তাবারক হোসেন আজাদ ও নিজস্ব প্রতিনিধি: হঠাৎ ঝড়ে কবলে পড়ে লক্ষ্মীপুরের ৫ উপজেলার বহু এলাকায় প্রায় শতাধিক কাঁচা বাড়িঘর বিধ্বস্ত ও অসংখ্য গাছপালা উপড়ে গেছে এবং ফসলের কিছু ক্ষতি হয়েছে।তবে সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্খ হয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায়।বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ও শুক্রবার ভোরে ( ২৮,২৯ সেপ্টেম্বর) পুরো লক্ষ্মীপুর জেলা হঠাৎ এ ঝড়ের কবলে পড়ে।ঘটনার ৩দিন পরেও জেলার রায়পুর, কমলনগর, রামগতি এবং লক্ষ্মীপুর সদর এলাকার অনেক স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা পুরোপুরি ঠিক হয়নি।তবে শনিবার কম ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ আগের মতো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বেশ কয়েকজন পাঠক।কিন্তু গ্রামের বেশিরভাগ এলাকায় টানা ৩দিনের বেশি সময় বিদ্যুৎ না থাকায় জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেছে। মানুষের বাসাবাড়িতে থাকা ফ্রিজে সংরক্ষিত খাবার, পরীক্ষার্থীদের লেখাপড়ার বিঘ্ন ও ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতি নষ্টসহ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
কমলনগরের ফাজিলব্যাপারিহাট, উত্তর চর লরেঞ্চ, মুন্সিগঞ্জ, মতিরহাট, উত্তর মার্টিনসহ বহু এলাকায় বিদ্যূৎ ব্যবস্থা এখানো স্বাভাবিক হয়নি।একই রকম আছে রামগতির প্রত্যন্ত অঞ্চলে।
রায়পুরে ঘূর্ণিঝড়ে চারটি চরাঞ্চলে প্রায় শতাধিক কাঁচা বাড়িঘর বিধ্বস্ত ও অসংখ্য গাছপালা উপড়ে গেছে এবং ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন গ্রামে ২০টি বৈদ্যুৎতিক খুঁটি ভেঙ্গে ও ট্রান্সফরমান বিকল হয়ে শতাধিক স্থানে তাঁর ছিড়ে যাওয়া দু’দিন ধরে বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং পৌরসভার পানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় জনদূর্ভোগ দেখা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে ও শুক্রবার ভোরে উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী, উত্তর চরবংশী, দক্ষিণ চরআবাবিল, উত্তর চরআবাবিল, সোনাপুর ও চরমোহনা ইউনিয়নের গ্রাম গুলোতে ঘরবাড়ি, গাছপালা, ফসল ও বৈদ্যুৎতিক খুঁটি ভেঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঘূর্ণিঝড়ের পর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ।
দক্ষিণ চরআবাবিল ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা সহিদ উল্যা বিএসসি ও উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের আবুল হোসেন বলেন, তাঁদের ইউনিয়নসহ ১৫টি গ্রামে প্রায় শতাধিক কাঁচা ঘর বিধ্বস্ত, গাছপাল উপড়ে ও বৈদ্যুৎতিক তার ছিড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়াও চরের কৃষকদের আমন ধান সহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এসময়ে ঝড় ও ভারি বৃষ্টিতে শিশু নারী সহ ৮ জন আহত হয়। বিদ্যুৎতের খুঁটি ভেঙ্গে পুরো ইউনিয়নের গতদুই দিন ধরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
রায়পুর পল্লীবিদ্যুৎ কার্যালয়ে উপ মহা-ব্যবস্থাপক সুদাস চন্দ্র রক্ষিত বলেন, অল্পসংখ্যক কর্মচারি দিয়ে দ্রুত বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধান না হওয়া জেলা কার্যালয় থেকে অতিরিক্ত লোকজন এনে ভেঙ্গে যাওয়া ২০টি বৈদ্যুৎতিক খুঁটি ও শতাধিক স্থানে ছিড়ে যাওয়া তার মেরামতের কাজ চলছে। রবিবার সকালে বিদ্যুৎ সরবরাহ দিতে পারবে বলে আশাবাদী।
রায়পুর উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা শিল্পী রানী রায় বলেন, হঠাৎ করে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড়ে বেশ কিছু গ্রামে কাঁচা ঘরবাড়ি, গাছপালা উপড়ে ফসলের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির পরিমান তালিকা করা হচ্ছে। এলাকা পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্তদের শান্তনা দেওয়া হয়েছে।
0Share