নিজস্ব প্রতিনিধি: লক্ষীপুরের রামগঞ্জ থানা পুলিশের কৌশল ও দূরদর্শিতায় অবশেষে উৎঘাটিত হলো বহুল আলোচিত রামগঞ্জ জনতা ব্যাংক ডাকাতী। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে এবং রামগঞ্জ থানা পুলিশের ইনচার্জ মোহাম্মদ তোতা মিয়া আন্তরিকতায় ডাকাতীর ঘটনায় জড়িত সিন্ডিকেটকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে বলে সূত্রে জানা যায়। প্রায় দেড় মাস পর অবশেষে ডাকাতীর সাথে জড়িত আন্তজেলা ডাকাতদলের প্রধানকে আটক করতে ইতোমধ্যে চিরুনী অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও দাবী করেন তিনি। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের কাছে জনতা ব্যাংক রামগঞ্জ শাখায় ডাকাতীর ঘটনা সংক্ষেপে তুলে ধরেন।
দীর্ঘ দিনের সর্ম্পক, প্রতিদিন সন্ধায় পান চা সিগারেট খেয়ে আন্তরিকতা বাড়তেই থাকে। ব্যাংকের দারোয়ান বৃদ্ধ ও অসুস্থ্য মানুষ। তাই সুযোগটা কাজে লাগাতে তেমন একটা বেগ পেতে হয়নি। ঘটনার দুইদিন আগে ৫ এপ্রিল ২০১৭ইং রাতে শলাপরামর্শ হয় নিজেদের মধ্যে কিভাবে ডাকাতী সংঘঠিত করা যায়। তার দুইদিন পর ৭ এপ্রিল পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি। ডাকাতদলের সহযোগী স্থানীয় কাজীরখীল গ্রামের খোরশেদ আলম ছিলো পাহারায়। আর উপজেলার ভাদুর ইউনিয়নের সিরুন্দী গ্রামের পাল বাড়ীর ছেরাজুল হকের ছেলে সিএনজি চালক মোঃ ফয়েজ আহম্মেদ ডাকাতদের নিয়ে গভীর রাতে হাজির হয় জনতা ব্যাংক রামগঞ্জ শাখা সড়কে। ডাকাতদলের সদস্যদের নামিয়ে সে চলে যায় নিরাপদ স্থানে। কিছুক্ষন পরেই জনতা ব্যাংক রামগঞ্জ শাখার দারোয়ানের সাথে পূর্বে সখ্য করা ডাকাত সদস্য (অজ্ঞাত) জনতা ব্যাংকের ভিতরে ঢুকে একসাথে রাতের খাবার খেতে বসে। এসময় কৌশলে খাবারের সাথে নেশাজাতীয়দ্রব্য মিশিয়ে দেয় দারায়ানের খাবারের সাথে। খাবার খেয়ে দারোয়ান অচেতন হয়ে যায়। অপরদিকে নিচে পাহারারত ও মোবাইল হাতে নিয়ে অপেক্ষায় থাকে ডাকাত সদস্য খোরশেদ। ব্যাংকের ভিতরে থাকা ডাকাত সদস্যের সবুজ সংকেত পাওয়ার সাথে ডাকাতদলের অন্য সদস্যরাও ব্যাংক শাখায় উঠে পড়ে। আগে থেকে ভিতরে থাকা ডাকাত সদস্য ব্যাংক শাখার মূল কলাপসিবল গেইট খুলে দিলে ভিতরে ঢুকে পড়ে ডাকাতদল। তারপর ব্যাংক শাখার ভল্ট কৌশলে খুলে লুটে নেয় ব্যাংকে রক্ষিত ২০লক্ষ টাকা।
উপরেল্লেখিত কথাগুলো রবিবার ব্যাংক ডাকাতদলের অন্যতম সদস্য ফয়েজ আহম্মেদ লক্ষ্মীপুর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্ধিতে স্বীকার করেন। এর পূর্বে পৌর কাজীরখীল গ্রাম থেকে খোরশেদ আলমকে কৌশলে গ্রেফতার করে রামগঞ্জ থানা পুলিশ। পরদিন ৭ এপ্রিল অচেনত অবস্থায় ব্যাংক শাখার দারোয়ানকে রামগঞ্জ থানা পুলিশ ও ব্যাংক শাখার কর্মকর্তারা উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন হসপিটালে। এ ঘটনায় ব্যাংক শাখার ম্যানেজার আরমান হোসেন পাটওয়ারী রামগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
সূত্র ধরে, শনিবার রাতে উপজেলার ভাদুর ইউনিয়নের সিরুন্দী গ্রামের পাল বাড়ীর ছেরাজুল হকের ছেলে সিএনজি চালক মোঃ ফয়েজ আহম্মেদ ঢাকা থেকে স্থানীয় আলীপুর বাস ষ্টেশনে নামলে আগে থেকে অপেক্ষারত পুলিশের হাতে ধরা পড়েন তিনি। এসময় তার কাছ থেকে ব্যাংকে ডাকাতীর ১০হাজার টাকাও উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবী করে পুলিশ। আজ রবিবার আটককৃত ফয়েজ আহম্মেদ লক্ষ্মীপুর আদালতে প্রেরন করলে তিনি তার স্বীকারোক্তি প্রদান করেন।
রামগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ তোতা মিয়া জানান, আমরা বসে নেই। ঘটনার পরদিন থেকেই দেশের বিভিন্নস্থানে অভিযান অব্যাহত রয়েছে ডাকাতদলের সদস্যদের গ্রেফতারে। ডাকাতদলের প্রধানকে গ্রেফতারের প্রক্রিয়াও অব্যাহত রয়েছে। ইনশাল্লাহ অতি শীগ্রই আমরা সফল হবো।
0Share