কাজল কায়েস: লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন ১৫ বছর ধরে হচ্ছে না। অথচ ছাত্র সংসদের নামে বছরের পর বছর চাঁদা আদায় চলছে। কলেজের প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে এ সংসদের জন্য ৩০ টাকা করে চাঁদা নেওয়া হয়। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। জানা
গেছে, ছাত্র সংসদের সর্বশেষ নির্বাচন হয় ২০০০ সালে। এরপর থেকে ছাত্র সংসদের নির্বাচন আর হয়নি। কিন্তু ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে ছাত্র সংসদের নামে চাঁদা আদায় করা বন্ধ হয়নি। একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৩০ টাকা ও স্নাতকে ভর্তি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৫০ টাকা হারে চাঁদা নেওয়া হয়। আর এ খাতে এ পর্যন্ত জমা হয়ে আছে লাখ লাখ টাকা। কলেজে বর্তমানে প্রায় সাড়ে ৯ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত।
দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ফারুক হোসেন বলেন, প্রতিবছর ছাত্র সংসদের টাকা নেয়। এ টাকা কিভাবে খরচ হয় তা আমাদের জানানো হয় না। আমরা দীর্ঘদিন ধরে ছাত্র সংসদের নির্বাচনের দাবি জানালেও কর্তৃপক্ষ তা আমলে নিচ্ছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রদলের কলেজ শাখার এক নেতা জানান, ছাত্র সংসদের নামে আদায় করা টাকাগুলো ভুয়া ভাউচার দিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ ভাগবাটোয়ারা করে নেয়। এ স্বার্থে তারা কলেজে নির্বাচন দিচ্ছে না। কলেজের একাধিক প্রভাষক জানান, বিভিন্ন কারণে ১৫ বছর ছাত্র সংসদ নির্বাচন দেওয়া যায়নি। তা ছাড়া ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতারা বিগত বছরগুলোতে নির্বাচনের জন্য মতৈক্যে পৌঁছাতে পারেনি।
কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মির্জা আমজাদ হোসেন আজিম বলেন, ছাত্র সংসদ নির্বাচন হোক, আমরা মনে-প্রাণে চাই। কিন্তু স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে গ্রুপিং এবং তাদের সদিচ্ছা না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে এ নির্বাচন হচ্ছে না।
সর্বশেষ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ওই কলেজের নির্বাচিত ভিপি মজিবুর রহমান মুরাদ বলেন, সরকার আন্তরিক হলে নিয়মিত ছাত্র সংসদ নির্বাচন করা সম্ভব। দীর্ঘ সময় লক্ষ্মীপুরে নির্বাচন হচ্ছে না। এতে শিক্ষকরা সংসদের নামে টাকা তুললেও ছাত্র সংসদের কোনো সুবিধা পাচ্ছে না ছাত্রছাত্রীরা। লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ সোলায়মান বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ৪১টি খাতে টাকা নেওয়ার নিয়ম রয়েছে। এর মধ্যে একটি ছাত্র সংসদ। ছাত্র সংসদের নামে নেওয়া টাকা কলেজ কর্তৃপক্ষ ব্যয় করতে পারে না। যখনই ছাত্র সংসদ নির্বাচন হবে, তখন নির্বাচিতরাই এ টাকা ব্যয় করবে। উত্তোলন করা চাঁদা জমা রয়েছে।
0Share