সব কিছু
facebook lakshmipur24.com
লক্ষ্মীপুর বৃহস্পতিবার , ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
মিড-ডে মিল

মিড-ডে মিল

mid-day-mealড. রহিমা খাতুন: সরকারি প্র্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ফুটফুটে এক শিশু। বাবা কৃষক আর মা গৃহিনী। চার বোন আর দুই ভাইয়ের অত্যন্ত আদরের শিশুটি প্রতিদিন সকাল পাঁচটা সাড়ে পাঁচটা টার দিকে ঘুম থেকে উঠে হাতমুখ ধুয়ে কিছু না খেয়ে খালি পেটে আরবি পড়ার জন্য মাদ্রাসায় যায়। সকাল আটটার দিকে মাদ্রাসা থেকে বাড়ি ফিরে যাও-ভাত অথবা পান্তা-ভাত খেয়ে পড়তে বসে। পড়া শেষ করে গোসল করে বই খাতা বুকের সাথে জড়িয়ে স্কুলে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয় সকাল এগার টায়। খালি পায়ে প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে হেঁটে স্কুলে যেতে শিশুটির প্রায় এক ঘন্টা সময় লেগে যায়। ক্লাস শুরু হয় বেলা বারটার সময়। স্কুল শেষে বাসায় ফিরতে ফিরতে বিকাল পাঁচটা সাড়ে পাঁচটা বেজে যায়।

ছোট শিশুটি সেই যে সকাল আটটার দিকে যাও-ভাত অথবা পান্তা-ভাত খেয়েছে তারপর বিকাল পাঁচটা সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত প্রায় আট নয় ঘন্টা সে কিছুই খায়নি। খালি পেটে ক্ষুধার্ত অবস্থায় সে পড়াশুনা করেছে, খেলা-ধুলা করেছে। ক্লান্ত ক্ষুধার্ত শিশুটি যখন বাড়ি ফিরল তখন সামনে রাখা খাবার সে গোগ্রাসে শেষ করে ফেলে।

এভাবে দিনের পর দিন শিশুটি স্কুলে দীর্ঘসময় না খেয়ে অপুষ্টিতে ভুগতে থাকে। বাড়িতে ডিম, দুধ, মাছ, মাংস তেমন খেতে পারে না বাবার আর্থিক অবস্থার কারনে। দৈহিক ও মানসিক উন্নয়নের জন্য যে শিশুটির প্রতিদিন একটি ডিম, এক গ্লাস দুধ, মাছ, মাংস ও শাকসবজি খাওয়া দরকার সে শিশুটি খাচ্ছে সকালে যাও/ পান্তা -ভাত, বিকেলে ভর্তা-ভাত আর রাতে ভাতের সাথে পোড়া মরিচ দিয়ে পেঁয়াজ ভর্তা।

তবুও ছোট্ট শিশুটি মনে মনে স্থির করে তাকে ভালভাবে পড়ালেখা করতে হবে। বাবা, মা, ভাই, বোনের কষ্ট দুর করতে হবে। তাই, সে প্রতিদিন নিজ গরজেই স্কুলে যায়। কিন্তু বাড়ি থেকে অথবা স্কুলে কোন টিফিন না দেয়ার কারনে দীর্ঘসময় তাকে ক্ষুধার্ত থাকতে হয়। ক্ষুধার কারনে সে পড়াশুনায় মনোনিবেশ করতে পারেনা। মাঝে মাঝে তার মাথা ঘুরে। ঝিমানো ভাব আসে। কিন্তু সে পড়াশুনা আকরে ধরে থাকে। কারণ, শত প্রতিকুলতার মাঝেও যে তাকে অনেক বড় হতে হবে। বাবা মায়ের কষ্ট দুর করতে হবে। শিশুটির চোখে শুধু স্বপ্ন আর স্বপ্ন। কবে পূরণ হবে সে স্বপ্ন; সেজন্য অপেক্ষায় দিন গুনতে থাকে।

সেই স্বপ্ন একদিন সত্যি হলো। শিশুটি সত্যিই খুব ভাল রেজাল্ট করল। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনি পরীক্ষায় সে উপজেলার মধ্যে তৃতীয় স্থান লাভ করল। কিন্তু শিশুটি জানেনা যে সে এতো ভাল রেজাল্ট করেছে। একদিন সে রাস্তার ধারে মায়ের রান্না করার জন্য গাছের ঝরা পাতা ঝাড়ু দিয়ে জমাচ্ছিল। এমন সময় স্কুলের একজন শিক্ষিকা রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন। শিক্ষিকা শিশুটিকে ডেকে কাছে নিয়ে আদর করে একটা বই হাতে দিলেন এবং বললেন, “এটা তোমার পুরস্কার। তুমি সমাপনি পরীক্ষায় উপজেলায় সকলের মধ্যে তৃতীয় স্থান অর্জন করেছ। সেজন্য উপজেলা থেকে তোমাকে এ পুরস্কার দেয়া হয়েছে । তুমি অনুষ্ঠানে যাওনি বলে আমি পুরস্কারটি নিয়ে এসেছি।” শিশুটি খুশিতে বইটি নিয়ে দৌড়ে গিয়ে তার মায়ের হাতে দেয়। পরে এসএসসি পরীক্ষায় স্টার মার্কসসহ উপজেলায় দ্বিতীয় স্থান এবং এইচএসসিতে স্টার মার্কসসহ প্রথম স্থান অধিকার করে উপজেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থী হিসেবে সে সকলের নজর কারে। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে প্রথম শ্রেণিতে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করে এবং জাপানের হোক্কাইডো ইউনিভার্সিটি হতে পিএইচ.ডি ডিগ্রী অর্জন করে।

সেই শিশুটি পরে বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারে যোগদান করে। বর্তমানে সে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে সোনাইমুড়ী উপজেলার দায়িত্ব পালন করছে। সে মনে করে ছোটকালে স্কুলে যদি তাদের টিফিনের ব্যবস্থা করা হতো তাহলে তার মেধা বিকাশের আরো বেশি সুযোগ থাকত। আজ তার মনে পড়ে সাথের অনেক সহপাঠির কথা। তারা এখন কোথায়? তারা কতটুকু পড়াশুনা করতে পেরেছে? কেন তারা ঝড়ে পড়ল? কেন তারা নিজেদের মৌলিক অধিকার শিক্ষা থেকে বন্চিত হলো? তাদের অফুরন্ত সম্ভাবনা কেন অংকুরেই শেষ হয়ে গেল?

যখন সেই উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো পরিদর্শন করে তখন সে তার শৈশবে ফিরে যায়। ছোট ছোট সোনামনিদের মাঝে তাকে খুঁজে পায়। বিদ্যালয় পরিদর্শনকালে সে দেখতে পায় ছাত্রছাত্রীরা প্রায়ই অজ্ঞান হয়ে পড়ে। তাদের হাত পায়ের নখগুলো বড় বড়। নখে ময়লা ঢুকে নখগুলো কাল হয়ে আছে। পড়নের কাপড়, হাত- পা, মাথার চুল ময়লা। রোগা রোগা চেহারা। সে যখন ক্লাস নেয় তখন খুব ভালভাবে বিষয়টি বুঝিয়ে বললেও অনেক শিশুরাই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনা। যদিও তারা খুব মনোযোগ দিয়ে ক্লাসটি শুনেছে বলে মনে হয়। কেন তারা এ সহজ বিষয়টি সহজ করে বার বার বুঝানোর পরেও প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে না। তার কারণ খুঁজার নিরন্তর চেষ্টা। ৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জরিপের ফলাফল অনুযায়ী সকালে বাড়ি থেকে খেয়ে আসে ১০০% শিক্ষার্থী। সকালের নাস্তা হিসেবে চা-মুড়ি, চা-বিস্কিট খায় প্রায় ৫০% শিক্ষার্থী, দুপুরে দোকান থেকে কিনে ভেজাল আচার, চিপস, রং ও ঘনচিনি মিশ্রিত আইসক্রীম, হাইড্রোজ মুড়ি ও ভেজাল তেল দিয়ে তৈরি মুড়ি মাখা, অনুমোদনবিহীন চানাচুর, নিম্নমানের বিস্কুট ইত্যাদি খায় প্রায় ৭০% শিক্ষার্থী। ৮% শিক্ষার্থী বাড়ি থেকে খেয়ে আসে। আর ২% বাড়ি থেকে টিফিন আনে অথবা না খেয়ে থাকে, ২০ % শিক্ষার্থী স্কুল ত্যাগ করে । এ জরিপের ফলাফল থেকে জানা যায় মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত না হওয়ার কারণ পুষ্টিহীনতা। মুলত পুষ্টিহীনতার কারণেই তাদের ব্রেইনের উন্নয়ন হচেছনা। তারা ক্লাস চুপ করে শুনে কিন্তু ক্ষুধার কারণে মনোনিবেশ করতে পারে না। ফলে, তারা পড়াশুনা তথা স্কুলের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। এমনকি এক পর্যায়ে ঝড়ে পড়ে স্কুল থেকে।

‘‘রূপকল্প ২০২১’’ বাস্তবায়নের জন্য আমাদের শিশুদের পুষ্টিহীনতা কোনভাবেই কাম্য নয়। এ শিশুরা আমাদের ভবিষ্যৎ। যে কোন মূল্যে তাদের দৈহিক, মানসিক, নৈতিক, মানবিক ও নান্দনিক বিকাশ সাধনের মাধ্যমে উন্নত জীবন দর্শনে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। বিশ্বায়নের এ যুগে সময়ের চাহিদার সংগে সংগতি রেখে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে গতিশীল ও সম্প্রসারিত করার মাধ্যমে মানসম্মত শিক্ষা এবং তথ্য প্রযুক্তিভিত্তিক জ্ঞানসমৃদ্ধ মানব সম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে ‘‘রূপকল্প ২০২১’’ বাস্তবায়ন করতে হবে। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী উপজেলা প্রশাসন প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের জন্য নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য সোনাইমুড়ী উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক গৃহিত বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে মিড-ডে মিল অন্যতম। বিশ্বের সকল উন্নত দেশে এমনকি ভারতের সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরকারিভাবে মিড-ডে মিল কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সোনাইমুড়ী উপজেলা প্রশাসন গত অক্টোবর ২০১৪ থেকে শিক্ষার্থীদের মাঝে স্থানীয় ব্যক্তিবর্গের সহায়তায় পুষ্টিমান সম্পন্ন খাবার সরবরাহের মাধ্যমে মিড-ডে মিল চালু করেছে। বর্তমানে ১৭ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৬০০ শিক্ষার্থীর মাঝে মিড-ডে মিল এর কার্যক্রম চলমান রয়েছে। মিড-ডে মিল কার্যক্রম কর্মকর্তা, শিক্ষক প্রতিনিধি, গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে ১১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। এক্সিম ব্যাংকে এ বিষয়ে একটি হিসাব রয়েছে। কমিটি সভার মাধ্যমে খাদ্য তালিকা প্রস্তুত করে প্রতি শিক্ষার্থীকে কি পরিমান খাবার সরবরাহ করা হবে তা নির্ধারণ করে। সপ্তাহে ৫দিন খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ১টি ডিম, সবজি খিচুরী/পায়েস, রুটি, কলা সরবরাহ করা হচেছ। উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, এসএমসি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ নিয়মিত মিড-ডে মিল কার্যক্রম পরিদর্শন করছেন। সমাজের সর্বস্তরের জনগনের অংশগ্রহনের মাধ্যমে অত্যন্ত সুচারুরুপে এ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

মিড-ডে মিল এর সাফল্য:

১.ব্যতিক্রমধর্মী এ কর্মসূচির ফলে বিদ্যালয়ে গমনোপযোগি শিশুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উপস্থিত হচ্ছে।

২.শিশুদের একসংগে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে উঠছে। এতে পরস্পরের প্রতি সৌহার্দ্য ও সহমর্মিতা বৃদ্ধি পাচ্ছে ।

৩. বিদ্যালয়ের প্রতি শিশুরা আগ্রহী হচ্ছে।

৪. পুষ্টিহীনতা দুর হচ্ছে।

৫. পড়াশুনায় মনোনিবেশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

৬. ঝড়ে পড়া হ্রাস পাচ্ছে।

চেলেন্জসমুহ:

১.উপজেলা প্রশাসনের পরবর্তী কর্মকর্তাগন মিড-ডে মিল কার্যক্রমের প্রতি আগ্রহী না হলে তা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

২. সরকারি বরাদ্দ না থাকায় স্থানিয়ভাবে বিত্তবানদের অর্থায়নে মিড-ডে মিলের কার্যক্রম পরিচালিত বিধায় তা যেকোন সময় অর্থাভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

৩. ব্যপক সংখ্যক শিক্ষার্থীর জন্য পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রেখে খাবার রান্না করা এবং তা পরিবেশন করার উপযুক্ত পরিবেশ সমুন্নত রাখা সুকঠিন।

৪. সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জনবলের সমস্যার কারণে এ কার্যক্রম বাধাগ্রস্থ হতে পারে।

৫. শিক্ষকমন্ডলি অতিরিক্ত দায়িত্ব বিবেচনা করে মিড-ডে মিলের প্রতি আন্তরিক না হলে এ কার্যক্রমে বিঘœ সৃষ্টি হতে পারে।

সুপারিশসমুহ:

১. প্রতিটি শিশু স্কুলে আসার সময় টিফিন বাটিতে করে ঘরে তৈরি করা কিছু খাবার সাথে নিয়ে আসতে পারে।

২. বাবা মা/অভিবাবককে এ বিষয়ে সচেতন করা যেতে পারে।

৩. ক্লাস টিচার প্রতিদিন টিফিনের বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেন।

৪. অতিদ্রুত সারা দেশে সকল শিক্ষার্থীদের মিড-ডে মিল বাধ্যতামুলক করার জন্য সরকারি নির্দেশনা প্রদান করা

যেতে পারে।

৫. নিয়মিত মনিটরিং করা যেতে পারে।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য যে কোন মূল্যে অতিদ্রুত খাদ্যমান সম্পন্ন মিড-ডে মিলের ব্যবস্থা গ্রহণ করে প্রাথমিক শিক্ষার দৃশ্যমান উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা অতীব প্রয়োজন।

লেখক: ড. রহিমা খাতুন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সোনাইমুড়ী, নোয়াখালী।

লক্ষ্মীপুর নিউজ আরও সংবাদ

মেঘনায় ৩০ জেলের জরিমানা

বলিরপোল বাজারে আগুনে পুড়লো ৮ দোকান: দেড় কোটি টাকার ক্ষতি

রামগতিতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে কোটি টাকার ক্ষতি

মেঘনা নদীতে পৃথক দুটি ডাকাতি মামলার আসামী মঞ্জু গ্রেপ্তার

জাটকা নিধন বন্ধে মেঘনায় নৌ র‌্যালি

রামগতিতে জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস অনুষ্ঠিত

লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোর বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ে অনলাইন নিউজপোর্টাল প্রকাশনার নিবন্ধনের জন্য আবেদনকৃত, তারিখ: 9/12/2015  
 All Rights Reserved : Lakshmipur24 ©2012- 2024
Chief Mentor: Rafiqul Islam Montu, Editor & Publisher: Sana Ullah Sanu.
Muktijudda Market (3rd Floor), ChakBazar, Lakshmipur, Bangladesh.
Ph:+8801794 822222, WhatsApp , email: news@lakshmipur24.com