সব কিছু
facebook lakshmipur24.com
লক্ষ্মীপুর শুক্রবার , ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ডেঞ্জারজোন লক্ষ্মীপুর! তিন মাসে সংবাদ মাধ্যমে ২৪ লাশের খবর (ভিডিওসহ)

ডেঞ্জারজোন লক্ষ্মীপুর! তিন মাসে সংবাদ মাধ্যমে ২৪ লাশের খবর (ভিডিওসহ)

ডেঞ্জারজোন লক্ষ্মীপুর! তিন মাসে সংবাদ মাধ্যমে ২৪ লাশের খবর (ভিডিওসহ)

#kill-hottaবিশেষ প্রতিবেদন,লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোর: সন্ত্রাসের জনপদ বা ডেঞ্জারজোন লক্ষ্মীপুর আবারো রক্তাক্ত হচ্ছে। আধিপত্য বিস্তার, চাঁদবাজি, চাঁদার টাকা ভাগবাটোয়ারা ও মাদক ব্যবসার বিরোধের জের ধরে

জেলার চন্দ্রগঞ্জ, জয়পুর, মিরিকপুর, দেওপাড়া, বশিকপুর, দত্তপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় এখন প্রতিনিয়ত লাশ পড়ছে। নিয়মিত হত্যাকান্ড ছাড়াও আত্মহত্যা, অপহরণ, বন্দুকযুদ্ধ, ডাকাতি, হামলা এবং প্রকাশ্য অপ্রকাশ্য চাঁদাবাজিও হচ্ছে যখন তখন।

লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোরের অপরাধ বিভাগে প্রতিদিনই এ সংক্রান্ত কোন না কোন সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। এ সকল অপরাধের মধ্যে জেলা ব্যাপী সাম্প্রতিক হত্যাকান্ডের ঘটনা গুলোই সবচেয়ে বেশি আলোচিত বিষয়।

চলতি বছরের জানুয়ারী থেকে জেলাব্যাপী খুনের ঘটনা বিশেষ করে হত্যা, ঝুলন্ত লাশ আর উদ্ধার হওয়া লাশের ওপর লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোর ডটকমে প্রকাশিত সংবাদের সংকলন নিয়ে আমাদের এবারের বিশেষ প্রতিবেদন।

প্রকাশিত সংবাদের পরিসংখ্যানে দেখা যায় গত ২৩ জানুয়ারী থেকে ১৬ এপ্রিল পযন্ত প্রায় ৩ মাসে এ জেলার ২২টি লাশের খবর লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোর ডটকমে প্রকাশিত হয়। যার মধ্যে সদর উপজেলায় ১৫ জন, রায়পুরে ৩ , কমলনগরে ৩ ,রামগতিতে ১ রামগঞ্জে ২ জন।
অন্যদিকে এ সকল হত্যাকান্ডের মধ্যে আওয়ামীলীগ ও অংগ সংগঠনের পরিচয়বাহী ৯ জন, বিএনপি ও অংগ সংগঠনের পরিচয়বাহী ৩ জন এবং রাজনৈতিক পরিচয় ছাড়া ৬ জন, নারী ও গৃহবধূ ৫ এবং ১ টি শিশুর নাম প্রকাশিত হয়েছে।

হত্যাকান্ড ছাড়া ও কুপিয়ে এবং গুলি করে মারাত্মক জখম করা হয়েছে অন্তত ২০জন কে।ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে অন্তত ৩০টি।সাথে অন্যান্য অপরাধ তো নিয়মিত আছেই।

চলতি ২০১৫ সালে লক্ষ্মীপুরের প্রথম খুনের তালিকায় ওঠে আসে পুলিশের তালিকাভুক্ত লক্ষ্মীপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী ও জিসান বাহিনীর প্রধান সোলায়মান উদ্দিন জিসান। তিনি ২৩ জানুয়ারী শুক্রবার র্যা বের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে কুমিল্লার দাউদকান্দি এলাকায় নিহত হন।ঘটনাটি লক্ষ্মীপুরে না ঘটলেও এটিই এখন পযন্ত জেলার সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা। অন্যান্য হত্যা ও লাশ উদ্ধার হওয়ার ঘটনা গুলোর মধ্যে

১৭ এপ্রিল:: সর্বশেষ ১৭ এপ্রিল সদর উপজেলার বাংগাখাঁ ইউনিয়নের নেয়ামতপুর এলাকা থেকে প্রবাসীর স্ত্রী রুনা আক্তারের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত রুনা আক্তার একই এলাকার মানিক মিয়ার মেয়ে ও বশিকপুর গ্রামের প্রবাসী মুরাদ হোসেনের স্ত্রী। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন জানায়, নিহতের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। হত্যা না আত্মহত্যা। সেটা ময়নাতদন্তের পর বলা যাবে মৃত্যুর রহস্য।

১৬ এপ্রিল:: রামগঞ্জে নিখোঁজ হওয়ার একদিন পর মো. আবু তাহের (৪৮) নামে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ১৬ এপ্রিল দুপুরে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল মর্গে আনা হয়।
এর আগে সকালে রামগঞ্জ উপজেলার চন্ডিপুুর ইউনিয়নের উত্তর হাজীপুর গ্রামের হাজী বাড়ি থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়। আবু তাহের উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়নের চাঙ্গিরগাঁও গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে।

১৩ এপ্রিল::রামগতি উপজেলার চর পোড়াগাছা ইউনিয়নের রাস্তার মাথা এলাকায় দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় মো. ইস্রাফিল হোসেন সজিব (২৬) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের আরও ৬ জন আহত হয়েছে । নিহত সজিব চর পোড়াগাছা গ্রামের বাসিন্দা মো. নুরুল ইসলামের ছেলে। সরকারি বেড়ি বাঁধের ওপর দোকান ঘর নির্মাণকে কেন্দ্র করে বাছেত ও জামালের দু’ পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধঁলে এ নিহতের ঘটনা ঘটে।

৭ এপ্রিল:: স্থানীয় সন্ত্রাসী জসিম ও বিপ্লব গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ও গুলিবিনিময়ের ঘটনায় মো. আলী ওরফে মমা নামে একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। ৭ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে সদর উপজেলা উত্তর জয়পুর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মমা সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের গনেসামপুর গ্রামের আবদুস সালামের ছেলে। তিনি বিপ্লব বাহিনীর সদস্য ছিলেন।

৫ এপ্রিল:: মো. সাদ্দাম হোসেন (২৫) নামে এক যুবদলকর্মীকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। ৫ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার পার্বতীনগর ইউনিয়নের বিজয়নগরে এ ঘটনা ঘটে। সাদ্দাম পার্শ্ববর্তী দক্ষিণ হামছাদী ইউনিয়নের হামছাদী গ্রামের ভূইঁয়া বাড়ির আমানত উল্যার ছেলে।

২৬ মার্চ:: পৃথক ঘটনায় শিশু ও নারীসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে ১৯ জানুয়ারি সদর উপজেলার বড় বল্লবপুর গ্রামে প্রতিপক্ষের অতর্কিত হামলায় আবদুর রব রাসেল নামে এক যুবক আহত হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৬ মার্চ: রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) তার মৃত্যু হয়।

একই সময় সদর উপজেলার শাকচর গ্রাম থেকে মায়া বেগম (৩০) নামে এক গৃহবধূর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পারিবারিক কলহের জের ধরে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে। গৃহবধূ মায়া ওই গ্রামের দুলাল হোসেনের স্ত্রী।

এছাড়া রায়পুর উপজেলার গাইয়ারচর গ্রামের একটি ডোবা থেকে সকালে নিখোঁজের চারদিন পর জিহাদ হোসেন (৪) নামে এক শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। জিহাদ ওই গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে।

২৪ মার্চ:: রামগঞ্জ পৌরসভার কলচমা গ্রামে নিখোঁজের ৫দিন পর কৃষক মো. তোফাজ্জল হোসেনের (৪০) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ২৪ মার্চ দুপুরে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। তোফাজ্জল হোসেন রামগঞ্জ পৌরসভার কলচমা গ্রামের মৃত আবদুর রশিদের ছেলে।

২০ মার্চ:: নোয়াখালীর চাটখিলের আওয়ামী লীগ কর্মী ও স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. গোলাম মাওলাকে (৩২) লক্ষ্মীপুরে গাছের সঙ্গে বেঁধে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। ২০ মার্চ সকাল ১০টার দিকে চাটখিল সীমান্তবর্তী লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের কাজী বাড়ির বাগান থেকে পুলিশ তার মৃতদেহ উদ্ধার করে। নিহত গোলাম মাওলা নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার রামনারায়ণপুর ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য ও সোবাহানপুর গ্রামের বাসিন্দা মনু মিয়ার ছেলে। তিনি সোবাহানপুর বাজারের চা দোকানি ছিলেন।

১৬ মার্চ:: রায়পুরে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত যুবলীগ নেতা মনু মিয়া চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। ১৬ মার্চ রাত পৌনে ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। নিহত মনু মিয়া রায়পুর উপজেলার উত্তর চর আবাবিল ইউনিয়ন যুবলীগের প্রচার সম্পাদক ছিলেন ও স্থানীয় সন্ত্রাসী উলফা বাহিনীর সদস্য।

৯ মার্চ: : কমলনগর উপজেলায় যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্ত্রী রাশেদা বেগমকে (২৪) গলা কেটে হত্যা করেছে মো. সুমন (৩০)। ৯ মার্চ গভীররাতে উপজেলার চর কাদিরা ইউনিয়নের চার নম্বর ওয়ার্ডের রব বাজার এলাকার হাবাজুরিয়া বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।নিহত রাশেদা বেগম রব বাজার এলাকার মৃত তাজল হকের মেয়ে ও কুমিল্লার বালুতুলার বাসিন্দা বাচ্চু মিয়ার ছেলে সুমনের স্ত্রী। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে ঘাতক সুমন কে পুলিশের প্রেমের ফাঁদে গ্রেফতার করা হয়।

৭ মার্চ:: সদর উপজেলার উত্তর হামছাদী ইউনিয়নের হাসন্দী গ্রামে মো. দুলাল (৪০) নামে এক কৃষককে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। ৭ মার্চ রাত সাড়ে ৮টার দিকে নিজ বাড়ির সামনে তাকে কুপিয়ে আহত করা হয়। পরে হাসপাতাল নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। নিহত দুলাল হাসন্দী গ্রামের বদিউজ্জামান মুন্সি বাড়ির মৃত মনসুর আহাম্মদের ছেলে। তিনি একজন কৃষক ।

৭ মার্চ:: সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্য ও হত্যা মামলার আসামি সোহেল রানাকে (৩০) কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
৭ মার্চ সকাল ৯টার দিকে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের বালাইশপুর গ্রামের রাস্তার পাশ থেকে পুলিশ তার মৃতদেহ উদ্ধার করে। এর আগে শুক্রবার রাতের কোনো এক সময় তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। তিনি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার পাবর্তীনগরের মরকৌদ্দাস গ্রামের কবিয়ার বাড়ির রফিক উল্যার ছেলে এবং সন্ত্রাসী রিপন বাহিনীর সদস্য ।

৪ মার্চ:: সদর উপজেলার ভাঙ্গাখাঁ ইউনিয়নের যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুর রহমান ফরহাদকে (৩৫) গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। ৪ মার্চ সকাল ৮টায় পুলিশ স্থানীয় মিরিকপুর বাজারের একটি সমিলের সামনে থেকে তার গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে। নিহত যুবলীগ নেতা ফরহাদ লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভাঙ্গাখাঁ ইউনিয়নের মিরিকপুর গ্রামের নুরুল আমিন মাস্টারের ছেলে।

১৯ ফেব্রুয়ারি:: লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভাঙ্গাখাঁ ইউনিয়ন যুবদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. বাবলুকে (২৫) গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। ১৯ ফেব্রুয়ারি সকাল নয়টার দিকে ওই ইউনিয়নের নেয়ামতপুর দোলাকান্দির একটি খাল থেকে তার গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত বাবলু উপজেলার রাদাপুর গ্রামের হাবিব উল্যাহর (আজগরের) ছেলে।

১৮ ফেব্রুয়ারি:: কমলনগর উপজেলায় মো. আবুল কাশেম (৪৮) নামে এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। ১৮ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার লরেন্স-ফজুমিয়ারহাট সড়কের কিল্লার রাস্তার মাথা এলাকা থেকে পুলিশ তার মৃতদেহ উদ্ধার করে। এর আগে ভোরে তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত আবুল কাশেমের বাড়ি একই উপজেলার সাহেবেরহাট ইউনিয়নের চার নম্বর ওয়ার্ডে। তিনি মুরগির ব্যবসা করতেন। তিনি কোন রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত ছিলেন না।

৭ ফেব্রুয়ারি :: সদর উপজেলার দুর্গাপুরে দুর্বৃত্তদের গুলিতে বাবর হোসেন (২৩) নামে এক যুবক খুন হয়েছে।
৭ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত বাবর সদর উপজেলার পূর্ব দিঘুলী গ্রামের মফিজ উল্যার ছেলে। তিনি স্থানীয় যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

৭ ফেব্রুয়ারি :: কমলনগর ও রায়পুর উপজেলায় পৃথক ঘটনায় প্রবাসীর স্ত্রীসহ দুই গৃহবধূর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ৭ ফেব্রুয়ারি সকালে ঝুলন্ত লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়। রায়পুর উপজেলার বামনী ইউনিয়নের সাইচা গ্রামের সোলায়মানের স্ত্রী কুসুম বেগম (৪৫) ৭ ফেব্রুয়ারি রাতে বসতঘর থেকে বের হয়ে যায়। পরে পাশের একটি গাছে তার ঝুলন্ত মৃতদেহ পাওয়া যায়। কুসুম ৪ সন্তানের জননী ছিলেন।

কমলনগর উপজেলার সাহেবেরহাট ইউনিয়নের চরজগবন্ধু গ্রামের প্রবাসী ইব্রাহিম হোসেনের স্ত্রী আকলিমা বেগমের (২২) ঘর থেকে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।

৫ ফেব্রুয়ারি:: সদর পূবাঞ্চলের আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী নাছির বাহিনীর সদস্য ও ডাকাতিসহ একাধিক মামলার আসামি রতনের গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ৫ ফেব্রুয়ারি দুপুর আড়াইটার দিকে চন্দ্রগঞ্জ থানার আমানিয়া এলাকার একটি মাঠ থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। রতন সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের দেওপাড়ার আবদুল খালেকের ছেলে। সে ও স্থানীয় যুবলীগের সাথে যুক্ত ছিল।

২ ফেব্রুয়ারি:: লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. রুবেলকে (৩০) গলাকেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। সোমবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাতের কোনো এক সময় এ ঘটনা ঘটে। নিহত রুবেল দত্তপাড়ার বাসিন্দা আবুল খায়েরের ছেলে।

২৫ জানুয়ারি:: সদর পূবাঞ্চলের আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী নাছির বাহিনীর সদস্য বাহার (৩৫) নামে এক ডাকাতের গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ২৫ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চন্দ্রগঞ্জ সিনেমা হলের পাশের একটি মাঠ থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত বাহার ডাকাত লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জের দেওপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আবুল হাসিমের (হাইস্সা চোরার) ছেলে। নাছির বাহিনীর সদস্য নিহত বাহার চিহ্নিত ডাকাত। তার বিরুদ্ধে ডাকাতিসহ একাধিক মামলা ছিল। সে স্থানীয় যুবলীগের সাথে যুক্ত ছিল।

২৩ জানুয়ারী:: চলতি ২০১৫ সালে লক্ষ্মীপুর জেলার প্রথম খুনের তালিকায় ওঠে আসে পুলিশের তালিকাভুক্ত লক্ষ্মীপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী ও জিসান বাহিনীর প্রধান সোলায়মান উদ্দিন জিসান। তিনি ২৩ জানুয়ারী শুক্রবার র্যা বের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে কুমিল্লার দাউদকান্দি এলাকায় নিহত হন। নিহত জিসান লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের পশ্চিম লতিফপুর গ্রামের মৃত আবু বকর সিদ্দিকের ছেলে ও জেলা ছাত্রদলের বহিস্কৃত নেতা।র্যা বের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে জিসান কুমিল্লায় নিহত হলেও পরবতী অনেক গুলো হত্যাকান্ড ঘটে সন্ত্রাসীদের নিজেদের দ্বারা।

কেন এ সব হত্যাকান্ড বা লাশ ?

এ উত্তর খুঁজতে গেলে সংবাদ মাধ্যকে স্থানীয়রা জানান, সন্ত্রাসের জনপদ হিসেবে পরিচিত জেলায় অভ্যন্তরীণ কোন্দলে লিপ্ত রাজনৈতিক ক্যাডাররা প্রায় সময় বন্দুকযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন রাজনৈতিক অস্ত্রবাজরাও মাঠ দখল করে আছেন। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে সন্ত্রাস, দখল, অস্ত্রবাজি, খুন-খারাবিতে পিছিয়ে নেই ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডাররাও।

গত বছর বেসরকারী টেলিভিশন ইন্ডিপেডেন্টে প্রচারিত অপরাধমূল অনুসন্ধানী অনুষ্ঠান “তালাশ” থেকে জানা যায় রাজনৈতিক সন্ত্রাস-সংঘাত ছাড়াও লক্ষ্মীপুরে ১২ থেকে ১৫টি সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ রয়েছে। এ গ্রুপগুলোর বিরোধের জের ধরে প্রতিদিনই জেলার বিভিন্ন স্থানে গোলাগুলি লাশের সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে। গুলিবিদ্ধ লাশ, জবাই করা লাশ। এরা সবাই পুলিশের তালিকাভুক্ত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীগ্রুপ। এদের অত্যাচারে রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।

জেলায় যেসব বাহিনী ও তাদের নামে অনুসারীরা সক্রিয় রয়েছে তার মধ্যে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার পূর্বাঞ্চলের চন্দ্রগঞ্জ এলাকায় অত্যন্ত শক্তিশালী পক্ষ জিসান বাহিনী। জিসান এখন নেই কিন্তু আছে তার অনুসারীরা। রয়েছে তার ডাকাত নাসির বাহিনী নেতৃত্বে নাসির বাহিনী। সদর উপজেলার পূর্ব দক্ষিণ অঞ্চলের ত্রাস দিদার বাহিনীর দিদার নিহত হওয়ার পর ঐ বাহিনীর কিছুদিন প্রধান ছিলেন ইছমাইল হোসেন খোকন। এরপর খোকন খুন হয় এখন ও আছে তাদের অনুসারী।

দত্তপাড়ায় রয়েছে সাবেক চেয়ারম্যান নিহত নুর হোসেন শামিম বাহিনীর অনুসারী। আছে আসাদুজ্জামান বাবুল বাহিনীর অনুসারী।লাদেন মাসুমের লাদেন বাহিনী, জসিম বাহিনী, মটবী এলাকার সৌরভ হোসেন রুবেল পাটওয়ারীর রুবেল বাহিনী, বিল্পব বাহিনী, বশিকপুরে রতন বািহিনী, সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নে রয়েছে মোসলেহ উদ্দিন মুন্নার অনুসারী জেহাদ বাহিনী।বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়নে বড় মিয়া বাহিনী। পার্বতীনগরে বাসার বাহিনী। দাসের হাটে মামুন বাহিনী। হাজির পাড়ায় নিজাম উদ্দিন মুন্না বাহিনী। এ সকল বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ২ হাজারের ও বেশি বলে বিভিন্ন সূত্রের খবরে জানা যায়।

এছাড়াও জেলার উপকূলীয় জনপদে বিভিন্ন জলদস্যু বাহিনীর রয়েছে দাপট। সব মিলে পপ্রতি মাসেই পড়েছে ৮ থেকে ১০টি লাশ। তাছাড়া প্রকাশ্য অপ্রকাশ্য চাদাঁবাজি, অপহরণ এবং ডাকাতি যেন এখন নিয়মিত ঘটনা। বিভিন্ন নামে গজিয়ে ওঠা সন্ত্রাসী বাহিনী কোন না কোন রাজনৈতিক দলের আজ্ঞাবহ হয়েই দাবিয়ে বেড়াচ্ছে।প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের আক্রমণ এবং অনেক ক্ষেত্রে নিজ দলের গ্রুপিংয়ের কারণেও এসব খুনোখুনির ঘটনা ঘটে।সবমিলে সন্ত্রাসীদের আগ্রাসী মনোভাব ও একের পর এক হত্যা, গুমসহ নানা কর্মকান্ডে জেলাবাসী অতিষ্ঠ।

লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার শাহ মিজান শাফিউর রহমান সংবাদ মাধ্যম কে জানান, বিগত সময়ে বেশ কয়েকটি যৌথ অভিযানে পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীসহ বিভিন্ন মামলার প্রায় ৫ শতাধিক আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ অঞ্চলের মানুষ যাতে নিরাপদে বসবাস করতে পারে সেদিকে পুলিশের বিশেষ নজর রয়েছে।জেলায় ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো তদন্ত চলছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোরের অপরাধ বিষয়ক সংবাদ লিংক:


লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোরে মৃত্যুর সংবাদ বিষয়ক লিংক:

অপরাধ | আইন আরও সংবাদ

রায়পুরে কলেজছাত্রকে অপহৃরনের ঘটনায় দু’জন আটক

মেঘনায় ৩০ জেলের জরিমানা

মেঘনা নদীতে পৃথক দুটি ডাকাতি মামলার আসামী মঞ্জু গ্রেপ্তার

লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল কর্মীর বিরুদ্ধে রোগীকে মারধরের অভিযোগ

লক্ষ্মীপুরে বিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে চুরি হওয়া শিশু ওহিকে পাওয়া গেছে সড়কের পাশে

রামগতিতে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো অবৈধ ৩ ইটভাটা

লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোর বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ে অনলাইন নিউজপোর্টাল প্রকাশনার নিবন্ধনের জন্য আবেদনকৃত, তারিখ: 9/12/2015  
 All Rights Reserved : Lakshmipur24 ©2012- 2024
Editor & Publisher: Sana Ullah Sanu
Ratan Plaza(3rd Floor), ChakBazar, Lakshmipur, Bangladesh.
Ph:+8801794822222, WhatsApp , email: news@lakshmipur24.com