নিজস্ব প্রতিনিধি: কমলনগর উপজেলার মেঘনা নদীতে নির্বিচারে চলছে জাটকা ইলিশ নিধন উৎসব। সরকারী নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে স্থানীয় যুবলীগ নেতাদের শেল্টারে জেলেরা নদীতে শতাধিক ট্রলার নিয়ে নেমেছে বলে
অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় কোষ্টগার্ড ও পুলিশ কে হাত করে এসব কর্মকান্ড চলছে বলে জানা যায়। এ ঘটনায় লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করছে স্থানীয়রা।
জানা যায়, মার্চ-এপ্রিল ২ মাস মেঘনা নদীতে অভয়াশ্রম ঘোষণা করে সরকার সব ধরনের জাটকা ইলিশ আহরণ, বাজার জাতকরণ, শিকার, সংরক্ষণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। এই আইন ভঙ্গকারীদের জেল জরিমানা সহ অন্যান্য শাস্তির বিধান থাকলে ও স্থানীয় যুবলীগ কর্মীদের সহযোগীতায় শনিবার (১৮ এপ্রিল) ভোর থেকে শতাধিক মাছ ধরার ট্রলার নিয়ে কমলনগর উপজেলার লুধুয়া মাছ ঘাট এলাকায় নির্বিচারে মাছ শিকার চলছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, চরফলকন ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক মো: শিবলী ও মোসলেহ উদ্দিন দলীয় প্রভাব খাটিয়ে প্রত্যেক ট্রলার থেকে মৎস্য কর্মকর্তা,পুলিশ এবং স্থানীয় কোস্টগাডের নামে ৫ হাজার টাকা করে আদায় করছে।
অভিযোগ উঠেছে খুলনা ও বাগেরহাট থেকে ট্রলার ও জেলে ভাড়া করে কমলনগর উপজেলার মেঘনা নদীতে নির্বিচারে ইলিশ শিকার করছে জেলেরা। রহস্যজনক কারনে লুধুয়া মাছ ঘাটে কোন ধরনের অভিযানে নামছে না কোষ্টগার্ড ও উপজেলা প্রশাসন।
সম্প্রতি লক্ষ্মীপুর জেলা মৎস্য অফিস নদীতে অভিযান চালিয়ে চরফলকন ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক মো: শিবলীর ৫ টি ট্রলার আটক করে রাখলে সেই মৎস্য কর্মকর্তাদের বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধামকি দেয়।
পরে রামগতি ও কমলনগর আসনের এমপি মো: আবদুল্লাহ নির্দেশে জেলা প্রশাসককে আটককৃত ট্রলার গুলো ছেড়ে দেওয়া নির্দেশ দেয়। পরে যুবলীগ নেতা আরও বেপরোয়া ভাবে প্রশাসন কে বৃদ্ধাআঙ্গুল দেখিয়ে জেলেদের নিয়ে মাছ ধরার জন্য নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাদের অত্যাচারে কমলনগর উপজেলা প্রশাসন অসহায় হয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা জানান কোষ্টগার্ড প্রত্যক্ষ মদদে তাদের চোখের সামনে জেলেরা মাছ ধরছে নদীতে।
অভিযোগের ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে সাহেবের হাট কোষ্টগার্ড কন্টিজেন্ট কমান্ডার মো: আলম জানান, আমরা কোন অনিয়মের সাথে জড়িত নই।
কমলনগর উপজেলা মৎস্য অফিসার মো: ইব্রাহিম হানিফ শাহিন বলেন, আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি আমাদের কোন কর্মকর্তা, কিংবা আমি এসব অপকর্ম সাথে জড়িত নই। লোকবলের অভাবে ঠিক মতো নদীতে অভিযান করা সম্ভব হচ্ছেনা তবুও আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি অভিযান করে জাটকা রক্ষা করতে।
অভিযোগের ব্যাপারে চরফলকন ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক মো: মোসলেহ উদ্দিন জানান, আমরা ইলিশ মাছের আতৎদার । এই কারণে আমাদের বিভিন্ন ধরনের অপ্রপচার চালানো হচ্ছে। আমরা কোন অনিয়মের সাথে জড়িত নই।
কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও টান্সফোর্স কমিটির সভাপতি আব্দুল আওয়াল জানান, নির্বিচারে ইলিশ শিকারের বিষয়টি অভিযোগ পেয়েছি। এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো: আলেকউজ্জামান বলেন, আমাদের কোন কর্মকর্তা অনিয়মের সাথে জড়িত থাকলে ছাড় দেওয়া হবেনা। তবে স্থানীয় রাজনৈতিক কিছু কর্মী ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে নদীতে মাছ ধরতে জেলেদের উৎসাহ দিচ্ছে বলে অভিযোগ আমরা পেয়েছি। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জাটকা রক্ষা করতে সকলের সহযোগীতা একান্ত প্রয়োজন।
0Share