জুনাইদ আল হাবিব: নাব্যতা সংকট ও ডুবোচরের কারণে হুমকির মুখে পড়েছে ভোলা-লক্ষ্মীপুর ফেরি রুট। লক্ষ্মীপুরের মজু চৌধুরীর ঘাটের প্রবেশ মুখে পলি জমায় ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। চরের কারণে যে কোন সময় ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশংকা ফেরি কর্তৃপক্ষের। মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে কমলনগরের মতিরহাটের পরে রহতমখালী চ্যানেলে ফেরি কনকচাঁপা আটকে ছিল প্রায় ২ ঘন্টা। ফলে দূভোগে পড়ে অসংখ্য যাত্রী।
মঙ্গলবার বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মো. শাহ আলম(৬৪) নামের সদ্য প্রয়াত এক স্বজনের লাশ নিয়ে অপেক্ষার গুনছেন ভোলার মনির। কথা হলে তিনি জানান, “রাজধানীর মিরপুরের এক হাসপাতালে আমার পরিবারের একজন সদস্য মারা গিয়েছেন। সকালে এম্বুলেন্স যোগে লক্ষ্মীপুর হয়ে নদীপথে ভোলার চর ফ্যাসনে যাওয়ার কথা। কিন্তু ফেরীর জন্য অপেক্ষা করতে করতে লাশ নিয়ে বড় বিপাকে আছি।” ফেরী ঘাটের স্টাফ কামরুল রশিদ বলছিলেন, “তিনটি ফেরির মধ্যে ভোলা থেকে কনকচাঁপা ও কিষাণী রওয়া দিয়েছে দুপুরে। বিকেল ৫টায় কিষাণী এসে পৌঁছে। কিন্তু কমলনগরের মতিরহাটের পরে রহতমখালী চ্যানেলে কনকচাঁপা সন্ধ্যা পর্যন্ত আটকা ছিল।
বিআইডব্লিউটিএ’এর কর্মকর্তারা জানান, শীত মৌসুমে মেঘনার পানি কমে যাওয়ায় জেগে উঠেছে নদীর মধ্যে ডুবোচর। বিশেষ করে লক্ষ্মীপুরের মজু চৌধুরীর ঘাটের রহমত আলী চ্যানেলের পৌনে ১ কিলোমিটার এলাকায় ডুবোচর জেগে ওঠায় ফেরি স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারছেনা। এ রুটের ‘কে’ টাইপের ফেরিগুলো চলাচল করতে ৮ থেকে ১০ ফুট পানির দরকার হলেও ভাটার সময় প্রবেশ পথগুলোতে ৫ থেকে ৬ ফুটের বেশি পানি থাকেনা। এতে ফেরির মাস্টাররা বিপাকে পড়ছেন।
ভোলা বিআইডব্লিউটিসির ফেরি কনকচাঁপার মাস্টার অফিসার মিন্টু রঞ্জন দাস বলেন, ‘জোয়ারের সময় ঘুরিয়ে ধরতে হয়, কিন্তু সেটি আমাদের খুব সমস্যা হয় এবং ভাটার সময় সোজা ধরা যায় ঠিকই, কিন্তু বের হওয়ার সময় আমাদের অনেক সমস্যা হয়’। আর ডুবোচরের কারণে ফেরির ট্রিপ কমে যাওয়ায় বাস-ট্রাক নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘাটে আটকে থাকতে হচ্ছে চালকদের। শুধু ফেরি নয়, এই রুটে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচলেও বিঘ্ন ঘটছে বলে জানালেন লঞ্চের মাষ্টাররা।
এমভি মহিমা-১ লঞ্চের মাস্টার মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘চরের কারণে লঞ্চের স্বাভাবিক চলাচলে ব্যাহত হচ্ছে’। এদিকে বিআইডব্লিউটিসি’র ভোলা-লক্ষ্মীপুর ফেরি সার্ভিসের ব্যবস্থাপক মো. আবু আলম হাওলাদার জানান, এরুটে ফেরি চলাচলে সমস্যা আরো বাড়বে। তিনি বলেন, রহমতখালী চ্যানেলের প্রায় পৌনে এক কিলোমিটারে নাব্যতা সংকট রয়েছে’।
চট্টগ্রাম থেকে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলায় সড়ক যোগাযোগ ও পণ্য পরিবহণের জন্য ভোলা- লক্ষ্মীপুর নৌরুট ব্যবহার করা হয়। অন্যদিকে স্থানীয়দের দাবি ভোলা-লক্ষ্মীপুরের পরিবতে ভোলা-মতিরহাট ফেরি রুট করা হলে কোন রকম ড্রেজিং না করেই অল্প সময়ে সারা বছর নৌ চলাচল সম্ভব।
0Share