তাবারক হোসেন আজাদ: লক্ষ্মীপুরের রায়পুর একটি প্রথম শ্রেণির পৌরসভা। প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রায় ২৪ বছর নূণ্যতম নাগরিক সেবা পাচ্ছে না পৌরবাসি। পানি সরবরাহ ও সড়ক সংস্কারসহ ১৩টি দাবী আদায় নিয়ে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে, এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ে ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন রায়পুর নাগরিক সুরক্ষা কমিটির নামে একটি সামাজিক সংগঠন। এ সংগঠন প্রায় ৬ মাস আগে ১০ গুণ হারে পৌর টেক্স আদায় নিয়ে উচ্চ আদালতে একটি মামলাও করেছেন। যা বর্তমানে বিচারাধীন।
লিখিত অভিযোগে জানা যায়, রায়পুর পৌরসভা প্রায় ৪৫ হাজার জনসংখ্যা ও ১২ হাজার পরিবার বসবাস করে। যোগাযোগ মাধ্যম রিক্সা ছাড়া অন্য কিছু নেই (যার সর্বনিম্ন ভাড়া ২০টাকা)। অনিয়মিত, চাহিদার ক্ষুদ্রাংশ তা আবার নাগরিক সংখ্যার ১০শতাংশ পানি সরবরাহ করা হয়। পানি, পয়নিস্কাশন ও বর্জ ব্যবস্থাপনা নেই। বৃত্তশালী ও পেশি শক্তির দ্বারা অর্থনৈতিক ও সামাজিক ন্যায়বিচার করা হয়। প্রধান সড়কসহ পৌরসভার সকল সড়কগুলো বেহাল। বাজার এলাকা রিক্সা, সিএনজি, ট্রাক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও হকাদের দখলে। ফুটপাত, যাত্রিচাওনী, বাস স্ট্যান্ড ও পরিবহণ পার্কিং নেই। নাগরিক স্বাস্থ্য ও পরিবেশ স্ব-নিয়ন্ত্রীত। খেলাধুলা, চিত্তবিনোদন, সাংস্কৃতিক সুযোগ, পাঠাগার ও গোরস্থান নেই।
নাগরিক সুবিধার মধ্যে জনসংখ্যার ১০শতাংশ অনিয়মিত পানি সরবরাহ, নিজস্ব খুটি না থাকা সত্ত্বেও পল্লীবিদ্যুতের খুটি ও বিভিন্ন গাছের সাথে বিক্ষিপ্তভাবে বাতি লাগানো। রশিদ ছাড়াই অতিরিক্ত মূল্যে নিবন্ধন সনদ ও ব্যবসায়ীদের জন্য ট্রেড লাইন্সেস দেওয়া হচ্ছে। গত ২০ বছরে নাগরিক সেভার তুলনায় স্থানীয় ও দলীয় লোক দিয়ে গোপনে জনবল নিয়োগ। পৌরসভা এখন ‘দলীয় ক্যাডার পূর্ণবাসন কেন্দ্র’ ও ও পৌরকর ‘চাঁদা’ নামে জনগণের কাছে পরিচিতি পেয়েছে।
এবিষয়ে মোহাম্মদ সেলিম, আবুল বাসার, রাজ, তুহিন পাটওয়ারী ও মিজানুর রহমানসহ কয়েকজন নাগরিক জানান ২০১৬ সালে পরিবার প্রতি পানির বিল ১২০টাকা করা হয় কিন্তু ২০১৭ সালে তা ৩০০ টাকা হারে আদায় বাধ্য করছে ও প্রতিদিন পানি দেওয়া হচ্ছে। আমরা পৌরসভার স্থানীয় কর্মকর্তা-কর্মচারীর বদলে অ-স্থানীয় কর্মকর্তা-কর্মচারী দ্বারা নাগরিক সেবা প্রদান, কর্মচারীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ও কর পূণ: নির্ধারণ চাই। সু-নাগরিক গড়ার স্বার্থে সুঠু ও সুন্দর পরিবেশ লক্ষ্যে পৌর বিধিমালা অনুযায়ী নাগরিক সেবা প্রদানের দাবী জানাই।
রায়পুর পৌরসভার হাজী ইসমাইল খোকন বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে সরকারি কোন বাজেট বরাদ্দ পাই নাই। পৌরসভার নিজস্ব তহবিল থেকে কয়েকটি উন্নয়ন কাজ করা হয় এবং কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন ভাতা দিয়ে আসছি। পর্যায়ক্রমে প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হিসেবে সকল কাজ সম্পন্ন করা হবে।
উল্লেখ্য – ১৯৯৪ সালের ২০ জানুয়ারী ৬টি মৌজায় ৫টি গ্রাম নিয়ে ৯.০৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনে প্রতিষ্ঠিত হয় রায়পুর পৌরসভা। যা ১৯৯৮ সালে প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হিসেবে স্বীকৃতি পায়। ২০০২ সালে ডিপিএই-ই ডানিডা কর্তৃক পাইপ লাইন স্থাপন ও ৭০ লক্ষ হাজার লিটার পানি প্ল্যান্ট নির্মাণের মাধ্যমে ২৫ হাজার গ্রাহকের মাঝে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।
0Share