জিল্লুর রহমানঃ কৃষি লক্ষ্মীপুরের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ একটি সেক্টর। লক্ষ্মীপুরের উন্নয়নের কথা বলতে গেলে প্রথমে আসে কৃষি উন্নয়ন, কৃষি ভিত্তিক শিল্প, বাণিজ্য ও সেবা খাতের উন্নয়ন। কৃষি এখনো লক্ষ্মীপুরের বৃহত্তর গ্রামীণ জনগোষ্ঠির প্রধান পেশা এবং অধিকাংশ জনগণই জীবন জীবিকা ও কর্মসংস্থান এর জন্য কৃষির উপর নির্ভরশীল। কাজেই কৃষি নির্ভর শিল্পে স্বল্প মাত্রার সঞ্চালনা ও প্রেষণাই লক্ষ্মীপুরের গ্রামীণ কৃষি অর্থনীতিতে ব্যাপক বিস্ফোরণ সৃষ্টি করতে এবং গ্রামীণ জনগণের জীবন মান উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে। মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল অর্জন তথা দারিদ্র্য বিমোচনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কৃষিশিল্পের উন্নয়ন এবং এ সেক্টরকে বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক করার জন্য কৃষি সেক্টরের উন্নয়ন স্বাভাবিকভাবেই অগ্রাধিকার অর্জন করেছে।
লক্ষ্মীপুরের শতকরা ৭৩ জন নাগরিক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষি পেশার সাথে জড়িত। এখানকার প্রধান কৃষিজাত পণ্য হলো ধান, সয়াবিন, নারিকেল, সুপারি এবং মৌসুমী শবজি। বৃহৎ অর্থে কৃষিতে শস্য, প্রাণিসম্পদ (গবাদিপশু, মৎস্য ও পোল্ট্রি) এবং বন খাত অর্ন্তভূক্ত। শস্যের মধ্যে রয়েছে ধান, পাট, গম, শাক-সবজি, আখ, ডাল ফসল ইত্যাদি। এখানে বনাঞ্চল নেই ,কিন্তু নদী কেন্দ্রীক মাছ আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন অনেকেই।
প্রাণিসম্পদের মধ্যে অর্ন্তভূক্ত গবাদিপশু, দুগ্ধ ও দুগ্ধজাত পণ্য, হাঁস-মুরগী ও মৎস্য । কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থা অর্থ্যাৎ বীজ বপন থেকে শুরু করে শষ্য কর্তন, প্রসেসিং, প্যাকেজিং এবং বিপনন সবই এখন শিল্প কার্যক্রমের অংশ। তাই কৃষি ব্যবস্থা এখন কম্পোজিট শিল্পের পর্যায়ভূক্ত, একথা নি:সন্দেহে বলা চলে।
সেই অর্থে লক্ষ্মীপুরের কৃষি শিল্প অনেক পিছিয়ে আছে,গড়ে উঠেনি কোন টেকসই কৃষি ব্যবস্থাপনা। সাম্প্রতিক সময়ে সয়াবিন চাষের ক্ষেত্রে এক বৈপলবিক সাফল্য সংযোজিত হয়েছে এই অঞ্চলের কৃষিতে। এই সয়াবিনকে ঘিরে গড়ে উঠতে পারে ব্যপক কৃষিভিত্তিক শিল্প। বিশেষ করে পোল্ট্রি শিল্পের এক বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে সয়াবিনকে ঘিরে, এতে উৎসাহিত হবে স্থানীয় কৃষকেরা, ঘুচবে বেকারত্ব।
চীনবাদামের ভেষজ ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারলে এই অঞ্চলের কৃষকেরা বর্তমান দামের চেয়ে দ্বীগুন দামে বাদাম বিক্রি করতে পারবে। এই জন্য প্রয়োজন ছোট খাটো উদ্যোগ।
নারিকেলের ছোবড়া থেকে কুটির শিল্প গড়ে উঠার সকল সুযোগ সুবিধা থাকা সত্বেও কোন বড় আকারের শিল্প এই অঞ্চলে গড়ে উঠেনি। পুকুরে মাছের চাষ করে অনেকেই লাভবান হচ্ছেন,কিন্তু মাছ চাষের সঠিক ব্যবস্থাপনা না জানার কারনে কম উতপাদন নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে কৃষকদের।
জেলার প্রত্যন্ত চরে গবাদি পশুর খামার গড়ে তুলে দুগ্ধজাত শিল্পের সম্ভাবনাকেও কাজে লাগানো যেতে পারে। এই সব কিছুর প্রয়োজন একটি টেকসই পরিকল্পনা, যেহেতু কৃষিভিত্তিক শিল্প গড়ে তোলার সব রসদই এই এলাকায় বিরাজমান, সেহেতু এখন শুধু প্রয়োজন পরিকল্পনার। আশা করি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং উদ্যোক্তারা এগিয়ে আসবেন।
জেলার প্রত্যন্ত চরে গবাদি পশুর খামার গড়ে তুলে দুগ্ধজাত শিল্পের সম্ভাবনাকেও কাজে লাগানো যেতে পারে। এই সব কিছুর জন্য প্রয়োজন একটি টেকসই পরিকল্পনা, যেহেতু কৃষিভিত্তিক শিল্প গড়ে তোলার সব রসদই এই এলাকায় বিরাজমান, সেহেতু এখন শুধু প্রয়োজন পরিকল্পনার। আশা করি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং উদ্যোক্তারা এগিয়ে আসবেন।
লেখকঃ সম্পাদক, দৈনিক সময়ের আলো
0Share