নিজস্ব প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরের বাহিনী প্রধান সোলায়মান উদ্দিন জিসানের (৩৬) লাশ কুমিল্লার কবর থেকে ৭ দিন পর উত্তোলন করে লক্ষ্মীপুরে এনে দাফন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর ২ টার দিকে নামাজের জানাযা শেষে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও বিজিবি পাহারায় চন্দ্রগঞ্জের লতিফপুরে এ লাশ দাফন করা হয়। জিসান লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রদলের সাবেক পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
জিসানের বিরুদ্ধে আটটি হত্যাসহ ৪৪টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এরআগে ‘র্যাবের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত জিসান বেওয়ারিশ নয়’- জিসানের মা ফাতেমা বেগমের এমন আবেদনের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ম্যাজিস্ট্রেট শামীম আহম্মেদের উপস্থিতিতে কুমিল্লা আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের টিক্কাচর কবরস্থান থেকে এ লাশ উত্তোলন করা হয়। পরে প্রশাসন জিসানের পরিবারের সদস্যদের কাছে লাশটি হস্তান্তর করে।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শামীম হোসেন জানান, জিসানের মা ফাতেমা বেগম তার ছেলের লাশ বেওয়ারিশ নয় উল্লেখ করে টিক্কারচর কবরস্থান থেকে লাশটি উত্তোলন করে তার নিজ বাড়ি লক্ষ্মীপুরের পারিবারিক কবরস্থানে দাফনের অনুমতি চেয়ে গত মঙ্গলবার (২৭ জানুয়ারি) কুমিল্লার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম নাসরিন জাহানের আদালতে আবেদন করেন।
এ সময় জিসানের একমাত্র মেয়ে ফারিয়া আক্তার মেহেরীন (৯), জেঠাত ভাই নজরুল ইসলামসহ স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।
আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলাম কুমিল্লার সভাপতি খোরশেদ আলম জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনুমতি পেয়ে তারা জিসানের লাশ দাফন করেছিলেন। আবার প্রশাসনের অনুমতি পেয়ে ফেরত দেন।
দাউদকান্দি থানার এসআই এনামুল হক জানান, জিসান নিহত হওয়ার পর কোনো অভিভাবক না পাওয়ায় লাশ ময়নাতদন্ত শেষে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়।
এ বিষয়ে ম্যাজিস্ট্রেট শামীম হোসেন জানান, কোনো নিহত ব্যক্তির পরিচয় একদিনের মধ্যে পাওয়া না গেলে লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়। জিসানের পরিবারের ইচ্ছাতে আবার লাশ তার মাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
নিহত জিসানের মা ফাতেমা বেগমের অভিযোগ, জিসান ছাত্রদলের রাজনীতি করতেন। রাজনৈতিক কারণে তার বিরুদ্ধে ৪৪টি মামলা করা হয়। র্যাব তাকে ধরে নিয়ে গুলি করে মেরে ফেলে বলে দাবি তার।
ফাতেমা বেগম আরও বলেন, জিসানের নিহতের ঘটনা শুনে পারিবারিকভাবে এবং জিসানের পূর্ব ইচ্ছানুযায়ী মসজিদের পাশে তার লাশ দাফনের জন্য একটি কবর খোঁড়া হয়। পরদিন খবর আসে আসে জিসানের লাশ কুমিল্লার টিক্কারচর কবরস্থানে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৩ জানুয়ারি গভীর রাতে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দির পুটিয়া এলাকায় র্যাব- ১১ সদস্যদের সাথে কথিত‘বন্দুকযুদ্ধে’ জিসান মারা যায়। ওই রাতেই ময়না তদন্ত ও সুরতহাল রির্পোট করে বেওয়ারিশ হিসেবে জিসানের লাশ পুলিশ কুমিল্লা আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে টিক্কাচর কবরস্থানে দাফন করে।
0Share