স্থাপনাগুলোও পর্যটনের আওতায় চলে আসবে।ফলে গড়ে উঠবে অপার সম্ভাবনাময় একটি পর্যটন অঞ্চল।
লেখক: সম্পাদক, দৈনিক সময়ের আলো
0Share