নিজস্ব প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরে বাণিজ্য মেলায় জুয়া-লটারি দিয়ে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া ও সার্কাসের নামে বেহায়াপনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
শনিবার (২৩ মে) বিকেলে বিক্ষোভ মিছিল লক্ষ্মীপুর শহর প্রদক্ষিণ করে। লক্ষ্মীপুর আউটার স্টেডিয়ামে বণিক সমিতির ব্যানারে গত ১৭ এপ্রিল শুক্রবার থেকে এ মেলা শুরু হয়। মেলা শুরু হওয়ার পর থেকে চলতে থাকে জুয়া, লটারি ও সার্কাসের নামে অশ্লিল নাচগান।
এমন অপ্রত্যাশিত অনৈতিক কর্মকান্ডে প্রশাসন রহস্যজনক কারণে নিরব থাকলেও সচেতন মহলে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। কিন্তু কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায়নি। অবশেষে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ জুয়া, লটারি ও বেহায়াপনা বন্ধের প্রতিবাদে বিক্ষোভ বের করে।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ এপ্রিল লক্ষ্মীপুর আউটার স্টেডিয়াম মাঠে কোনো বাণিজ্যিক মানের পণ্য ছাড়াই দেশীয় কয়েকটি কাপড়-জুতার স্টল দিয়ে এই মেলার উদ্বোধন করে লক্ষ্মীপুর বণিক সমিতি।
আর এই বাণিজ্য মেলার আড়ালে লক্ষ্মীপুরের একটি চক্র জুয়া ও দৈনিক সোনালী র্যাফেল ড্রর মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। অথচ অজানা কারণে নির্বিকার রয়েছে পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন। চোখের সামনে অনুষ্ঠিত সর্বনাশা জুয়ার নেশায় সাধরণ মানুষ সর্বশান্ত হলেও প্রতিকারের তাগিদ অনুভব করছে না জেলা প্রশাসন ।
বাণিজ্য মেলার নামে জুয়া-লটারীতে নামিদামি পুরস্কারের লোভনীয় ঘোষণা দেয়া হচ্ছে। গ্রাম-গঞ্জ ও প্রত্যন্ত হাট-বাজারসহ জেলার সর্বত্র প্রচার চালানো হচ্ছে। চমকপদ বিজ্ঞাপনে দুই শতাধিকেরও রিকশা ও সিএনজি চালিত অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহনে প্রচার মাইক লাগিয়ে বিক্রি করছে র্যাফেল ড্র’র সোনালী লাকি কুপন লটারি।
মেলার এক মাস পার হলেও মেলা কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসকের নিকট আবেদন করে আরো ১০ দিন সময় বাড়িয়েছে।
সরজমিনে মেলা প্রাঙ্গনে ঘুরে দেখা গেছে, লক্ষ্মীপুরে শুরু হওয়া তথাকথিত এই মাস ব্যাপী বাণিজ্যমেলায় আসা দর্শকদের অধিকাংশই জুয়া খেলায় অংশ নিচ্ছে। এর পাশাপাশি দৈনিক সোনালী র্যাফেল ড্র নামে ২০ টাকার বিনিময়ে লটারী কুপন বিক্রি হচ্ছে।
এই সোনালী কুপনের লটারিতে অফার দেয়া হচ্ছে প্রতিদিন দুটি করে মোটরসাইকেল ও হীরার নাকফুলসহ অন্যান্য উপহার সামগ্রী। ফলে শহর ও গ্রামগঞ্জ থেকে তরুণ, যুবক সব শ্রেণি-পেশার মানুষ মোটরসাইকেল ও হীরার নাকফুলের লোভে পড়ে সর্বশান্ত হচ্ছে।
মেলায় র্যাফেল ড্রকে কেন্দ্র করে বহু সংসারে শুরু হয়েছে কলহ। রাত ১০টার পরও শত শত নারীকে দেখা যায় মেলার মাঠে। র্যাপেল ড্রকে কেন্দ্র করে যে কোন সময় ঘটতে পারে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা যা পূর্বেও ঘটেছে।
খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়, লক্ষ্মীপুর বণিক সমিতির আয়োজনে এই মেলার উদ্যেগদাতা মূলত একজন ব্যক্তি। তার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করতে চাইলে তা সম্ভব হয়নি।
পুরস্কারের আশায় হাজার হাজার শ্রমজীবী সাধারণ মানুষ ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা টিকিট কিনে প্রতারিত হচ্ছে। মেলায় লটারী-জুয়ার পাশাপাশি সার্কসের নামে পাল্লা দিয়ে চলছে অশ্লীল নৃত্য ও গান। চলে মদ-গাঁজা ও ইয়াবার আড্ডা। এমন পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে যে কোনো সময় মেলার প্যান্ডেল ভাঙচুর ও আয়োজকদের ওপর হামলার আশাঙ্কা দেখা দিয়েছে।
0Share