নিজস্ব প্রতিনিধি:: অসময়ের প্রবল বষর্ণে লক্ষ্মীপুরে মৌসুমের প্রধান ফসল সয়াবিনসহ রবি শস্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে সব পূজিঁ হারিয়ে বড় রকমের লোকসানের মূখে পড়তে যাচ্ছে জেলার কৃষক পরিবার। সাগরের লঘুচাপের ফলে ১৯ এপ্রিল থেকে টানা ৪ দিনের বৃষ্টিতে এখন ডুবে নষ্ট হয়েযাচ্ছে পাকা সয়াবিন, বাদাম, মরিচ, ডাল জাতীয় ফসলসহ মাঠের সব রবিশস্য। শনিবার (২২এপ্রিল) বিকেলে এ প্রতিবেদন লেখার সময়ও বৃষ্টি হচ্ছিল।
সরেজমিনে দেখা যায় এ সময়ে ফসলি মাঠে সয়াবিন ও মরিচ পাকতে শুরু করেছে। সয়াবিনের ফলন ঘরে তোলার সময় সন্নিকটে। অনেক এলাকায় কৃষকরা পাকা মরিচ সংগ্রহ করতে শুরু করেছেন। কৃষকদের মাঝে যখন স্বপ্ন উঁকি দিচ্ছিল ফলন বিক্রি করে লাভবান হতে। ঠিক তখনই সাগরে লঘুচাপ এবং প্রবল বৃষ্টিতে ডুবে আছে ফসল। ক্ষেতে এখন পানি ৩ ফুটেরও বেশি। তাদের স্বপ্ন শেষ।
প্রথমে সেচ পাম্প দিয়ে ফসলি জমির পানি সরানোর চেষ্টা করা হলেও অল্প কয়েক ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার ২০ এপ্রিল বিকালে আবারও শুরু হয় প্রবল আকারে বৃষ্টি। যার ফলে পানিতে ডুবে যায় পুকুর, ডোবা খাল-বিল। কোন দিকেই পানি সরানো সম্ভব হচ্ছে না। জলাবদ্ধতায় সয়াবিন, মরিচ এবং বাদামসহ অন্যান্য ফসল এখনো ডুবে আছে। খালগুলো সব ভরাট, পানি প্রবাহের জন্য নেই ব্যবস্থা। চারদিকের কৃষকদের মুখে এখন শুধু শুনা যাচ্ছে হাহাকার।
এ বিষয়ে কমলনগরের কৃষক ও চর মার্টিন ইউপি সদস্য মোঃ নুরুল ইসলাম পারভেজ (৩৫) বলেন, যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে মনে হয় এবার প্রতিজন কৃষক লক্ষাধিক টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
স্থানীয় সেচ মেশিন মালিক মোঃ আবদুল গণি (৩৮) জানান, গতকাল থেকে প্রায় ১৫-১৬ টা ক্ষেত থেকে পানি অপসারণ করেছি। এখনো কৃষকরা সেচ পাম্প খোঁজ করছে। কৃষকরা হতাশ তবু ও শেষ চেষ্টা করছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী আবুল হোসেন (৪৫) বলেন, তিন বৃষ্টি নিয়ে আমরা একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছি যাতে ক্ষতির আশংকা ব্যাপক। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেয়া তথ্যমতে, লক্ষ্মীপুরে সয়াবিন উৎপাদন হয়েছে ৫০ হাজার ৫শ ৫ হেক্টর জমিতে। যার মধ্যে রামগতিতে ১৮ হাজার ২শ, কমলনগরে ১৬ হাজার ৩শ ১০, রায়পুরে ৭ হাজার ৯শ ৬০, সদরে ৭ হাজার ৯শ ৫০ হেক্টর। অন্যদিকে জেলায় মোট বাদাম চাষ হয়েছে ৪ হাজার ৮শ ১৮ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে কমলনগরে ২ হাজার ৩৫, রামগতিতে ১৭ হাজার, সদরে ৯শ ৫৩, রায়পুর ৫০, রামগঞ্জে ৮০ হেক্টর জমি। দেশের ৭০ ভাগ সয়াবিন লক্ষ্মীপুরে উৎপাদিত হয়।
0Share